1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৪:৩২ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, উৎসব বোনাস প্রদানের দাবি পূর্ণ করুন

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৮ মার্চ, ২০২৪
কোনও সংবাদ অথবা সংবাদপ্রতিবেদন নয়, একটি বিশেষ স্মারকলিপির উদ্ধৃতির কথা বলছি, যা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এবং সুনামগঞ্জ-এর জেলা প্রশাসকের কাছে গত বুধবার (৬ মার্চ ২০২৪) পেশ করেছেন ‘সুনামগঞ্জ জেলা হোটেল রেস্টুরেন্ট মিষ্টি বেকারি শ্রমিক ইউনিয়ন’-এর প্রতিনিধিরা। প্রতিবেদনটিকে ‘প্রেসবিজ্ঞপ্তি’ বলে অভিহিত করা হয়েছে, শিরোনাম করা হয়েছে, ‘শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, উৎসব বোনাস প্রদানের দাবি’। বিবরণের ভেতরে হোটেল-রেস্টুরেন্ট-মিষ্টি-বেকারি শ্রমিকদের জীবনের মানবেতর অবস্থার বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। স্মারকলিপির বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, “চাল, ডাল, তেল, লবণ, পেঁয়াজ, আদা, রসুনসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে শ্রমিক-কৃষক-জনগণের বেঁচে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। তাছাড়া দফায় দফায় জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধিসহ বাড়িভাড়া, গাড়িভাড়া, চিকিৎসা, শিক্ষা ব্যয় বৃদ্ধির ফলে জাতীয় ও জনজীবনের সংকট প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমাজে ধনী-গরিবের বৈষম্য দ্রুত বৃদ্ধি হচ্ছে। অথচ বাজারদরের সাথে সংগতি রেখে হোটেল-রেস্টুরেন্ট-মিষ্টি-বেকারি শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি দেওয়া হচ্ছে না। আজকের বাজারদর হিসেব করলে দেখা যায় একজন মানুষের কোন রকমে খেয়ে বেঁচে থাকতে হলে তিন বেলা খাবারের জন্য দৈনিক (৬০+১০০+১০০) টাকা = ২৬০ টাকা খরচ করতে হয়। সেখানে ৬ সদস্যের একটি শ্রমিক পরিবারে বাসাবাড়িতে খরচ হিসেব ধরলে মাসে ৪০/৪৫ হাজার টাকা প্রয়োজন। এর সাথে বাসাভাড়া, চিকিৎসা, সন্তানের শিক্ষা, বিনোদন, যাতায়াতসহ অন্যান্য সকল প্রয়োাজন যুক্ত করেই মজুরি নির্ধারণ হওয়া যৌক্তিক। অথচ আমাদের নামে মাত্র মজুরি প্রদান করছে মালিকরা। রমজান মাস আসলে ব্যবসা মন্দার অজুহাত দেখিয়ে অধিকাংশ মালিকরা হোটেল রেস্টুরেন্ট শ্রমিকদের বিনাবেতনে ছাঁটাই করে দেন। ফলে পবিত্র এই মাসে ছাঁটাইকৃত হোটেল রেস্টুরেন্ট মিষ্টি বেকারি শ্রমিকদের জীবনে নেমে আসে চরম অনিশ্চয়তা, পরিবার-পরিজন নিয়ে শ্রমিকরা সিয়াম সাধনার পরিবর্তে অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হন। এমনকি শ্রমিকরা ঈদের আনন্দ উদযাপন থেকেও বঞ্চিত হয়। অথচ শ্রমিকদের হাড়ভাঙা পরিশ্রমে মালিকদের পুঁজি আরাম-আয়েশ বৃদ্ধি হয় আর শ্রমিকদের সৃষ্ট মুনাফায় মালিকপক্ষ মহাধুমধামে ঈদ উদযাপন করেন। ঈদ উৎসবের সময় হোটেল রেস্টুরেন্ট মিষ্টি বেকারি শ্রমিকরা কোন উৎসব বোনাস পান না। শুধু আইনগতভাবে নয় ধর্মীয় মূল্যবোধ ও মানবাধিকারের দিক থেকেও হোটেল-রেস্টুরেন্ট-মিষ্টি-বেকারি শ্রমিকদের রমজান মাসে বিনাবেতনে ছাঁটাই করা অন্যায়। হোটেল শ্রমিকরা দৈনিক ১০/১২ ঘণ্টা অমানবিক পরিশ্রম করে অর্ধাহারে-অনাহারে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হন, যার কারণে হোটেল শ্রমিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। এছাড়া শ্রমআইন অনুযায়ী বছরে ১১ দিন উৎসব ছুটি প্রদানের আইন থাকলেও মালিকরা তার তোয়াক্কা করেন না। এমন কি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মহান মে দিবসের দিনেও শ্রমিকদের কাজ করতে বাধ্য করা হয়।”
এই বিবরণের মধ্যে কোনও অতিরঞ্জন আছে বলে বোধ করি কারও কাছে প্রতিপন্ন হওয়ার কোনও অবকাশ নেই। বাস্তব অবস্থা তাই অথবা হোটেল-রেস্টুরেন্ট-মিষ্টি-বেকারি শ্রমিকদের জীবন প্রকৃতপ্রস্তাবে তারও চেয়ে অধিক মানবেতর। ভুলে গেলে চলবে না শ্রমিকদের উদ্বৃত্তশ্রম শোষণ না করলে হোটেল-রেস্টুরেন্ট-মিষ্টি-বেকারি মালিকদের চলে না, যেটাকে জ্ঞানীলোকদের অনেকেই আত্মসাৎ বা চুরি বলেছেন। জানি রাজনীতিক অর্থনীতির এইরূপ কথা কারও কারও একেবারেই হজম হবে না। কিন্তু সম্পদ সঞ্চয়ের পেছনের আদত সত্যিটা কিন্তু তাই। এমতাবস্থায় হোটেল-রেস্টুরেন্ট-মিষ্টি-বেকারি শ্রমিকদের জীবন দাবিগুলো পূর্ণ করার দায় সংশ্লিষ্টদের ক্ষেত্রে থেকেই দায় এবং সে-দায় আদায়ের বরখেলাপি সামাজিক, রাজনীতিক কিংবা ধর্মীয় নৈতিকতার দিক থেকে কোনওভাবেই সমীচীন নয়। বোধ করি সেজন্যই ধর্মশাস্ত্রের বরাত দিয়ে এইরূপ বলা হয় যে, সূঁচের ছিদ্রপথে উটের প্রবেশ করা যতাটা কঠিন তার চেয়েও কঠিন ধনীর পক্ষে বেহেস্তে প্রবেশ করা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com