1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৮:০৬ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

খরচার হাওর ও আঙ্গারুলি হাওর রক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে : ডুবেছে সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমির ফসল

  • আপডেট সময় সোমবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৭

হাসান বশির ::
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার খরচার হাওর ও শনির হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ফলে প্রায় ৩৭ কোটি ৯৭লাখ ৫০হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। চোখের সামনেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়েছে হাজার হাজার কৃষকের।
জানা যায়, শনিবার দিবাগত রাত উপজেলার বাদাঘাট দক্ষিণ ইউপির গন্ডামারা বাঁধ ভেঙে আঙ্গারুলি হাওরের ৬শ হেক্টর জমির বোরো ফসল তলিয়ে গেছে।
অপরদিকে, শনিবার রাত থেকে ফতেপুর ইউপি’র ‘কাটাখালি-ঘাগটিয়া রাবার ড্যাম’র পার্শ¦বর্তী খরচার হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ এবং জিরাগ তাহিরপুর খাড়া নামক খরচার হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের উপর দিয়ে পানি উপচে পড়ে। পানির নিচে তলিয়ে যায় হেক্টরের পর হেক্টর জমির ফসল।
এক পর্যায় রোববার দুপুরের দিকে জিরাগ তাহিরপুর বাঁধটির উপর দিয়ে প্রবল বেগে পানি উপচে পড়ায় বাঁধটি সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়ে খরচার হাওরে পানি ঢুকে যায়। ফলে ওই হাওরের প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমির ফসল পানির নিচে তলিয়ে যায়। এছাড়া ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পানি বিভিন্ন হাওর-বাঁওরে ঢুকে যায়। ফলে সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত খরচার হাওরের জিরাগ তাহিরপুর খাড়া নামক বাঁধটি রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন চেষ্টা চালাচ্ছে।
বাঁধ রক্ষায় ইউএনও তানিয়া সুলতানা, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ, ভাইস চেয়ারম্যান সুলেমান তালুকদার, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়শা আক্তার, পলাশ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ূম মাস্টার, ফতেপুর ইউপি চেয়ারম্যান রনজিত চৌধুরী রাজন, হাওর বাঁচাও কৃষক বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক হাসান বশির, কফিল উদ্দিন, অলিমান তালুকদার, জিয়াউল হক তুহিন, মোশারফ হোসেন ইমন, হুমায়ূন কবির পাপন, কামরুজ্জামান কামরুলসহ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ বাঁধ এলাকায় রয়েছেন।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তদারক কর্মকর্তা, ফতেপুর ইউপি সদস্য পিআইসি সভাপতি নেছার আহমদসহ সংশ্লিষ্টদের বাঁধে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, ক্রমাগত বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভেঙে উপজেলায় মোট ৩হাজর ৫শ হেক্টর জমির বোরো ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে আর্থিক হিসেবে ক্ষতির পরিমাণ ৩৭ কোটি ৯৭লাখ ৫০হাজার টাকা।
রোববার সরেজমিন হাওর পাড়ের বিভিন্ন লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, থোড় আসা, কাঁচা, আধাপাকা, ধান এখন কাটারও কোন উপায় নেই। তাই বর্গাচাষী ও গৃহস্থ সবাই এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ঘাড়ে চেপেছে ব্যাংক ও এনজিও ঋণ।
বিশ্বম্ভরপুরের ফুলভরী গ্রামের কৃষক মহিবুর রহমান জানান, আমারা যারা গৃহস্থ, জমি বিক্রি করে চলতে পারবো। কিন্তু বর্গাচাষীদের বিড়ম্বনা বাড়বে। একদিকে ঋণের বোঝা। অন্যদিকে বাঁচার উপায় খোঁজা।
মুক্তিখলা গ্রামের কৃষক আতিকুর রহমান বলেন, দুর্নীতির চরম সীমায় পিআইসি, ঠিকাদার, পাউবো।
মল্লিকপুর গ্রামের মিজানুর রহমান বলেন, বাঁচার কোন উপায় আর নেই।
গৌরারং ইউপি’র বেড়াজালি গ্রামের কামাল হোসেন বলেন, প্রত্যেক বছর এমন হয়। আমরা এর স্থায়ী সমাধান চাই।
ইউএনও তানিয়া সুলতানা বলেন, আমরা বাঁধ রক্ষায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার হাওর-বাঁওরসমূহে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ১১হাজার ৯০হেক্টর। হাওর এলাকায় ৭হাজার ৭শ ৫০হেক্টর। হাওর বহির্ভূত আবাদ ৩হাজার ৩৪০ হেক্টর। শুধু খরচার হাওরে প্রায় ৩ হাজার ৭শ হেক্টর।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com