নাহিদ ইসলামের বক্তব্যে নতুন বিতর্ক, আলোচনায় ‘সেফ এক্সিট’
- আপলোড সময় : ০৭-১০-২০২৫ ০৯:০১:৪৬ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৭-১০-২০২৫ ০৯:০১:৪৬ পূর্বাহ্ন

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক ও সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সাম্প্রতিক এক মন্তব্য ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সম্প্রতি একাত্তর টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছে; তারা এখন নিজেদের ‘সেফ এক্সিট’ বা নিরাপদ প্রস্থান নিয়ে ভাবছে।”
তার এই বক্তব্য প্রকাশের পর থেকেই ফেসবুকে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা। বিভিন্ন পেজ ও ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে সাক্ষাৎকারের ভিডিও ও উদ্ধৃতিসহ ফটোকার্ড ছড়িয়ে পড়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় একাত্তর টেলিভিশনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট করা ওই উদ্ধৃতিতে রোববার রাত পর্যন্ত ১২ হাজারের বেশি প্রতিক্রিয়া ও প্রায় দেড় হাজার মন্তব্য এসেছে।
নাহিদ ইসলাম ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। পরে তিনি পদত্যাগ করে এনসিপির আহ্বায়কের দায়িত্ব নেন। তবে ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে যোগ দেওয়া মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এখনো উপদেষ্টা পদে আছেন।
সাক্ষাৎকারে নাহিদ বলেন, তারা কেউ শুরুতে উপদেষ্টা হতে চাননি; বরং জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু রাজনৈতিক শক্তি অন্তর্ভুক্ত না থাকলে অন্তর্বর্তী সরকার তিন মাসও টিকতো না বলে উল্লেখ করেন তিনি। তার ভাষায়, “প্রথম ছয় মাস সরকারকে উৎখাত বা প্রতিবিপ্লব করার নানা চেষ্টা চলছিল - এটা এখনও মাঝে মাঝে দেখা যায়।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের বড় ভুল ছিল কিছু রাজনৈতিক নেতা ও উপদেষ্টাকে বিশ্বাস করা। আমাদের ছাত্র নেতৃত্বকেই শক্তিশালী করা উচিত ছিল। অনেক উপদেষ্টা নিজেদের স্বার্থ দেখেছেন, কেউ কেউ গণঅভ্যুত্থানের আদর্শের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। সময় এলে আমরা তাদের নামও প্রকাশ করব।”
নাহিদ ইসলামের মতে, উপদেষ্টারা যদি বুঝতেন যে তাদের আসল নিয়োগদাতা ছিল রাজপথে প্রাণ দেওয়া সাধারণ মানুষ, তাহলে আজ এই ‘বিচ্যুতি’ ঘটত না।
গণ-অভ্যুত্থানের পর সমন্বয়ক নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের বিরুদ্ধে বিপুল টাকার মালিক হওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, এই ধরনের অভিযোগগুলা বা এই ধরনের মিথ্যা ট্রায়াল আমাদের বিরুদ্ধে সব সময় আমাদের চালানো হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অন্য রাজনৈতিক দলের ছাত্ররা এসে কীভাবে দুর্নীতি করেছে চাঁদাবাজি করেছে সেই তথ্য প্রচার করা হয়েছে বৈষম্যবিরোধী নামে সেই বিষয়টা তুলে ধরা উচিত। মিডিয়ায় তো আমরা সেই মিডিয়া সাপোর্টটা পাচ্ছি না বলে মনে করছি।
নাহিদের সাফ জবাব, কে কত টাকার মালিক হয়েছেন, সবকিছুর অনুসন্ধান করা হোক। তিনি বলেন, আমাদের নামে, আমাদের বিষয়ে ইনভেস্টিগেট করা হোক যে আমরা কত সম্পত্তির মালিক হয়েছি, কত টাকার মালিক হয়েছি আর এখন যে রাজনৈতিক দলের অন্যান্য নেতা-কর্মীরা রয়েছে, তারা গত এক বছরে কত কোটি কোটি টাকা কামিয়েছে- চাঁদাবাজি, লুটপাট, প্রশাসনে, বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা জায়গায় কীভাবে তাদের নিজেদের লোক বসিয়েছে, এটা তো কারও অজানা নাই। বাংলাদেশের এই গণঅভ্যুত্থানের পরে কিন্তু প্রথম কয়েক মাস দুর্নীতি বন্ধ ছিল, এই দুর্নীতির চক্র আবার কীভাবে সরকারে জেঁকে বসল এইটা নিয়ে আপনারা ইনভেস্টিগেট করেন, দেখেন এটার সঙ্গে কারা জড়িত।
নির্বাচিত সরকার এলে কি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা হারিয়ে যাবে অথবা নেতারা সেফ এক্সিটের পথ বেছে নেবে কিনা সেই প্রশ্নে নাহিদ ইসলাম বলেন, এই লড়াই অনেক দীর্ঘ এবং অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে এটা আমরা ভেবেই রাজপথে নেমেছি। এই নির্বাচনকে লক্ষ্য করে কিন্তু জাতীয় নাগরিক পার্টি গঠিত হয় নাই। জাতীয় নাগরিক পার্টি বাংলাদেশের রাজনীতির আমল পরিবর্তনের স্বপ্ন এবং লক্ষ্য নিয়ে গঠিত হয়েছে। গত এক বছরে ছাত্রদেরকে নানাভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ