জয়ন্ত সেন ::
শাল্লা উপজেলার বাহাড়া ইউনিয়নের প্রতাপপুর বাজার কুশিয়ারা নদীর ভাঙনে বিলীনের পথে। বাজারের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত প্রতাপপুর নতুন হাটি। নদীর পশ্চিম তীর সংলগ্ন ওই নতুন হাটিতে বসবাস করছে শতাধিক পরিবার। কুশিয়ারার গ্রাসের মুখেই রয়েছে প্রতাপপুর গ্রামের এই নতুন হাটি। এমনিতেই নদীরপাড় ভেঙে হুমকির মুখে রয়েছে প্রতাপপুর গ্রামের ওই বৃহৎ পাড়াটি। এরমধ্যে ওই গ্রাম ও বাজারটির পশ্চিম দিকে দেওয়া হয়েছে ধনুরাকৃতির ৪টি পিআইসি। সেখানে ৪টি প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে প্রায় ৬০ লাখ টাকা। যেখানে ভেড়াডহর কিংবা ভান্ডাবিল হাওরে পানি প্রবেশ করার মতো আপাতত কোনো সম্ভবনা নেই। কারণ, পূর্বদিকে রয়েছে বাজার, প্রতাপপুর গ্রাম ও পূর্বের পিআইসির অক্ষত বাঁধ। যা শুধুমাত্র যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করা হয়। ওই পুরোনো বাঁধের প্রায় ১শ ফুট দূরে কুশিয়ারা নদীরপাড়। পশ্চিমে গ্রাম পূর্বদিকে হাওররক্ষা বাঁধ। আবার ২০১৭ সালের সংশোধিত কাবিটা নীতিমালা অনুযায়ী ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে নতুন ধনুরাকৃতির বাঁধও পূর্বপ্রান্তের পুরোনো বাঁধ ও পশ্চিমে প্রতাপপুর গ্রামের মধ্যভাগে দেওয়া হয়েছে। যা অত্যন্ত অপরিকল্পিতভাবে তৈরি করে নদীর তীরে অবস্থিত প্রতাপপুর নতুন হাটি ও বাজারকে নদীগর্ভে বিসর্জনের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, আগে নদীভাঙন প্রতিরোধের প্রয়োজন ছিল। তাহলে গ্রাম-বাজার দুটোই রক্ষা করা যেতো। এখন তারা যেটা করছে এটা ভিতরে ইঁদুর রেখে গর্তের মুখে মাটি দিয়ে ভরাট করার মতো আরকি। ভিতরে ইঁদুর ঠিকই রইছে। এখানে নদীভাঙন রোধের বিকল্প নাই। অন্যথায় আরো ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি হতে পারে বলে তিনি জানান।
বাহাড়া ইউপির ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার নিতাই চন্দ্র দাস বলেন, পিআইসি যখন মেজারমেন্ট করে তখন তো আমাদের তারা জিজ্ঞেস করেন নাই। পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন করেছেন। বাঁধটি পূর্বদিকেও দিতে পারতেন তারা। একটু পূর্বদিকে দিলে উভয় কূলই রক্ষা হতো। তবে পিআইসির প্রয়োজন আছে বলে তিনি জানান।
ওই গ্রামের রতন চন্দ্র দাস বলেন, এইডা মূলত রাস্তা করতাছে। বাজার তো ভেঙে যাচ্ছে আগের রাস্তাও ভেঙে যাবে।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন শাল্লা শাখার অনলাইন বিষয়ক স¤পাদক পাবেল আহমদ বলেন, যে অবস্থা দেখছি, তাতে মনে হলো গ্রামটাকে বিসর্জনের ব্যবস্থাই করা হচ্ছে। তবে আগে নদীর পাড়ে জিও বস্তা অথবা ব্লক ফেলা উচিত ছিল।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন শাল্লা শাখার সভাপতি বলেন, আগে নদী ভাঙন প্রতিরোধ করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ দিয়ে প্রতাপপুর গ্রামটিকে বিসর্জনের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।
এবিষয়ে পাউবোর শাখা কর্মকর্তা এসও মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ুম বলেন, নদী শাসনের জন্য ৫০ লক্ষ টাকার একটা প্রপোজেল দেওয়া আছে মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে। তবে পিআইসি আর নদী শাসন এক নয় বলে তিনি জানান।