আজ ২০১৬-এর শেষদিন। গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যমুক্ত আর মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন রাষ্ট্র ও সমাজ নির্মাণের যে প্রতিশ্রুতি আমাদের ছিল তা ২০১৬ তে আমরা রক্ষা করতে পারিনি। পুঁজিবাদী সমাজের লুণ্ঠন আর নিষ্ঠুরতার বিপরীতে সাম্য ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ তৈরির লড়াইয়ে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। মুক্তিযুদ্ধের চার মৌলনীতি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠায় আমরা বার বার পরাজিত। গেল নির্বাচনগুলো নিয়ে মনোনয়ন বাণিজ্য, কালোটাকার খেলা, রাজনৈতিকদলগুলোর অভ্যন্তরীণ কোন্দল ইত্যাদি বিষয় ছিল মূল আলোচনায়। তাছাড়া জঙ্গিবাদের উত্থান এবং তা প্রতিরোধে সরকারের সোচ্চার ভূমিকা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল।
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ হয়নি, রাজনীতি যেন দাবার কূটচাল, কেবল কথার প্রতিশ্রুতি। নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন কোনোটাই শক্ত ভিতের ওপর এখনো দাঁড়াতে পারেনি। বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি স্বাধীনতা পক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগে আত্মীকরণ হচ্ছে। যা দেশের জন্য শুভ নয়। এভাবে চলতে থাকলে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে কি না তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হচ্ছে।
দেশে প্রবৃদ্ধি বাড়ছে, সমান্তরালে চাপাতির কোপও বাড়ছে। আমরা দেখে আসছি প্রতিক্রিয়াশীলদের চাপাতির কোপের রেঞ্জের বাইরে আমরা কেউই নই।
বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও সমাজে ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র এখন পরিত্যক্ত। তাই ২০১৬ সালে যা ঘটেছে তা আমরা ২০১৭ সালে দেখতে চাই না। আমরা সভ্য, সুন্দর দেশ গঠনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। ২০১৭ সাল আসুক সবার জন্য সুসংবাদ নিয়ে।