বিশেষ প্রতিনিধি ::
পাহাড়ি ঢলে সড়ক ভেঙে যাওয়ায় গত একমাস ধরে জেলা শহর সুনামগঞ্জের সাথে তাহিরপুর উপজেলা সদরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এ কারণে এই সড়কপথ ব্যবহার করে জেলা শহর সুনামগঞ্জে যাতায়াতকারী সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণার হাওরপাড়ের কয়েক লক্ষাধিক বাসিন্দা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এলাকাবাসী এই সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। নতুবা হাওরপাড়ের বৃহদাংশের লোকজনের ঈদে বাড়ি ফেরা কষ্টকর হবে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়ক নির্মাণকাজের ঠিকাদার গত এক বছর ধরে কাজ না করে ফেলে রাখায় বন্যার শুরুতে রাস্তার অবস্থা আরো বেহাল হয়েছে। তার অবহেলার কারণেই সড়কের বড় ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ সূত্র জানায়, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ২৭ জুন তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কটির উপজেলার বালিজুরি ইউনিয়নের আনোয়ারপুর বাজার সংলগ্ন রক্তি সেতুর পূর্বাংশের সংযোগ সংড়কটির ৩শ মিটার জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে জেলা শহর সুনামগঞ্জের সাথে তাহিরপুর উপজেলার সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে। এ সড়কপথ ব্যবহার করে তাহিরপুর উপজেলার নাগরিক ছাড়াও জেলার ধর্মপাশা, জামালগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলার একাংশের লোকজন যাতায়াত করে থাকেন। পর্যটকরাও এই সড়ক দিয়ে টাঙ্গুয়ার হাওর, শহীদ সিরাজ লেক ও যাদুকাটা-মাহরামটিলা এবং শিমুল বাগান ভ্রমণ করেন।
উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের ৪ কিলোমিটার স্থান সংস্কারে প্রায় ৪ কোটি টাকার কাজ পায় স্থানীয় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটির আনোয়ারপুর সেতুর সংযোগ সড়কটিও করার কথা। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকেই সংযোগ সড়কটিতে গতিহীনভাবে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। কাজ ফেলে রাখায় বন্যার কারণে আরো ক্ষতি হয়েছে সড়কের। ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে এটা হয়েছে বলে মনে করেন এলাকাবাসী। ঠিকাদার যথাসময়ে কাজ শেষ করতে পারলে বড় সমস্যা হতোনা বলে মনে করেন তারা।
উপজেলা ছাত্রলীগ কর্মী ইয়াসির আরাফাত অপু বলেন, ২০১৮ সাল থেকে আনোয়ারপুর সংযোগ সড়কটির ৩ শত মিটার রাস্তা কাজ চলছে গতিহীনভাবে। কচ্ছপগতিতে চললেও শতবার এ স্থানটি পুনঃনির্মাণ করা যেত। কিন্তু এইটুকু স্থান সংস্কার হয় না। সবাই এ রাস্তা ব্যবহার করে যাতায়াত করে। কিন্তু ঠিকাদারদের কেউ কিছু বলেনা।
তাহিরপুর বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এরশাদ আলী বলেন, সড়কটি আনোয়ারপুর অংশটি ভাঙ্গা থাকায় দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তিতে আছি। সম্প্রতি বন্যায় আরো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বাজারে মালামাল পরিবহন ব্যয়বহুল ও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
এ কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারি প্রকৌশলী ফজলুল হক বলেন, ঠিকাদারের কাজ চলছে। আশা করছি শীঘ্রই এই সংযোগ সড়কটি সংস্কার করে যানবাহন চলাচলের উপযোগী হয়ে ওঠবে।