ধর্মপাশা প্রতিনিধি ::
ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের সুখাইড় গ্রামে গত রবিবার (১৪এপ্রিল) বিকেল পাঁচটার দিকে সুদের পাওনা এক হাজার টাকা যথাসময়ে পরিশোধ করতে না পারায় পাওনাদার ও তার লোকজনদের মারধরে একই পরিবারের তিনজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মারধরে আহত উপজেলার সুখাইড় গ্রামের বাসিন্দা মালা রাণী (৬০) বাদী হয়ে একই গ্রামের তপু দাস (২২), অপু দাস (২৪) ও মোহনবাঁশী (৪০)কে আসামি করে গত সোমবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ধর্মপাশা থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সুখাইড় গ্রামের বাসিন্দা তপু দাসের কাছ থেকে গত চারমাস আগে একই গ্রামের হৃদয় দাস (২৫) ১০ হাজার টাকা ঋণ নেন। প্রতি মাসে এ বাবদ এক হাজার টাকা সুদ দেওয়ার কথা ছিল। গত তিনমাস ধরে মাসিক সুদের টাকা তপুকে যথাসময়ে পরিশোধ করে আসছিলেন হৃদয়। গত রবিবার (১৪ এপ্রিল) সুদের এক হাজার টাকা পরিশোধ করার কথা ছিল। ওইদিন বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নিজ বাড়ির সামনের ধানের খলায় কাজ করছিলেন হৃদয় দাস, তার মা মালা রানী ও বাবা বিন্দুভূষণ দাস। ওইদিন বিকেল পাঁচটার দিকে তপু দাস তার লোকজন নিয়ে এসে সুদের এক হাজার টাকা পরিশোধ করার জন্য হৃদয় ও তার বাবাকে চাপ দেন। এ সময় ধান বিক্রি করে দুইদিন পর সুদের টাকা পরিশোধ করবেন বলে তপুকে জানান হৃদয়ের বাবা বিন্দু ভূষণ দাস। এ নিয়ে তপুর সঙ্গে বিন্দুভূষণ দাসের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তপু উত্তেজিত হয়ে লাঠি দিয়ে বিন্দুভূষণ দাসের (৭০) মাথায় আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় তপুর লোকজন, হৃদয় দাস ও মালা রানীকেও কিল-ঘুষি মেরে আহত করেন। পরে স্থানীয় লোকজন বিন্দুভূষণ দাসকে উদ্ধার করে সুখাইড় ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসক ওই বৃদ্ধের মাথায় তিনটি সেলাই করেন। আহত অপর দুজন সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। গত সোমবার বিকেল চারটার দিকে মারধরে আহত ওই বৃদ্ধকে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কসপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
মারধরে আহত বিন্দুভূষণ দাস (৭০) বলেন, সুদের এক হাজার টাকা সময়মতো না দিতে পারায় ক্ষিপ্ত হয়ে সুদখোর তপু দাস ও তাঁর লোকজন আমার স্ত্রী, ছেলে ও আমাকে মারধর করে আহত করেছে।
সুখাইড় গ্রামের বাসিন্দা তপু দাসের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তার বড় ভাই অপু দাস (২৪) বলেন, পাওনা টাকা চাইলে হৃদয় দাস ও তার বাবা বিন্দুভূষণ দাস আমার ছোটভাই তপু দাসের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা পুরোপুরি অস্বীকার করেন। এ নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তপুর হাতে থাকা মোবাইলের আঘাত হৃদয়ের বাবার মাথায় লেগে একটু ফেটে গেছে। আমরা কাউকে মারধর করিনি। বিষয়টি গ্রাম্য সালিশে মীমাংসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ধর্মপাশা থানার ওসি মো. শামসুদ্দোহা বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।