স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনের দুটি দোকানের ভাড়া শহীদ মিনার সংস্কারে ব্যবহার হওয়ার কথা থাকলেও কখনো সেই ভাড়ার টাকায় শহীদ মিনার সংস্কারের কাজ হয়নি। তাই প্রশ্ন উঠেছে ভাড়ার এই টাকা যায় কোথায়? সাধারণ মুক্তিযোদ্ধা-জনতা এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
মুুক্তিযোদ্ধারা জানান, শহীদ মিনার নির্মাণের সময় সামনে দুই কোণে দুটি গার্ড রুম তৈরি করা হয়। পরবর্তীতে গার্ড রুম দুটিকে দোকানে পরিণত করে ভাড়া নিচ্ছে সুনামগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। এই টাকায় শহীদ মিনার সংস্কার করার কথা থাকলেও কখনোই সংস্কার হয়নি বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, গত চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে তৎকালীন জেলা প্রশাসক জাফর সিদ্দিকীর বরাবরে শহীদ মিনারের জনৈক দোকানগ্রহীতা মুক্তিযোদ্ধা এর ভাড়া কে নেয় এবং মালিকানা কার এ বিষয়ে একটি লিখিত আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক তৎকালীন পৌর চেয়ারম্যান মমিনুল মউজদীন ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কেবি রশিদকে তার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে এ বিষয়ে জানতে চান। মমিনুল মউজদীন ওই সময় জেলা প্রশাসককে জানান এই দোকানের মালিকানা পৌরসভার নয়, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের এবং এর ভাড়া থেকে শহীদ মিনার সংস্কার করার স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে বলে জেলা প্রশাসককে জানান। জেলা প্রশাসক কেবি রশিদকে জিজ্ঞেস করলে তিনি কোন ভূমিকা ছাড়াই জানান, এখন থেকে নিয়মিত ভাড়া থেকে শহীদ মিনার সংস্কার করা হবে। জানা গেছে এক বছর সংস্কার হলেও এখন পর্যন্ত আর কোনদিন শহীদ মিনার সংস্কার করেনি মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। এই ভাড়া কোনখাতে কিভাবে ব্যয় হয় তা জানেননা খোদ মুুক্তিযোদ্ধারাও।
কবি ও লেখক ডা. মোরশেদ আলম বলেন, আমরা যতদূর জানি দোকানে পরিণত করা শহীদ মিনারের দুই গার্ড রুমের ভাড়া নিয়ে থাকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। কিন্তু তারা এই ভাড়া কখনো শহীদ মিনার সংস্কারে ব্যবহার হয় না। এই টাকা কোথায় কোনখাতে ব্যবহার হয় আমরা জানতে চাই। মুক্তিযোদ্ধাদের সামনে মুক্তিযোদ্ধাদের তৈরি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার অবহেলায় পড়ে থাকলেও তারা নীরব। তাদের নীরবতা আমাদের দুঃখ দেয়।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আবু সুফিয়ান বলেন, দুই গার্ড রুমের ভাড়ার টাকায় শহীদ মিনার সংস্কার হওয়ার কথা। ভাড়া কিভাবে, কোন খাতে ব্যয় হয় আমরা জানিনা।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার হাজী নূরুল মোমেন দুই দোকানের ভাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নিয়ে থাকে এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদ শহীদ মিনার সংস্কার করার কথা স্বীকার করেন।