উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রসংস্কার প্রসঙ্গে
৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানোত্তর অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠার পর রাষ্ট্রসংস্কারের ঐতিহাসিক প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে এবং ইতোমধ্যে রাষ্ট্রসংস্কার প্রশ্নে গণমাধ্যমান্তরে মতাতম দেওয়া শুরু হয়েছে। অনেকেই দিচ্ছেন। একজন বলেছেন, ‘এ ব্যাপারে এখন প্রায় সবাই একমত যে বাংলাদেশকে একটি উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য জাতীয় নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রীয় সংস্কার করা অপরিহার্য।’
রাষ্ট্রসংস্কার অপরিহার্য তাতে কোনও সন্দেহ নেই। আমরা রাষ্ট্রসংস্কারের বিরুদ্ধে নই। কিন্তু সংস্কার যাতে আবার জনগণের গলার কাঁটা না হয়ে দাঁড়ায় সংস্কারের অভ্যন্তরে সেই রাজনীতিক-আর্থনীতিক ব্যবস্থাকৌশলটি কার্যকর থাকতে হবে। উদারনৈতিকতানির্ভর সংস্কার কোনও যুক্তিতেই আমাদের কাম্য নয়। উদারনৈতিকতা শোষকশ্রেণির রাজনীতিক ও ভাবদর্শগত একটি ধারা, যা গণঅভ্যুত্থানের হোতা বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতাসহ দেশের সংখ্যাধিক কৃষক-শ্রমিক সাধারণ নি¤œবিত্ত মানুষের আকাক্সক্ষার প্রতীক হয়ে উঠতে পারে না। উদারনৈতিকতার ভেতরে একটি গণতন্ত্র থাকে, কিন্তু সেটি বৈষম্যবিরোধী নয়। সে-গণতন্ত্র ধনপতিদের স্বার্থরক্ষা ছাড়া জনকল্যাণের ক্ষমতা রাখে না। অন্যদেশের কথা জানি না, কিন্তু আমাদের দেশের বর্তমান আর্থসামাজিক গঠন কাঠামোর প্রগতিমুখি কিংবা জনকল্যাণমুখি বদল না করে উদার গণতান্ত্রিকতার প্রতিষ্ঠা প্রকারান্তরে ইতোমধ্যে অর্থাৎ নিকট অতীতে (একাত্তরোত্তর কাল থেকে ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানপূর্ব পর্যায় পর্যন্ত) প্রতিষ্ঠিত পরিবারতান্ত্রিকতাসহ গোষ্ঠীতান্ত্রিক স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং অগত্যা অচিরেই আর একটি ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থান জরুরি হয়ে পড়বে। সুতরাং রাষ্ট্রসংস্কারের ব্যাপারে ভেবেচিন্তে অগ্রসর হতে হবে এবং হওয়াই সমীচীন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ