স্টাফ রিপোর্টার ::
দিরাইয়ে জলমহাল দখল নিয়ে সংঘাতে তিন জন নিহতের ঘটনার পর আবারও মৎস্য আহরণ নিয়ে জেলার কয়েকটি জলমহালে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এসব জলমহাল দখল নিতে গিয়ে যে কোন সময় সংঘর্ষে হতাহতের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
গতকাল রোববার জেলা প্রশাসক বরাবর দক্ষিণ সুনামগঞ্জের আস্তমা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল মতিন লিখিত একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে বলা হয়, উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের চাতল টেডালা হুগলিয়া জলমহালে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে সরকারি জলমহালে মৎস্য আহরণ করা হচ্ছে। উজানীগাঁও গ্রামের মৃত ফরিদ আহমদের পুত্র ছালেহ আহমদ লিটন ও মৃত হাতিম উল্লাহ’র পুত্র রফিক আহমদ হিলিপের এলসিএস সমিতির সভাপতি দাবি করে বিগত ২৭ জানুয়ারি চাতল টেডালা হুগলিয়া বিলে বাঁধ ভেঙে পানি ছেড়ে মৎস্য আহরণের কার্যক্রম শুরু করে। অথচ জলমহালটি কারও পক্ষে ইজারা কিংবা খাস কালেকশন দেয়া হয়নি। এই জলমহালের দখল নিয়ে যে কোন সময় রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে পাগলাবাজার ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আক্কাছ আলী বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সরকারি জলমহালে কোন পক্ষই অবাধে মৎস্য আহরণ করতে দেয়া হবে না।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর কবির বলেন, বিষয়টি এই মাত্র শুনেছি। সরকারি জলমহালে জোরপূর্বক মৎস্য আহরণ করতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জের নাইন্দা বিলেও বেশ কিছু দিন ধরে উত্তেজনা চলছে। মামলা, পাল্টা মামলার হওয়ায় স্থানীয় দুটি মৎসবজীবী সম্প্রদায় মুখোমুখি অবস্থানে আছেন।
জামালগঞ্জের ফেনারবাঁক ইউনিয়নের ফেনারবাঁক গ্রাম পার্শ্ববর্তী নলচুর্ণী গ্রুপ ফিশারিজে মৎস্য আহরণ নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই বিরোধ চলছে। স্থানীয় দুটি গ্রুপ মৎস্য আহরণের চেষ্টা করছে। এটি সরকারিভাবে এখনো ইজারা দেয়া হয়নি বলে জানাগেছে।
দিরাই উপজেলার ধলের শয়তানখালি এলাকার কালনী নদীতে মৎস্য আহরণ নিয়ে স্থানীয় আ.লীগের দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা চলছে। দখল নিতে দু’পক্ষই মরিয়া হয়ে উঠেছেন। সংঘর্ষে এড়াতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।
দিরাই থানা ওসি আব্দুল জলিল অবশ্য দাবি করেছেন, শয়তানখালি এলাকায় জলমহাল নিয়ে উত্তেজনা নেই।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জানুয়ারি দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের হাতিয়া গ্রামের পাশের জারলিয়া জলমহালে এই সংঘর্ষে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।