সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
রাডার ক্রয় সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ তিনজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. কামরুল হোসেন মোল্লাহ বুধবার বিকেলে এ রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ নথি ও সাক্ষী হাজিরে ব্যর্থ হয়েছে বলে রায় ঘোষণাকালে জানিয়েছেন আদালত।
বিকাল ৩.৪৪ মিনিটে এরশাদ আদালতের ভেতরে প্রবেশ করেন। এসময় এরশাদের সঙ্গে জিএম কাদের, রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ, মশিউর রহমান রাঙ্গা ও সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা আদালতে হাজির হন।
মামলায় খালাস পাওয়া আসামি মমতাজ উদ্দিন রায় ঘোষণার পর গণমাধ্যমকে বলেন, ‘স¤পূর্ণভাবে রাজনৈতিক একটি মামলাতে এতদিন অভিযুক্ত ছিলাম। রায়ে খালাস পাওয়ার পর মনে হচ্ছে, এত বছর পর মাথা থেকে একটি ভারি বোঝা নেমে গেছে।’
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় এরশাদের আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এই মামলাটি ছিল রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এরশাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, চার্জশিট দাখিল থেকে শুরু করে সবকিছুই মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আমরা আদালতে এসে ন্যয়বিচার পেয়েছি। তাই আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।’
মামলার রায় ঘোষণার কান্নায় ভেঙে পড়েন খালাস পাওয়া সুলতান মাহমুদ। তার আইনজীবী শামসুদ্দীন বাবুল বলেন, ‘এই মামলার কারণে সুলতান মাহমুদ পেনশনসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এই মামলাটির কারণে তিনি অনেক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কেবল রাজনৈতিকভাবে তাকে ঘায়েল করার জন্যই মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত এই মিথ্যা অপবাদ থেকে মুক্তি পেয়েছেন তিনি।’
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মীর আহমেদ আব্দুস সালামের কাছে জানতে চাওয়া হয়, এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন কিনা। এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন এই মামলাটি চালিয়েছে। কমিশন যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই করা হবে।’ এর আগে, ১২ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বুধবার রায়ের জন্য দিন ধার্য করা হয়। মামলার রায়কে উপলক্ষ করে দুপুর ১টার পর থেকেই জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত হতে থাকেন।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, ১৯৯২ সালের ৪ মে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো মামলাটি দায়ের করে। ১৯৯৪ সালের ২৭ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ১৯৯৫ সালের ১২ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এই মামলায় ৩৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষী নিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, তৎকালীন সেনাবাহিনী প্রধান ও এরশাদসহ অন্য আসামিরা পর¯পরের যোগসাজশে আর্থিক সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে থমসন সিএসএফ কো¤পানির রাডার না কিনে বেশি দামে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্টিং কো¤পানির রাডার কেনে। এতে সরকারের ৬৪ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৯১৮ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়।