স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টরা তথ্য নিয়ে লুকোচুরি করছে। এই প্রতিবেদক প্রায় সাত কার্য দিবসে তথ্যের জন্য গিয়ে কোন তথ্য সংগ্রহ করতে পারেননি। চলতি অর্থ বছরের এডিবি’র বরাদ্দ ও প্রকল্প তালিকা চাইলে নানা টালবাহানা করেন সংশ্লিষ্টরা। একজন আরেকজনের কথা বলে পাশ কাটিয়ে সময় ক্ষেপণ করেছেন। সর্বশেষ গতকাল বুধবার উপজেলা প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন তথ্য না দিয়ে ওয়েবসাইটে খোঁজ নেওয়ার পরামর্শ দেন।
জানা গেছে, এই প্রতিবেদক সুনামগঞ্জ জেলার ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে এডিবি’র প্রকল্প বিষয়ে তথ্য চান। সরকারের উন্নয়নমূলক সংবাদ প্রকাশের জন্য এই তথ্য চাইলেও রহস্যজনক কারণে তারা শুরু থেকেই তথ্য দিতে গড়িমসি করেন। জানা গেছে, মাঠপর্যায়ে এই প্রকল্পগুলোর প্রাক্কলন তৈরি ও দেখভাল করে থাকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদার, পিআইসি ও স্থানীয় চেয়ারম্যানদের সঙ্গে আতাত করে তারা কৌশলে তুলনামূলক ‘ভালোস্থানে’ প্রকল্প তৈরি করে বরাদ্দ নয়ছয় করে। অনেক সময় একই স্থানে একাধিক প্রকল্প তৈরি করেও তারা বরাদ্দ লোপাটের চেষ্টা করে। গত অর্থ বছরে এভাবে বেশ কয়েকটি ‘মারিং-কাটিং’ প্রকল্পের খোঁজ পেয়েছেন এই প্রতিবেদক।
জানা গেছে, গত ৫ জুলাই, গত ৯ জুলাই, গত ১৩ জুলাই, গত ১৭ জুলাই এবং সর্বশেষ গতকাল ১৯ জুলাই এই প্রতিবেদক উপজেলা প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে দেখা করে এডিবি’র চলতি অর্থ বছরের টেন্ডার ও পিআইসির তথ্য চান। তিনি হিসাব সহকারি মো. মনির মিয়াকে দেখিয়ে দিয়ে চলে আসেন। মনির মিয়া ওইদিন এই প্রতিবেদককে জানান, জুন ক্লোজিংয়ের কারণে এখন দেওয়া সম্ভব নয়। পরবর্তীতে আবার তথ্য চাইতে গেলে মনির মিয়া বলেন, এডিবি’র প্রকল্প আপডেট ও সংশোধন করা হচ্ছে। আরো কয়েকদিন পরে আসেন। কয়েকদিন পরে গেলে তিনি বলেন, আমি দিতে পারবনা, স্যারকে বলেন। এই সময় উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেনের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে তথ্য দেওয়ার অনুরোধ জানালে তিনি মনির মিয়ার কাছ থেকে নেওয়ার কথা জানান। ফোন কেটে মনির মিয়ার কাছে তথ্য চাইলে তিনি বলেন, স্যার লিখিত না দিলে তথ্য দিতে পারবনা। গত ১৩ জুলাই পরবর্তীতে এই প্রতিবেদক উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহানের সঙ্গে কথা বলে তথ্য দেওয়ার অনুরোধ জানালে তিনি উপজেলা প্রকৌশলীকে তথ্য দেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে উপজেলা প্রকৌশলীর হিসাব রক্ষক মনির মিয়া শুধু টেন্ডারের কপিটি দিয়ে পিআইসির প্রকল্প দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। সর্বশেষ গতকাল বুধবার উপজেলা প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে দেখা করে আবারও তথ্য চাইলে তিনি বলেন, ওয়েবসাইট থেকে নিয়ে নেন। বারবার তথ্য না দিয়ে কেন হয়রানি করা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলেননি। উল্লেখ্য বুধবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ওয়েবসাইটে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার এডিবির তথ্য আপডেট করা হয়নি।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, জনগণের জন্য উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে এডিবি প্রকল্পের মাধ্যমে। সবার এই তথ্য জানার অধিকার রয়েছে। কেন তথ্য নিয়ে লুকোচুরি করছে অবশ্যই আমি বিষয়টা দেখে ব্যবস্থা নেব। এভাবে তথ্য নিয়ে লুকোচুরি ও হয়রানি কাম্য নয়।