দীর্ঘদিন পর আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে আলোর মুখ দেখছে ডলুরা স্থল শুল্কস্টেশন। গত ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশ-ভারত ডলুরা সীমান্তে দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধি, প্রশাসনের প্রতিনিধি এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত সভায় ফলপ্রসূ আলোচনার পর আবার ১৫ ফেব্রুয়ারি একই স্থানে দুই দেশের প্রতিনিধিদের সভা আহ্বান করা হয়েছে। উভয় দেশের প্রতিনিধিদের আশা এ বছরই শুল্কস্টেশনটি চালুর মাধ্যমে পণ্য আমদানি-রপ্তানি শুরু হবে।
এই শুল্কস্টেশন চালুর ব্যাপারটি দীর্ঘদিনের। ১৯৯৬ সালে ভারতের শিলংয়ে সুনামগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এবং শিলং চেম্বার অব কমার্স জেলার ডলুরাকে শুল্কস্টেশন করতে প্রথমে এক বৈঠকে মিলিত হয়। ফলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ১৯৯৯ সালের ৩১ জানুয়ারি ডলুরা শুল্কস্টেশন এক বছরের জন্য পরীক্ষামূলক চালুর জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করে। কিন্তু পরের বছরই ভারত সরকার কোনো কারণ ছাড়াই স্টেশনটি বন্ধের আদেশ জারি করে।
২০০০ সালের ১১ এপ্রিল তৎকালীন এফবিসিসিআই সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু ভারতের ফেডারেশন অব ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট বরাবরে পত্র লিখে ডলুরা শুল্কস্টেশন চালুর বিশেষ অনুরোধ জানান। পরে ভারত সরকার স্টেশনটি চালুর অনুমতি প্রদান করে। কিন্তু বাংলাদেশ ও ভারতের আমদানি-রপ্তানিকারকদের মধ্যে যোগাযোগ ও ব্যবসায়িক ঐক্যমতে পৌঁছাতেই নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও ২০০০ সালের ২২ মে এবং পরবর্তী আরো এক বছরের জন্য শুল্কস্টেশন চালুর আদেশ বহাল রাখা হয়। এভাবে রাজস্ব বোর্ড তিন দফা চালু রাখার পর ২০০২ সালে স্টেশনটি আবার বন্ধ হয়ে যায়। অনেক চড়াই-উৎরাই শেষে শুল্কস্টেশনটি অচিরেই চালু হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ী মহলের সর্বশীর্ষ সংগঠন সুনামগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। শুল্কস্টেশনটি চালু হলে বেশি লাভবান হবে বাংলাদেশ। ব্যবসায়ীরা সড়ক ও নদীপথে মালামাল পরিবহন করতে পারবেন। তাছাড়া স্টেশনটি চালু হলে বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, অরুনাচল, মিজোরাম, মনিপুরসহ ৭টি প্রদেশে সহজে ব্যবসা সম্প্রসারণের সুযোগ তৈরি হবে। পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীরও কর্মসংস্থানের বিরাট সুযোগ সৃষ্টি হবে। আমরা আশা করবো, উভয়দেশের নেতৃস্থানীয় ব্যবসায়ীগণ যত দ্রুত সম্ভব শুল্কস্টেশনটি চালুর ব্যাপারে গুরুত্ব দিবেন।