বর্তমান সময়ে মরণনেশা ইয়াবার ভয়ংকর বিস্তার ঘটছে বিভিন্ন এলাকায়। এই সর্বনাশা মাদকের থাবায় তরুণ-তরুণী শুধু নয়, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীদের একটি বড় অংশ আসক্ত হচ্ছে। সহজলভ্যতার কারণেই ইয়াবা আসক্তির সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে।
গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি সংবাদ শিরোনাম ছিলÑ ‘১০ লক্ষাধিক টাকার ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক’। সংবাদ পাঠে জানা যায়, সিলেট নগরীর রায়নগর এলাকায় র্যাবের অভিযানে মাদক ব্যবসায়ী সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার চিনাউড়া গ্রামের কন্যা (৩৩)-কে প্রায় সাড়ে দশ লাখ টাকা মূল্যমানের ৪২০পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ৮৭ গ্রাম হেরোইন এবং নগদ ২৭ হাজার টাকাসহ আটক করা হয়। এর আগেও মাদক ব্যবসায়ী হোসনে আরা একাধিকবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছিল। আমরা দেখেছি, বিভিন্ন সময় মাদক কারবারিরা আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হলেও আইনের ফাঁকফোকড় দিয়ে তারা বের হয়ে এসে পুনরায় মাদক ব্যবসায়ী লিপ্ত হয়। নেশাসামগ্রীর এমন কেনাবেচা এবং চোরাচালান কোনোক্রমেই চলতে দেয়া যায় না। নীরব ঘাতক ইয়াবা অবাধে এবং যেখানে সেখানে পাওয়া যায় বলে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষও নেশার শিকারে পরিণত হচ্ছে।
সরকারি মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে মাদকাসক্ত মুক্ত হতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর মধ্যে ৮০ শতাংশ ইয়াবায় আসক্ত। ইয়াবার বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চললেও এর আগ্রাসন থেমে নেই। শহর থেকে গ্রামাঞ্চল সর্বত্র যেভাবে ইয়াবার জাল ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে আতঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। দেশের বিরাট সংখ্যক তরুণশক্তি নিয়ে আমরা স্বপ্ন দেখছি, অথচ প্রতিনিয়ত ইয়াবার নেশায় ধ্বংস হচ্ছে তারুণ্য, জাতির ভবিষ্যৎ।
আমরা মনে করি, মাদক পাচার বন্ধ ও মাদক বিক্রয় কেন্দ্রগুলো উৎখাত করার কোনো বিকল্প নেই। পাশাপাশি মাদকাসক্ত কমানোর জন্য সামাজিক আন্দোলনকেও জোরদার করা দরকার। মাদকের সমস্যাটি রাতারাতি বন্ধ করা যাবে না এটা ঠিক। তবে প্রয়াস আন্তরিক হলে সমস্যাটি ভবিষ্যতে অনেকটা নিয়ন্ত্রিত হবে।