সম্পদের হিসাব লুকালে চলে যেতে পারে সরকারি চাকরি
- আপলোড সময় : ২৩-০৯-২০২৪ ১২:১৮:২২ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৩-০৯-২০২৪ ১২:১৮:২২ পূর্বাহ্ন
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে তাদের সম্পদের হিসাব জমা দিতে হবে। ভুল তথ্য দিলে বিধিমালা অনুযায়ী শাস্তি হবে। তিরস্কার থেকে শুরু করে পদোন্নতি আটকে যাওয়া, বরখাস্ত, বাধ্যতামূলক অবসর বা চাকরি থেকে অপসারণের মতো ব্যবস্থাও নেওয়া হতে পারে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সচিব। তিনি জানান, সম্পদ বিবরণী দাখিল করা এখন থেকে বাধ্যতামূলক। সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের আচরণবিধি ১৯৮৯ অনুযায়ী প্রতি বছর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে স¤পদের হিসাব জমা দিতে হবে। তবে এবারেরটা, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের হিসাব জমা দিতে হবে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে। সিলগালা খামে করে জমা দিতে হবে এটি।
সম্পদের তথ্য জমা না দিলে অথবা ভুল বা মিথ্যা হিসাব জমা দিলে কী কী ব্যবস্থা হবে - এ বিষয়ে সচিব বলেন, লঘু ও গুরুদন্ড ব্যবস্থা রয়েছে। লঘুদন্ডের মধ্যে প্রথমে রয়েছে তিরস্কার করা। এছাড়া চাকরির ক্ষেত্রে পদোন্নতি হবে না, আর্থিক ক্ষতি আদায় করা হবে। গুরুদন্ডের মধ্যে রয়েছে পদ থেকে নিচে নামিয়ে দেওয়া, চাকরি থেকে বরখাস্ত, বাধ্যতামূলক অবসর ও অপসারণের মতো পদক্ষেপ।
তিনি আরও বলেন, যারা ফাইন্যানসিয়াল জায়ান্ট হয়ে গিয়েছিল তারা সতর্ক হবে। দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ (৩০/১২/২০০২ তারিখের সংশোধনীসহ)-এর বিধি-১৩ অনুযায়ী সব সরকারি কর্মচারীর জন্য সম্পদ-বিবরণী দাখিল করা আবশ্যক। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর গত ১ সেপ্টেম্বর এ লক্ষ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে। বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সব সরকারি কর্মচারীকে সম্পদ-বিবরণী দাখিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সম্পদ বিবরণী অতি গোপনীয় তথ্য। তাই এ ক্ষেত্রে তথ্য অধিকার আইন প্রযোজ্য হবে না বলে উল্লেখ করেন মোখলেস উর রহমান।
তিনি বলেন, আগে পাঁচ বছর পর পর সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার বিধান ছিল। এখন প্রতি বছর স¤পদের হিসাব জমা দিতে হবে। ১৫ লাখ সরকারি কর্মচারীর সবাইকে স¤পদের হিসাব জানাতে হবে।
যে কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল :
ক্যাডার/নন-ক্যাডার (নবম বা তদূর্ধ্ব গ্রেড) কর্মকর্তা তার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়/বিভাগের সচিবের কাছে সম্পদ-বিবরণী দাখিল করবেন। গেজেটেড/নন-গেজেটেড কর্মকর্তা/কর্মচারীরা (দশম গ্রেড থেকে ২০তম গ্রেড) নিজ নিজ নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের সম্পদ-বিবরণী দাখিল করবেন।
জমাদান প্রক্রিয়া :
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রণীত নির্ধারিত ছকে সম্পদ-বিবরণী দাখিল করতে হবে। ছকটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দফতর/সংস্থার নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করা যাবে। স¤পদ-বিবরণীটি সিলগালা করা খামে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে।
স¤পদ-বিবরণীতে কী কী তথ্য উল্লেখ করতে হবে সে বিষয়ে একটি ফরমেট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে শিগগিরই জারি করা হবে বলে জানান সচিব।
সাজা :
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদ-বিবরণী দাখিল করতে ব্যর্থ হলে অথবা কোনও ভুল তথ্য দিলে কিংবা তথ্য গোপন করা হলে বা স¤পদের কোনোরূপ অসঙ্গতি দেখা গেলে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লঘুদ-ের মধ্যে প্রথমেই রয়েছে তিরস্কার। এরপর চাকরি বা পদ সম্পর্কিত বিধি বা আদেশ অনুযায়ী (অযোগ্যতার ক্ষেত্র ব্যতীত) নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য পদোন্নতি বা বেতন বৃদ্ধি স্থগিত রাখা হবে।
কর্তব্যে অবহেলা বা সরকারি আদেশ অমান্য করার কারণে সংঘটিত সরকারের আর্থিক ক্ষতির সম্পূর্ণ অংশ বা এর অংশবিশেষ, বেতন বা আনুতোষিক থেকে আদায় করা অথবা বেতন গ্রেডের নিম্ততর ধাপে অবনমিত করা। আর গুরুদন্ডের মধ্যে রয়েছে নিপদ বা নিম্ন বেতন গ্রেডে অবনমিত করা, বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান, চাকরি থেকে বরখাস্তকরণ ও অপসারণ।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ