সুনামগঞ্জ , শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫ , ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
জামালগঞ্জে ৯৫০ রাউন্ড শর্টগানের কার্তুজসহ গ্রেপ্তার ২ বাম দল-সংগঠনগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠনের আহ্বান সিপিবির বিচারকদের নিরাপত্তাসহ ২ দাবি, না মানলে রবিবার থেকে কলম বিরতি ভোটের মাঠে সক্রিয় বিএনপি’র মনোনয়নবঞ্চিত কামরুজ্জামান কামরুল আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না আওয়ামী লীগ : প্রধান উপদেষ্টা বিদ্রোহীদের চ্যালেঞ্জের মুখে দলীয় প্রার্থী প্রসঙ্গ হ্যাঁ-না : চার প্রশ্নের উত্তর একটাই ধানের শীষকে বিজয়ী করলে সকলেই ভালো থাকবে : কলিম উদ্দিন মিলন আ.লীগের ৩৫ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারক চক্রের ৬ জন গ্রেপ্তার জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট লকডাউনের প্রভাব পড়েনি বিমানবন্দর-রেল-মেট্রো-টার্মিনালে কড়া সতর্কতা, নিরাপত্তা বলয়ে দেশ বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে : আনিসুল হক ধোপাজানে টাস্কফোর্সের অভিযানে ৫ নৌকা, ৮ ড্রেজার জব্দ অক্ষত বাঁধকে ক্ষতিগ্রস্ত না দেখানোর দাবি আজ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ‎ভিডব্লিউবি কার্ডে অনিয়ম-দুর্নীতি: যাচাই-বাছাইয়ে টাকার বিনিময়ে তালিকাভুক্তি নির্বাচনি প্রচারণায় বন্ধ হচ্ছে পোস্টার পিআর, গণভোটের অজুহাত সৃষ্টি করে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র হচ্ছে :কলিম উদ্দিন আহমেদ মিলন
পিয়নকে মাঠে নিয়ে কোম্পানি জানালো যন্ত্র সচল!

বজ্র নিরোধক দন্ড কাজ করছে কি-না জানেনা কেউ!

  • আপলোড সময় : ১২-১০-২০২৫ ০৮:২৪:২২ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১২-১০-২০২৫ ০৮:৩০:৫৫ পূর্বাহ্ন
বজ্র নিরোধক দন্ড কাজ করছে কি-না জানেনা কেউ!
শামস শামীম::
বজ্রপাতে প্রাণহানি কমাতে হাওরের ৬ উপজেলায় ২৪টি বজ্রনিরোধক দন্ড (লাইটনিং এরেস্টার) বজ্রপাত নিরোধে কোনও ভূমিকাই রাখছেনা। যেসব স্থানে স্থাপন করা হয়েছে তা বরাবরই বজ্রপাতমুক্ত এলাকা বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজন। তাই ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে স্থাপন না করায় এর সুফল মিলছেনা বলেও মনে করেন তারা। পাশাপাশি দন্ড কাজ করছে কি না তা নিয়ে সন্দিহান সরকারের লোকজনসহ সচেতনমহল।
জানা গেছে, গত মে মাসে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পিআইও অফিসের ‘পিয়ন’কে নিয়ে স্থাপনকারী কোম্পানি জানিয়েছে দন্ড সচল আছে! তবে তারা কোন প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা করেছে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। ওই পরীক্ষার সময় জানানো হয় স্থাপিত এলাকায় কোনও বজ্রপাত হয়নি। তাই দন্ডটি কাজ করছে কি না এ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন হাওরের পরিবেশবিদরা। তারা বলেছেন, দন্ডগুলোতে সেন্সর থাকার কথা থাকলেও তা কাজ করছে কি-না সেই রেকর্ড পাওয়ার কোনও সুযোগই নেই।

সুনামগঞ্জ ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের শেষ দিকে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় ৪টি, তাহিরপুর উপজেলায় ৩টি, বিশ্বম্ভরপুরে ৩টি, জামালগঞ্জে ৩টি, ধর্মপাশায় ৩টি এবং শাল্লায় ২টি দন্ড স্থাপন করা হয়। এছাড়া আরো ৬টি দন্ড স্থাপন করে ‘ক্রিয়েটিভ সোলার এন্ড টেকনোলজি’ নামের কোম্পানি। ২০২২ সালের ২৫ জুন থেকে ২৯ জুনের মধ্যে এগুলো দুর্গম এলাকার বদলে গাছপালা আছে এমন স্থানে স্থাপন করা হয়েছে। তবে কাগজে কলমে ২০২২ সালের জুন মাসে স্থাপন করার কথা বলা হলেও ডিসেম্বরের দিকে স্থাপন করা হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে এর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০২১ সালে হাওরে বজ্রনিরোধক দন্ড- স্থাপনের জন্য একটি বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করে পরিকল্পনা কমিশনে জমা দিয়েছিল। কিন্তু ত্রুটির কারণে সেটি বাদ দেওয়ায় বড়ো পরিসরে বজ্রনিরোধক দন্ড- স্থাপনের উদ্যোগ ভেস্তে যায়। ২০২২ সালে ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখা জেলার ৬ উপজেলায় প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে বজ্রনিরোধক কিছু দন্ড স্থাপন শুরু করে। ৪০ ফুট উচ্চতার এই দন্ডগুলো চারপাশে মাত্র ১১০ মিটার এলাকায় বজ্রপাত নিরোধ করতে পারে। তবে এগুলো ত্রুটিপূর্ণ পদ্ধতিতে ভুল জায়গায় স্থাপনের কারণে কোনও কাজে আসেনি বলে অভিযোগ আছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরো জানা গেছে, ক্রিয়েটিভ সোলার এন্ড টেকনোলজিকে বজ্রনিরোধক দন্ড-স্থাপনের কাজ দেওয়া হয়। এগুলো তুরস্কের তৈরি বললেও এটা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।
প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, আবহাওয়ার আর্দ্রতা, মরিচা, মাটির পরিবর্তনের কথা মাথায় রেখে দন্ডের রক্ষণাবেক্ষণ করা জরুরি থাকলেও এটা কাউকে বুঝিয়ে দেয়নি কোম্পানি। দন্ডের গ্রাউন্ড রড বা গ্রাউন্ডিং সিস্টেম প্রতি বছর একাধিকবার পরিমাপ করার নির্দেশনা থাকলেও সেটাও মানা হয়নি। জানা গেছে দন্ড-গুলোতে চার্জ সংক্রান্ত বিষয়ে সেন্সর থাকার কথা থাকলেও তা কাজ করছে কি না সেই রেকর্ড পাওয়ার কোনও সুযোগও নেই। তাই এই দন্ড-কাজ করছে কি-না তা নিয়েও প্রশ্ন আছে।
হাওর, নদী ও পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান রাসেল বলেন, হাওর সারাবিশ্বের বজ্রপাত প্রবণ এলাকা হিসেবে খোদ নাসা ২০১৭ সালে এক গবেষণায় জানিয়েছে। এখানে প্রতি বছরই বজ্রপাতে প্রাণহানি ঘটে। হাতেগোণা যে কয়েকটি বজ্রনিরোধক দন্ড-স্থাপন হয়েছে তার মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। এগুলো আদৌ কাজ করছে কি-না যারা স্থাপন করেছে তারাও জানেনা, প্রশাসনও জানেনা। আমরা হাওরবাসীও কিছু জানিনা। তাই এর উপকার পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন ও সন্দেহ আছে।
জামালগঞ্জের সমাজসেবী ও বিএনপি নেতা আজিজুর রহমান আজিজ বলেন, বজ্রপাত প্রবণ এলাকা হলো দুর্গম হাওর। সেখানে স্থাপন না করে বাজারে ও গাছপালা এলাকা ঘেরা স্থানে স্থাপন করা হয়েছে দন্ড-। এসব এলাকা মূলত অনেকটা ঝুঁকিহীন। তাছাড়া এই দন্ড-গুলো কাজ করছে কি-না তাও জানার উপায় নেই। আমাদের কাজে লাগছে কি-না তাও আমরা জানিনা।
সুনামগঞ্জ পরিবেশ আন্দোলনের নেতা সইফুল আলম সদরুল বলেন, এগুলো যেহেতু ধাতব যন্ত্র তাই কাজ করছে কি-না সেন্সর রেকর্ড থাকা উচিত। না হলে এটি কাজ করছে কি-না বুঝার কোনও উপায় নাই। তাছাড়া বজ্রপাত হয়েছে কি-না তাও পরিমাপ করা হচ্ছে না। এই দন্ডের উপকারিতা নিয়ে তাই আমাদের মনে সন্দেহ আছেই।
দন্ড-স্থাপনকারী ক্রিয়েটিভ সোলার এন্ড টেকনোলজি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক শামীমা নাসরিন বলেন, দন্ডগুলো টার্কির। তবে কোন কোম্পানি তৈরি করেছে এবং এতে বজ্রপাত নিরোধের কি কি উপকরণ আছে তা বলতে পারেননি তিনি। এগুলো এক বছরের ওয়ারেন্টি দিয়ে স্থাপন করা হয়েছে বলে জানান। এখন স্থানীয় পিআইও অফিস রক্ষণাবেক্ষণ করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এগুলো কাজ করছে কি-না তা বৈজ্ঞানিকভাবে জানার বিশেষ কোনও উপায়ও নেই।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল হাসনাত বলেন, গত মে মাসে স্থাপনকারী কোম্পানি আমাদের সদর উপজেলার দন্ড-গুলো পরীক্ষা করেছে। তবে স্থাপিত এলাকায় বজ্রপাত পরিমাপের বিষয়ে তারা আমাদের কিছু বলেনি। আমাদের অফিস সহায়ককে নিয়ে তারা পরীক্ষা করে জানিয়েছে এগুলো সচল আছে। আমাদের রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ে কিছু অবগত করেনি।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান মানিক বলেন, তাহিরপুরে যে তিনটি বজ্রদন্ড- স্থাপন করা হয়েছে সেগুলো সচল না অচল আমরা কিছু জানিনা।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
জামালগঞ্জে  ৯৫০ রাউন্ড শর্টগানের কার্তুজসহ গ্রেপ্তার ২

জামালগঞ্জে ৯৫০ রাউন্ড শর্টগানের কার্তুজসহ গ্রেপ্তার ২