সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
আজ সরস্বতী পূজা, বাণী অর্চনার আরাধ্য দিন। শুক্লা পঞ্চমীতে আজ বুধবার শ্বেতশুভ্র কল্যাণময়ী বিদ্যাদেবীর আবাহন হবে। ঢোল-কাঁসি আর শঙ্খনিনাদে মুখরিত হয়ে উঠবে পূজাম-পগুলো। ভোর থেকেই মঙ্গলালোকে উদ্ভাসিত ধুপ-ধুনোর গন্ধে মাতোয়ারা ধরণীতে বেজে উঠবে শান্তির মোহনীয় সুর।
সনাতন ধর্মানুসারে সরস্বতী দেবী বিদ্যা ও জ্ঞানের দেবী বলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে বাড়িতে অনুষ্ঠিত হবে বিদ্যা দেবীর পূজা। শিশু সন্তানরা পূজার পর দেবীর সামনে হাতেখড়ি দিয়ে প্রবেশ করবেন শিক্ষা জীবনে। শিক্ষার্থীরা উপোস করে সরস্বতী দেবীর চরণে পু®পাঞ্জলি দিয়ে তার আশীর্বাদ নেবেন।
সরস্বতী বিদ্যার ও ললিতকলার অধিষ্ঠাত্রী দেবী হিসেবে পূজিত হবেন। ঐশ্বর্যদায়িনী, বুদ্ধিদায়িনী, জ্ঞানদায়িনী, সিদ্ধিদায়িনী, মোক্ষদায়িনী এবং শক্তির আধার হিসেবে সরস্বতী দেবীর আরাধনা করা হয়।
সরস্বতী দেবী শ্বেতশুভ্র বাসনা। তার এক হাতে বেদ, অন্য হাতে বীণা। এ জন্য তাকে বীণাপাণিও বলা হয়। কুসংস্কার, গোঁড়ামি, অন্ধবিশ্বাস এবং ধর্মীয় সঙ্কীর্ণতার অবসান ঘটিয়ে জ্ঞানচক্ষুর উন্মিলনের মাধ্যমে সুন্দরের পথে মানবকুলকে এগিয়ে নেয়ার প্রত্যাশায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ প্রতিবছর শ্রীপঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজা করে থাকেন।
সকাল হতে উপবাস থেকে মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে ভক্তরা প্রার্থনা জানাবেন বিদ্যাধিষ্ঠাত্রীর। হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে সরস্বতী জ্যোতির্ময়ী অধিষ্ঠাত্রী দেবী। তিনি বাগদেবী। সরস্বতী নদীর তীরে দেবীর স্তোত্র ও আরাধনার মাধ্যমে বেদধ্বনি হতো বলে এই নদী বাগদেবীর বাসস্থান বলে অভিহিত। নদী অর্থে তিনি পবিত্র তোয়া সঙ্গীতময় ও সুন্দর স্তোত্রের উদ্বোধনকারী। বাগদেবী অর্থে তিনি মানবহৃদয়কে পবিত্র করেন। তিনি সুন্দর ও মর্ত্যবাক্যের প্রেরণকারী। তিনি মহাসমুদ্রের মতো পরমাত্মার প্রকাশ করেন। তিনি সমুদয় মানব-মানবীর হৃদয়ে জ্যোতি সঞ্চারিত করেন। পরমাত্মার মুখ থেকে তার আবির্ভাব।
দেবী সরস্বতী শুক্লবর্ণ, বাণীধারী ও চন্দ্রের শোভাযুক্ত। তিনি শ্রুতি ও শাস্ত্রের মধ্যে জ্যেষ্ঠ, কবিদের ইষ্ট- এ জন্য তার নাম সরস্বতী। মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী দিন অর্থাৎ আজ বুধবার তার আরাধনার শুভ দিন। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মেতে উঠবেন সরস্বতী পূজার আনন্দে।
প্রতিবছরের মতো এবারও সুনামগঞ্জে সরস্বতীর পূজার আয়োজন করা হয়েছে।