‘সীমান্তে বেড়েছে চোরাচালান’, এই শিরোনামে পত্রিকায় সংবাদপ্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবদনের শুরুতেই বলা হয়েছে, “গত ৯ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জে ৪৫ হাজার ৪৮০ কেজি (৪৫ টন) ভারতীয় পেঁয়াজসহ আটজনকে আটক করে পুলিশ। এটি সুনামগঞ্জের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় চোরাচালান বলে সংশ্লিষ্টরা আখ্যায়িত করলেও সীমান্তবর্তী এলাকায় বাড়েনি চোরাচালান প্রতিরোধ ব্যবস্থা। এরপর একটি কথাই বলার থাকতে পারে, আর সেটি হলো : যে-করেই হোক চোরাচালান প্রতিরোধ করার ব্যবস্থা নিতে হবে এবং এর কোনও বিকল্প নেই।
কিন্তু অভিজ্ঞমহলের ধারণা এই যে, উৎপাদন ব্যবস্থাকে দেশের মানুষের পণ্য চাহিদার সমান করে তোলতে না পারলে চোরাচালান কীছুতেই বন্ধ হবে না। দেশে পেঁয়াজের অভাব থাকলে পেঁয়াজের চোরাচালান হবেই। পেঁয়াজ হয় দেশে উৎপাদন করতে হবে, না হয় পর্যাপ্ত পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করে যোগান দিতে হবে। বাজারে পেঁয়াজের যোগান কম থাকলে অসৎ ব্যবসায়ীরা চোরাচালানে লিপ্ত হবেই, যদি না তাদেরকে প্রতিহত করা যায়, সীমান্তে পাহারা বসিয়ে ও অভ্যন্তরে আইনি পদ্ধতিতে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করে। মনে রাখতে হবে, পেঁয়াজ এমন কোনও খাদ্যদ্রব্য নয়, যেটা গ্রহণ না করলে মানুষের জীবন চলবে না। অনেকেই আছেন, যাঁরা পেঁয়াজ খান না, অথবা খেতে পছন্দ করেন না। সুতরাং পেঁয়াজ চোরাচালানের মাধ্যমে পেতেই হবে দেশের জন্য সেটা কোনও ভীষণ জরুরি বিষয় নয়। পেঁয়াজ না পেলে দেশে দুর্ভিক্ষ লেগে যাবে, এমনও নয়। পেঁয়াজ চোরাচালান হচ্ছে কেবল কীছু অর্থলোভী মানুষের আরও অধিক সম্পদ সহজে লাভ করার অসাধু মানসিকতা বা প্রবণতা থেকে। সুতরাং বর্তমান আর্থনীতিক ব্যবস্থায় মুনাফা অর্জনের অবৈধ উপায় অবলম্বন করাকে প্রতিরোধ করতে না পারলে আপাতত চোরাচালান প্রতিরোধ করতে চোরাকারবারিদেরকে ধরে শাস্তির ব্যবস্থা করুন। এটাই সহজ পথ।