সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে সুরমা নদীর ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, ঘর-বাড়ি, জমি, রাস্তা-ঘাট, গাছ-পালা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এই নদী ভাঙনের কবলে পড়ে বসতভিটা হারিয়েছেন অনেকে। নদী ভাঙনের ফলে ইতিমধ্যে কোনো কোনো এলাকার মানচিত্রও পাল্টে গেছে। এই নদী ভাঙন রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দোয়ারাবাজার উপজেলাকে ভয়াবহ নদী ভাঙন কবলিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে প্রকল্প পাঠিয়ে দিয়েছেন। এছাড়াও অন্যান্য ভাঙন এলাকার প্রকল্পও তৈরি করে পাঠানো হয়েছে। সেই বরাদ্দ কবে আসতে পারে তা অনিশ্চিত।
বিশেষ করে পৌর শহরের লঞ্চঘাট এলাকা গত ২ বছর আগে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে জনচলাচলের পাকা রাস্তা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। সেই সাথে প্রায় ১০টি দোকানঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। মূল রাস্তা নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন লঞ্চযাত্রীসহ পথচারীরা। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা লঞ্চঘাটের ভাঙন প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ একাধিকবার পরিদর্শন করে নকশা তৈরি করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এর কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
শহরতলির গ্রাম পূর্ব ইব্রাহিমপুর দীর্ঘদিন ধরে ভয়াবহ নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে। রাস্তা, শতাধিক ঘর-বাড়ি ও গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এমন ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে জগন্নাথপুরেও। মইনপুর গ্রামের ভাঙন দীর্ঘদিনের। ব্রাহ্মণগাঁও, নতুন ব্রাহ্মণগাঁও, আমবাড়ি বাজার, আদার বাজার, হরিনাপাটি এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। এই ভাঙন প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
উপজেলা দোয়ারাবাজারেও ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এই ভাঙনে এলাকার মানচিত্র পাল্টে গেছে। ছাতক উপজেলাও পড়েছে নদী ভাঙনের কবলে। নদী ভাঙনের কবলে আছে ধর্মপাশা উপজেলা। জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনাবাজারের আশপাশ এলাকাসহ একাধিক স্থানে রয়েছে নদী ভাঙনের ভয়াবহতা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ ভয়াবহ নদী ভাঙন এলাকা চিহ্নিত করে একাধিকবার প্রকল্প পাঠিয়েছেন। কিন্তু নদী ভাঙন প্রতিরোধের প্রকল্পের এখনও অনুমোদন হয়নি। নদী ভাঙনের ফলে সকল ভাঙন এলাকার মানচিত্র পাল্টে যাবার আগেই ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা জরুরি প্রয়োজন বলে সচেতন মহল মনে করেন। যদি নদী ভাঙন জরুরি ভিত্তিতে প্রতিরোধ করা না হয়, তাহলে হাজারো মানুষ ভিটেহারা হয়ে পড়বে এবং অসহায় মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। প্রতিটি এলাকায় দারিদ্রতা বৃদ্ধি পাবে। তাই জরুরিভিত্তিতে নদী ভাঙন রোধ একান্ত প্রয়োজন।