সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল
রোগী হয়রানি বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিলেন তত্ত্বাবধায়ক
- আপলোড সময় : ১২-১০-২০২৫ ০৮:৪০:১৫ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১২-১০-২০২৫ ০৮:৪০:১৫ পূর্বাহ্ন

সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতাল দালালমুক্ত করার ও রোগী হয়রানি বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। স্বাস্থ্যখাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন বৃদ্ধির লক্ষ্যে টিআইবি’র অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) সুনামগঞ্জের উদ্যোগে সদর হাসপাতালের সভাকক্ষে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে এসিজি-সনাকের যৌথ অধিপরামর্শ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তত্ত্বাবধায়ক এই মন্তব্য করেন।
শনিবার সকালে অনুষ্ঠিত সভায় তিনি হাসপাতালের দালাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এজেন্টদের প্রতিরোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এছাড়া সেবা সম্পর্কিত ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপন করা, হেল্প ডেস্কে লোকবল বাড়ানো, অভিযোগ ও পরামর্শ বক্স চালু করা, আউটডোর রোগীদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী মজুদ থাকা সাপেক্ষে পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ করা, হাসপাতালে কর্মরত নার্স ও ডাক্তারদের নিজ নিজ ডিউটি শিডিউল অনুসরণ করা, আর্থিক লেনদেন জনিত সকল বিষয়ে নিয়মিত রশিদ প্রদান ইত্যাদি বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের দায়িত্বপ্রাপ্তদের এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ প্রদান করেন।
এছাড়াও অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটি কার্যকর করা, হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মান বৃদ্ধি, প্রয়োজনীয় তথ্য ও ফি সম্বলিত তথ্য বোর্ড/সিটিজেন চার্টার স্থাপন, জরুরি বিভাগে পর্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহ নিশ্চিত করা ইত্যাদি বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান। তিনি আরো জানান, সীমিত জনবল নিয়ে ২৫০ শয্যার সদর হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এটির সেবার মান বৃদ্ধিতে প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ।
সনাকের অনুপ্রেরণায় গঠিত অ্যাকটিভ সিটিজেন গ্রুপ এবং সনাকের সহযোগিতায় ও পরামর্শে হাসপাতালের সেবার মান আরো বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। সনাক-এসিজি যে পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন দিয়েছে তার অধিকাংশর সাথে তিনি একমত হন।
সনাক-এসিজি’র উল্লেখযোগ্য পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশসমূহ হল : ভর্তি রোগীদের বেডের চাদর প্রতিদিন পাল্টানো, নার্স ও ডাক্তারদের ব্যবহার মার্জিত করা, হাসপাতালের ভিতরের ময়লা প্রতিদিন পরিচ্ছন্ন করা, হাসপাতালের যাবতীয় তথ্য দৃশ্যমান জায়গায় রাখা ও তথ্যসেবা নিশ্চিত করা (ডিউটি রোস্টার, দৈনন্দিন ঔষধের তালিকা), হাসপাতালে নির্ধারিত সময়ে ডাক্তার, নার্সসহ অন্যান্য স্টাফদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা এবং কোন কারণে উপস্থিত হতে না পারলে নির্ধারিত কক্ষের সম্মুখে অনুপস্থিতির বিষয়টি নোটিশ দিয়ে অবহিত করা (এতে রোগী হয়রানি হ্রাস পাবে), চিকিৎসক নার্সদের ডিউটি রোস্টার দৃশ্যমান জায়গায় রাখা, নারী এবং শিশুদের জন্য বিশেষ সেবা সম্পর্কে জনসচেতনতার জন্য এই সম্পর্কিত তথ্যবোর্ড স্থাপন/চার্ট তৈরি বা লিফলেট তৈরি করা, নির্ধারিত সেবামূল্যের অতিরিক্ত ফি না নেয়া, হাসপাতাল চিকিৎসাসেবা সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ ও নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা।
সভায় সুনামগঞ্জ সনাকের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাড. খলিল রহমান বলেন, সনাক এর বিভিন্ন কার্যক্রমের ফলে হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। সেবার মান উন্নয়নে উত্থাপিত যে সমস্ত বিষয়বস্তু সভায় আলোচনা হয়েছে সেগুলো সংশ্লিষ্টদের সাথে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাস্তবায়িত হলে সেবার মান আরো বৃদ্ধি পাবে। স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে ও স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য সনাক সুনামগঞ্জে’র সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের আরএমও ডা. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম, লেখক সুখেন্দু সেন, মেডিসিন বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মাহমুদুর রহমান রকি, সেবা তত্ত্বধায়ক মো. বোরহান উদ্দিন এবং সনাক, এসিজি এবং ইয়েস সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। - সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ