হাওরের কৃষিকে টিকিয়ে রাখতে হবে
- আপলোড সময় : ২১-০৯-২০২৫ ০৭:৪৫:৫০ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২১-০৯-২০২৫ ০৭:৪৫:৫০ পূর্বাহ্ন

হাওরকেন্দ্রিক কৃষি বাংলাদেশের জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তার অন্যতম প্রধান ভরসা। দেশের প্রায় পাঁচ ভাগের এক ভাগ ধান উৎপাদিত হয় সিলেট বিভাগের বিস্তীর্ণ হাওরাঞ্চলে। অথচ এই কৃষিই আজ নানা সংকটে জর্জরিত। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব, অকালবন্যা, পাহাড়ি ঢল, শিলাবৃষ্টি, সেচের অভাব, শ্রমিক সংকট, উৎপাদন খরচের লাগামছাড়া বৃদ্ধি এবং ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার কারণে কৃষকরা ক্রমেই কৃষির প্রতি অনাগ্রহী হয়ে পড়ছেন।
কৃষির এই হতাশাজনক চিত্র শুধু কৃষকের ব্যক্তিজীবনকেই বিপর্যস্ত করছে না, বরং প্রভাব ফেলছে স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্য, শ্রমবাজার ও সামগ্রিক অর্থনীতিতেও। হাজার হাজার কৃষক শহরমুখী হচ্ছেন, কেউ দিনমজুর হচ্ছেন, কেউবা রিকশা বা ইজিবাইক চালাতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে কৃষিকাজে অভ্যস্ত মানুষ যখন জমি ছেড়ে শহরে জীবিকার খোঁজে ছুটছেন, তখন বুঝতে হবে সমস্যাটা শুধু কৃষি খাতেই সীমাবদ্ধ নয় - এটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকটও বটে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সিলেট বিভাগের জলবায়ু পরিবর্তন কৃষিকে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। আগে যে বৃষ্টিপাত হতো পুরো মৌসুমে, এখন তা কয়েক ঘণ্টার ভেতরে নেমে আসে। কখনো আবার প্রয়োজনীয় সময়ে একফোঁটাও পাওয়া যায় না। ফলে কৃষকরা ধান রোপণ কিংবা সেচে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
সরকারি উদ্যোগ থাকলেও তা এখনো যথেষ্ট নয়। হাওরের কৃষিকে টিকিয়ে রাখতে হলে অবকাঠামো উন্নয়ন, নদী-খাল ড্রেজিং, জলাধার সংস্কার, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং কৃষকদের প্রশিক্ষণ অপরিহার্য। একইসাথে উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা ছাড়া কৃষকের মুখে হাসি ফেরানো যাবে না।
হাওরের ধান শুধু কৃষকের জীবিকার ভরসা নয়, এটি জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তারও প্রতীক। তাই আজই আমাদের দায়িত্ব নিতে হবে। কৃষকের মনোবল ভেঙে গেলে খাদ্যের ভা-ারও শূন্য হয়ে যাবে। কৃষিকে বাঁচাতে হলে কৃষকের জীবনমান বাঁচাতে হবে - এটাই সময়ের দাবি।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ