স্টাফ রিপোর্টার ::
কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের স্মরণে সুনামগঞ্জে প্রথম বারের মতো পালিত হয়েছে পুলিশ মেমোরিয়াল ডে। এ উপলক্ষ্যে বুধবার সকাল ১০টায় জেলা পুলিশ সুপার মো. হারুন-অর-রশীদের নেতৃত্বে জেলা পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা, বিভিন্ন থানার অফিসার ইনচার্জ, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর, আরআই, এসআই, সার্জেন্ট, এএসআইসহ পুলিশ লাইন্সের বিভিন্ন পদবীর অফিসার ও ফোর্সের সমন্বয়ে সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে স্থাপিত ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ ও যুদ্ধোত্তর অদ্যাবধি সরকারি দায়িত্ব পালনকালে যে সকল পুলিশ সদস্য শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
সকাল ১১টায় পুলিশ লাইন্সের ড্রিলশেডে পুলিশ সুপার মো. হারুন-অর-রশীদ-এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় পুলিশ কর্মকর্তা ও ফোর্সসহ সিভিল স্টাফ এবং সুনামগঞ্জ জেলার ৩ জন শহীদ বীর পুলিশ সদস্যের পরিবারের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সুনামগঞ্জ জেলার ৩ জন শহীদ বীর পুলিশ সদস্য হলেন কং/শরীফ উদ্দিন, নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শক মো. একেএম মঞ্জুর কাদের খান এবং কং/১৩০০ কামরুল ইসলাম।
শহীদ বীর পুলিশ সদস্য শরীফ উদ্দিন দিরাই থানার রাধানগর গ্রামের মৃত মো. ফরিদ উদ্দিনের সন্তান। ১৯৭১ সালে পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে তিনি চট্টগ্রাম শহরস্থ দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে শাহাদাত বরণ করেন।
শহীদ বীর পুলিশ সদস্য নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শক মো. একেএম মঞ্জুর কাদের খান শহরের হাছননগর এলাকার মৃত আব্দুর রহমানের পুত্র। তিনি ২০১৩ সালের ৩১ জানুয়ারি নোয়াখালী জেলার চরজব্বর থানায় কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
অপর শহীদ বীর পুলিশ সদস্য কামরুল ইসলাম শহরের মাইজবাড়ির এলাকার জাহেরা বেগমের সন্তান। তিনি ২০০৬ সালের ৬ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ থানা এলাকায় কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা দেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধসহ যুদ্ধোত্তর দেশের বিভিন্ন ক্রান্তিলগ্নে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায়, চলমান জঙ্গিবিরোধী অভিযান পরিচালনাসহ বিভিন্ন সময় পুলিশ সদস্যদের জীবনদানের বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা করেন। এছাড়া সুনামগঞ্জের ৩ জন বীর শহীদ পুলিশ সদস্যসহ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ ও যুদ্ধোত্তর অদ্যাবধি সরকারি দায়িত্ব পালনকালে যে সকল পুলিশ সদস্য শহীদ হয়েছেন তাদের স্মৃতিচারণ করে গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করা হয়। তাদের জীবন উৎসর্গকে জীবনের পাথেয় হিসেবে বিবেচনা করে সকল পুলিশ সদস্যকে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ মানুষের সুখ, শান্তি ও কল্যাণের জন্য নিবেদিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়।
আলোচনা সভা শেষে শহীদ শরীফ উদ্দিনের ছোট ভাই আরিফ উদ্দিন, শহীদ কামরুল ইসলামের মাতা জাহেরা বেগম এবং শহীদ মো. একেএম মঞ্জুর কাদের খান-এর স্ত্রী মোছা. নুরুন্নাহার বেগম-এর হাতে উপহার স্বরূপ শাড়ি, পাঞ্জাবি এবং অন্যান্য সামগ্রী তুলে দেয়া হয়।