সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
সাম্প্রতিক সময়ে নতুন করে জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে দেশের সব আদালত, এজলাস, বিচারকদের বাসভবন এবং আদালত সংশ্লিষ্ট সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন জানান, পুলিশ মোতায়েনসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দিয়ে গত ২৩ মার্চ চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি।
পুলিশ বিভাগসহ মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, আইন ও বিচার বিভাগের সচিবকে ওই চিঠির অনুলিপি পাঠানো হয়েছে।
সৈয়দ দিলজার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, “সম্প্রতি সন্ত্রাসী কর্মকা-ের কারণে সারাদেশের আদালত প্রাঙ্গণ, বিচারকদের বাসভবন ও বিচারসংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তা জোরদার করতে বলা হয়েছে চিঠিতে।”
চিঠিতে বলা হয়েছে, “সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে দেশের প্রত্যেক আদালত অঙ্গন, এজলাস, বিচারকদের বাসভবন, বিচারক ও কর্মচারীসহ আদালত সংশ্লিষ্ট সকলের সার্বিক নিরাপত্তা বিষয়ে প্রধান বিচারপতি উদ্বিগ্ন।
“প্রধান বিচারপতির পক্ষ থেকে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে এ উদ্বেগের বিষয়টি অবগত করা হয়েছে এবং সরকারের পক্ষ থেকে এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করা হয়েছে।”
এই প্রেক্ষাপটে জরুরি ভিত্তিতে দেশের প্রত্যেক আদালত, এজলাস, বিচারকদের বাসভবন, বিচারক ও কর্মচারীসহ আদালতসংশ্লিষ্ট সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ মোতায়েনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে চিঠিতে।
এর আগে গুলশান হামলার পর গতবছর জুলাই মাসেও একই ধরনের চিঠি দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
গতবছর গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলার পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক অভিযানের মধ্যে বেশ কিছুদিন পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও এ বছর মার্চের শুরু থেকে জঙ্গিরা নতুন করে তাদের তৎপরতার জানান দিতে শুরু করে। এর মধ্যে সাম্প্রতিক একাধিক ঘটনায় পুলিশ ও র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে।
সর্বশেষ ঘটনায় সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়িতে একটি জঙ্গি আস্তানা প্রায় ৩০ ঘণ্টা ঘিরে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো দলের অভিযানের মধ্যে কাছাকাছি পাঠানপাড়া এলাকায় শনিবার সন্ধ্যায় দুই দফা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ছয়জন নিহত হন, আহত হন র্যাব-পুলিশের তিন কর্মকর্তাসহ অন্তত ৪৩ জন।
এর আগে ২৪ মার্চ ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর গোলচত্বর সংলগ্ন পুলিশ বক্সের সামনে বিস্ফোরণে নিহত হন এক তরুণ। তার সঙ্গে থাকা ট্রলি ব্যাগেও কয়েকটি শক্তিশালী বিস্ফোরক পাওয়া যায়।
এক সপ্তাহ আগে জুমার নামাজের সময় কাছাকাছি এলাকা আশকোনায় র্যাবের ব্যারাকে ঢুকে পড়ার পর শরীরে বাঁধা বোমার বিস্ফোরণে নিহত হয় সন্দেহভাজন এক জঙ্গি। এর পরদিনই ভোরে শরীরের বিস্ফোরক বেঁধে এক মোটরসাইকেল আরোহী খিলগাঁওয়ের একটি চেক পোস্টে ঢুকে পড়ার পর র্যাব সদস্যদের গুলিতে নিহত হন। আর এ মাসের শুরুতে কুমিল্লায় একটি বাসে তল্লাশির সময় পুলিশের দিকে বোমা ছোড়ার পর ধরা পড়ে ‘নব্য জেএমবি’র দুই জঙ্গি।
এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে এর মধ্যে সারা দেশে পুলিশ সদস্যদের সতর্ক করেছে পুলিশ মহা পরিদর্শকের দপ্তর।