টাঙ্গুয়ার হাওরের নজরখালিতে ৮১ গ্রামের ফসল রক্ষার্থে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে নির্মিত হচ্ছে বাঁধ। পত্রিকায় এমন সংবাদপ্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু নজরখালিতে বাঁধ নির্মাণ পরিবেশগত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী। তিনি বলেন, “সুনামগঞ্জ জেলায় ভারী বর্ষণ শুরু হলে যাদুকাটাসহ বিভিন্ন নদীর পানির চাপ পড়ে নজরখালিসহ আরো কয়েকটি পয়েন্টে। ঢলের প্রবল ¯্রােত নজরখালি দিয়ে বিশাল টাঙ্গুয়ার হাওরে প্রবেশ করলে আশপাশের হাওরগুলো অনেক ঝুঁকিমুক্ত থাকে। আর ঢলে বাধা পেলে গুরমা, মাটিয়াইনসহ অন্যান্য হাওর রক্ষা বাঁধ বিপন্ন হয়ে উঠে। এতে বেশি ফসলহানির আশঙ্কা থাকে। সেজন্য এখানে বাঁধ দেওয়াটা জরুরি বললেও আমরা এখানে বাঁধ দিতে পারি না। একবার ইউএনও সাহেবের অনুরোধে সেখানে বাঁধ দেওয়া হয়েছিলো। সেসময় প্রচুর ফসলের ক্ষতি হয়েছিলো। এখানে পাউবো কখনো বাঁধ দেয়নি। এখানে বাঁধ করতে পরিবেশগত সমস্যা আছে।”
সমস্যা আছে সত্যি। কিন্তু সমাধান তো একটা কীছু পেতেই হবে। অভিজ্ঞমহলের ধারণা এই সমস্যাটি একটি মানবসৃষ্ট সমস্যা। সেজন্য সমস্যাটা কেন হয়েছে তা খোঁজে বের করা দরকার। যে-জন্য সমস্যাটা তৈরি হয়েছে তার বিপরীত কাজ করলেই সমস্যাটার সমাধান সম্ভব। আসলে সমস্যাটা তৈরি হয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকায় যত্রতত্র পাউবোর অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণের কারণে। নজরখালির উজানে এলাকার বিভিন্ন স্থানে বাঁধ নির্মাণের ফলে ঢলের পানি ভিন্ন ভিন্ন পথে সহজে দক্ষিণে নামতে না পেরে নজরখালিতে জলের চাপ বাড়ায় এবং যথারীতি সেখানে ফসলহানির আশঙ্কা তৈরি হয়। এই সমস্যাটি পাউবোকেই সমাধান করতে হবে। পাউবোর পক্ষে এ দায় এড়ানোর কোনও অবকাশ নেই। নজরখালির উজানের জল সরে যাওয়ার পথগুলো খোলে দিতে হবে এবং তার সঙ্গে করতে হবে নদীর প্রয়োজনীয় খনন। অন্যথায় চেঁচামেচিই কেবল সার হবে, কাজের কাজ কীছুই হবে না।