হোসাইন আহমদ::
সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে বেপরোয়া গতির মিনি ট্রাক ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা সংঘর্ষে সিএনজি যাত্রী মা-মেয়ে ও চালক নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আঞ্চলিক মহাসড়কের পাগলা বাজারের বাঘেরকোণা এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।
দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানার নজিরপুর গ্রামের মৃত হেমেন্দ্র চৌধুরীর মেয়ে ও মৃত প্রণয় কুমার দাসের স্ত্রী আঁখি দাস (৪০) ও তার মেয়ে মধুরিমা দাস প্রথমা (১৩) ও সিএনজি গাড়ি চালক হবিগঞ্জ জেলার আজমীরিগঞ্জ উপজেলার জলসুখা গ্রামের মৃত ননী গোপালের ছেলে সজল গোপ রায় (৪৭)। নিহত আঁখি দাস সুনামগঞ্জ পৌর শহরের উকিলপাড়ার বাসিন্দা ও তার মেয়ে সরকারি সতীশ চন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
নিহত সিএনজি গাড়ি চালক সজল গোপ জীবিকার জন্য সুনামগঞ্জ শহরের নবীনগর এলাকায় স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। এদিকে, দুর্ঘটনার পরপর মিনিট্রাক চালক মো. পারভেজ আহমদ (৩০) পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। মিনি ট্রাক চালক মো. পারভেজ আহমদ দিরাই থানাধীন ভাটিপাড়া ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে।
এ ঘটনায় সিএনজি গাড়ি চালকের ভাই হবিগঞ্জ জেলার আজমীরিগঞ্জ উপজেলার জলসুখা গ্রামের মৃত ননী গোপালের ছেলে নারায়ণ গোপ (৫৫) বাদী হয়ে শান্তিঞ্জ থানায় ট্রাক চালকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, সুনামগঞ্জ থেকে সিএনজি গাড়ি চালক সজল গোপ রায় তার সিএনজিযোগে (সিলেট-খ-১১-২৭০৭) আঁখি দাস ও মধুরিমা দাস প্রথমাকে নিয়ে হবিগঞ্জ যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের বাঘেরকোণা গ্রাম সংলগ্ন সিলেট-সুনামগঞ্জ অঞ্চলিক মহাসড়কে বিপরীত দিক থেকে আসা মিনিট্রাক (সিলেট-ড-১১-১৯৬৩) বেপরোয়া গতিতে সিএনজিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই সিএনজি চালক সজল গোপ, যাত্রী আঁখি দাসের মৃত্যু ঘটে।
গুরুতর আহত অবস্থায় মধুরিমা দাস প্রথমাকে শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সড়ক দুর্ঘটনার পর সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের দুই দিকে প্রায় ১ কিলোমিটারজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে জয়কলস হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে নিহত সজল গোপ, আঁখি দাস ও মুধরিমা দাস প্রথমার সুরতহাল প্রস্তুত করে। পরে মরদেহগুলো সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়। পরে নিহত সিএনজি গাড়ি চালক সজল গোপ রায়ের ভাই নারায়ণ গোপ রায় ও নিহত আঁখি দাস ও মধুরিমা দাস প্রথমার মৃতদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়া সৎকারের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, সুনামগঞ্জ বরাবর পৃথক পৃথক আবেদন করেন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতিক্রমে হাইওয়ে থানা পুলিশ নিহতদের মৃতদেহ তাদের স্বজনদের লাশ বিনা ময়নাতদন্তে হস্তান্তর করে। স্থানীয় বাসিন্দা শাহীন মিয়া ও শাহ আলম বলেন, তারা বিকট শব্দ শুনে ঘর থেকে দৌড়ে সড়কে যান। গিয়ে দেখেন ট্রাকটি পানিতে পড়ে যাচ্ছে। অটোরিকশা দুমড়েমুচড়ে আছে। দুজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। এসময় তারা একজনকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠান। পরে শুনেছেন হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তিনিও মারা গেছেন। শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল আহাদ জানান, মিনি ট্রাক-সিএনজি সংঘর্ষে মা মেয়েসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ট্রাকের চালককে আটক করা হয়েছে। ৩ জন নিহতের ঘটনায় সড়ক পরিবহন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি জয়কলস হাইওয়ে পুলিশকে তদন্তের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
ট্রাক-অটোরিকশা সংঘর্ষে মা-মেয়েসহ নিহত ৩
- আপলোড সময় : ২৭-০৯-২০২৫ ০৮:৩৫:৫৬ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৭-০৯-২০২৫ ০৮:৪০:১৬ পূর্বাহ্ন

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ