1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০১:৪০ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

জলাবদ্ধতায় তলিয়ে যাচ্ছে দেখার হাওরের ধান

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার ::
হাওরভর্তি আধাপাকা ধান, কয়েকদিন অপেক্ষা শুধু পাকার। কিন্তু অতিবৃষ্টি ও পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অসময়েই পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে বোরো ধান। বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে এমন ক্ষতির শিকার হচ্ছেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার দেখার হাওরের সাত গ্রামের কৃষকরা।
কৃষকদের অভিযোগ, দেখার হাওরের পানি নিষ্কাশনের নালাটি শান্তিগঞ্জ উপজেলার মহাসিং নদীর তীরে। কিন্তু বাঁধের নামে সেই স্থানটি মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। ফলে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে তলিয়ে গেছে কয়েকশত একর কাঁচা ধান।
খবর পেয়ে গতকাল সোমবার দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে জলাবদ্ধতা নিরসনের চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী।
জানা যায়, সুনামগঞ্জে চলতি বোরো মওসুমে দুই লাখ ২৩ হাজার ৪০৭ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ লাখ ৭০ হাজার ২৭০ মে. টন। যার বাজার মূল্য চার হাজার ১১০ কেটি টাকা। জেলার ৯৫টি হাওরের অন্যতম বৃহৎ হাওর ‘দেখার হাওর’। এই হাওরে সুনামগঞ্জ সদর, শান্তিগঞ্জ, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষাধিক কৃষককের ২৪ হাজার হেক্টর বোরো জমি রয়েছে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও এই হাওরে বোরো ধান চাষ হয়েছে এবং ধানের ফলনও ভাল হয়েছিল কিন্তু টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে দেখার হাওরের সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের দরিয়াবাজ, কলাউড়া, ইছাগড়ি, হুরমত নগর, রউয়ারপাড়, গুয়ারছড়া, হরিপুরসহ ৭টি গ্রামের কয়েক শত কৃষকের কাঁচা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।
দরিয়াবাজ গ্রামের কৃষক নূর আহমদ বলেন, আর ১০/১৫ দিন পরই এই ধান কৃষকের গোলায় যাওয়ার কথা ছিল। সুনামগঞ্জ টাউনের পানি, বরদই বিলের ও বৃষ্টির পানি জমা অইয়া হাওরে ধান পানির তলে যারগি। আমরা প্রশাসনের সব অফিসাররে জানাইছি। কিন্তু পানি নামানির লাগি কোন ব্যবস্থা নেওয়া অইতাছে না। কৃষকরা পানির তলে কাঁচা ধান কাটতাছে।
কলাউড়া গ্রামের কৃষক রেদুয়ান আলী রায়হান বলেন, হাওরপাড়ের মানুষের একটা মাত্র ফসল বোরো ধান। মহাসিং নদীর তীরে বাঁধ দিয়ে হাওরের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ দেওয়ায় বৃষ্টির পানি জমে ৩/৪’শ একর জমির ধান নিচে গেছে। বেঁচে থাকার তাগিদে গরিব কৃষকরা কাঁচা ধান কাটছে। কেউ গরুর ঘাসের জন্য কাঁচা ধান কেটে তোলছেন।
ইছাগড়ি গ্রামের কৃষক লিলু মিয়া বললেন, অনেক কষ্ট কইরা ১৬ কিয়ার জমি করছিলাম। এক লাখ টেকা খরচ অইছে। ধান পাকবার আগেই পানির তলে যারগি। পানিত কেউ ধান কাটত চায় না। গরুর ঘাসের লাগি ৮০০ টেকা রোজের কামলা দিয়া ধান কাটাইয়া দেখি আরও লস।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, আমরা দেখার হাওর পরিদর্শন করেছি। প্রতি বছরই অতিরিক্ত বৃষ্টিতে এখানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। গত বছর শান্তিগঞ্জের একটা বাঁধের নিচ দিয়ে কিছুটা পানি নিষ্কাশনের মাধ্যমে কৃষকরা ফসল তোলতে পেরেছিল। আমরা চেষ্টা করব পানি নিষ্কাশনের, যাতে কৃষকরা ফসল তোলতে পারে এবং কৃষক তালিকা তৈরি করব, যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তারা যেন সরকারি সহায়তা পায়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বললেন, খবর পেয়ে দেখার হাওরের জলাবদ্ধ এলাকা পরিদর্শন করেছি। গ্রামবাসী ও হাওরপাড়ের স্থানীয় কৃষকদের দাবি পানি হাওরের নিষ্কাশন করা হলে বোরো ফসল রক্ষা পাবে। কৃষকদের প্রস্তাব অনুযায়ী পানি নিষ্কাশনের জায়গাটি পরিদর্শন করব। সমাধানের যোগ্য হলে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব পানি নিষ্কাশনের।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com