স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের উদ্যোগে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এম.এ মান্নান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় স¤পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. মোহাম্মদ সাদিক, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য রনজিত চন্দ্র সরকার, সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আবু নাঈম শেখ, স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক দেওয়ান তাজুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফ উল্যাহ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল হুদা মুকুট।
সাংবাদিক দেওয়ান গিয়াস চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনির উদ্দিন, এসএসসি শিক্ষার্থী মিজান আল ইয়াসির ও পূর্ণা তালুকদার, এইচএসসি শিক্ষার্থী অর্ণব দাস ও ঈশিতা দাস।
অনুষ্ঠানে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ২০১ জন কৃতী শিক্ষার্থীকে ৪ হাজার টাকা করে বৃত্তি ও বই এবং এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ২১৯ জন কৃতী শিক্ষার্থীকে ৫ হাজার টাকা করে বৃত্তি ও বই প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হাফিজ আতাউর রহমান লস্কর ও গীতা থেকে পাঠ করেন অমিয় মিত্র।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এম.এ মান্নান বলেন, জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে কাজ করে আমি সামান্য অবদান রাখতে পেরেছি। এটা আমার জীবনের বড় অর্জন। এমএ মান্নান বলেন, আমি দেখতে পাচ্ছি, আগামী দশ বছরের মধ্যে সুনামগঞ্জ বিশাল টাউনে রূপান্তর হবে। এটার সুফল ভোগ করবে তরুণ প্রজন্ম। সড়কের উন্নয়ন কাজ চলছে সুনামগঞ্জ টু ধর্মপাশা।
তিনি বলেন, সুনামগঞ্জের অবকাঠামোগত উন্নয়ন অনেক করেছি। আরও কিছু উন্নয়ন চলছে। আরও উন্নয়ন হবে। কিন্তু কিছু কিছু মানুষ তাদের মন সংকীর্ণ থাকায় প্রচার করে আসছিল আমি নাকি সব নিয়ে গেছি শান্তিগঞ্জে। এটা স¤পূর্ণ মিথ্যা। কেন যেন একটি গুজব প্রচার করে আসছিল তারা।
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমার শিক্ষা জীবনে কোনো জিপিএ-৫ ছিল না। ছোট-খাটো ২/১টি পরীক্ষায় পাস করে এসেছি দেশের উন্নয়নে কাজ করতে। তোমরা লেখাপড়ায় এগিয়ে প্রসারিত জীবন প্রতিষ্ঠা করবে। কারণ উচ্চশিক্ষায় মানুষের মন প্রসারিত করে। কাজ করবে দেশ ও জনগণের কল্যাণে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় স¤পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, তরুণ প্রজন্ম অভিশপ্ত বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেনি। একটি উন্নয়নশীল বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছে। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা ভুলে যাবে না, তোমাদের লেখাপড়ার খরচে গরীব-দুখির টাকাও রয়েছে। সেজন্য শিক্ষা অর্জন করে দেশের কল্যাণে কাজ করতে হবে আন্তরিকভাবে। তিনি বলেন, মানুষ হওয়া ও বিদ্বান হওয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে। বিদ্বান হলে মনের পরিবর্তন হয়। ভাল ভাল চিন্তার উদ্রেক ঘটে।
তিনি আরও বলেন, একজন শিক্ষার্থীর যুদ্ধ হলো শিক্ষাক্ষেত্রে। শিক্ষায় কীভাবে এগিয়ে যাওয়া যায় এ নিয়ে। মনে রাখতে হবে ভাল ফলাফল করতে তোমরাও শিক্ষাক্ষেত্রের যোদ্ধা।
সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য রনজিত চন্দ্র সরকার বলেন, অবশ্যই তরুণ প্রজন্মকে সঠিক পথে এগিয়ে যেতে হবে। সঠিক শিক্ষায় এগিয়ে গেলে নিজের জীবনমানের উন্নয়ন হবে। আলোকিত মানুষ হিসাবে গড়ে উঠা সম্ভব হবে। তিনি জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করার আহ্বান জানিয়ে নিজের অর্থায়নে করারও আশ্বাস দেন।
সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আবু নাঈম শেখ বলেন, সুনামগঞ্জের শিক্ষার্থীদের জন্য সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। এখন শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে ইচ্ছুক নয়। এই মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। সুনামগঞ্জের প্রতিষ্ঠানে সুনামগঞ্জের শিক্ষার্থীদের ভর্তি হওয়ার আহ্বান জানান।
আলোচনা সভা শেষে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃত্তি প্রদান করেন অতিথিবৃন্দ। এর আগে অতিথিদের সম্মাননা স্মারক দেন জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। সব শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।