সুনামগঞ্জ , বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
৯ ধরনের মামলার আগে মধ্যস্থতা বাধ্যতামূলক দুই মাসের মধ্যে সব খাস জমির হিসাব নেওয়া হবে : পরিকল্পনা উপদেষ্টা সীমান্তে ১২ লাখ টাকার ভারতীয় গরু জব্দ চার আদিবাসী গ্রামে সুপেয় পানির সংকট সুরমার তীরে ময়লার ভাগাড় টাঙ্গুয়ার ‘দম যায় যায়’ অবস্থা দলগুলোর মতানৈক্য : মাঠে গড়াচ্ছে রাজনীতি পূর্ব ও পশ্চিম নতুনপাড়ার জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবি শিশুশ্রম মুক্ত আদর্শ সুনামগঞ্জ পৌরসভা ঘোষণা বিষয়ে সভা দেখার হাওরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস নয় পথে যেতে যেতে : পথচারী হাসপাতাল ছেড়ে বাসায় গেলেন নুর ‘ফুল স্পিডে’ চলছে সংসদ নির্বাচনের কেনাকাটা ভূমিকম্পে তেঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের ১০ স্থানে ফাটল সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের কাছে দায়িত্ব হস্থান্তর ফেব্রুয়ারিতে মহোৎসবের নির্বাচন হবে : প্রধান উপদেষ্টা এক ইউপি সদস্য ১৩ প্রকল্পের সভাপতি! জমে উঠেছে দিরাই বাজার মহাজন সমিতির নির্বাচন দুর্ঘটনায় জেলা প্রশাসনের দুই কর্মীর মৃত্যু, চালকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন তারেক রহমান দ্রুত দেশে ফিরবেন : লুৎফুজ্জামান বাবর
পর্যটকদের অবাধ বিচরণে বিপাকে আদিবাসীরা

চার আদিবাসী গ্রামে সুপেয় পানির সংকট

  • আপলোড সময় : ১৮-০৯-২০২৫ ০৮:৪৮:০৯ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৮-০৯-২০২৫ ০৮:৫৭:৩৮ পূর্বাহ্ন
চার আদিবাসী গ্রামে সুপেয় পানির সংকট
শহীদনূর আহমেদ ::
সীমান্তবর্তী তাহিরপুর উপজেলার আদিবাসী অধ্যুষিত পাহাড়ি গ্রামে খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পরিবারের সুপেয় পানির চাহিদা মেটাতে পাহাড়ি ঝর্ণা কিংবা ছড়ার উপর নির্ভর করতে হয় আদিবাসী নারী-পুরুষদের। তবে সম্প্রতি পর্যটকদের কারণে ঝর্ণার পানি ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারছেননা তারা। পানি সংকটের কথা বারবার বিভিন্ন দপ্তরে বলেও কোনো প্রতিকার হচ্ছে না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এদিকে আদিবাসীদের সুপেয় পানির সমস্যার স্থায়ী সমাধানে সরকারিভাবে উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
তাহিরপুর উপজেলার বড়দল উত্তর ইউনিয়নের চাঁনপুর টিলায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী গারো ও হাজং সম্প্রদায়ের বসবাস। টিলার মধ্যবর্তী স্থানে প্রবাহিত দৃষ্টিনন্দন রাজাই ঝর্ণাকে প্রকৃতির আশীর্বাদ হিসেবে দেখেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজন। এই ঝর্ণার পানি দিয়েই স্থানীয়রা খাবার পানিসহ গৃহস্থালি কাজ সম্পন্ন করেন।
জানাযায়, চাঁনপুর টিলার মতো ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ৪টি গ্রামে গারো, হাজং, খাসিয়া সম্প্রদায়ের অন্তত তিন শতাধিক পরিবারের পানির প্রধান উৎস পাহাড় থেকে আসা বিভিন্ন ঝর্ণা বা ছড়া। পাহাড়ি এলাকায় নলকূপ বসানোর খরচ বেশি। সবার পক্ষে নলকূপ বসানো সম্ভব হয় না। তাই পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দাদের নির্ভর করতে হয় ঝর্ণা ও ছড়ার পানির ওপর।
সাম্প্রতিক সময়ে ঝর্ণাগুলো পর্যটকদের কাছে পরিচিতি পাওয়ায় ঝর্ণার পানি ব্যবহারে বিপত্তি দেখা দিয়েছে আধিবাসীদের।
খাসিয়া সম্প্রদায়ের এস্টন বলেন, সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোর সুপেয় পানির সমস্যা প্রধান। দিন দিন এই সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করছে। এই সমস্যার সমাধান কবে হবে আমরা জানি না। তিনি আরও বলেন, পর্যটকদের অবাধ বিচরণে পাহাড়ি আদিবাসি নারীদের গোসল থেকে শুরু করে ধোয়ামুছার কাজ করতে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। পর্যটকরা আমোদফূর্তি করে ঝর্ণার পানি নোংরা করে ফেলায় তা ব্যবহারে উপযোগিতা হারাচ্ছে। তাছাড়া পর্যটকদের ছবি ও ভিডিও ধারণের ফলে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন আদিবাসী নারীরা।
আদিবাসী নারী সালমা শাংমা বলেন, পর্যটকদের কারণে আমরা ঠিকমতো পানি ব্যবহার করতে পারছিনা। তারা সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঝর্ণা এলাকায় অবস্থান করে। আমরা নিষেধ করলেও তারা শোনতে চায় না।
শিউলী রিচেন নামের এক কিশোরী বলেন, আমরা ঝর্ণার পানি দিয়ে গোসল করি। কিন্তু পর্যটকরা আমাদের নানাভাবে বিরক্ত করে। তারা আমাদের ছবি ও ভিডিও তুলে টিকটকে ছেড়ে দেয়। এদিকে বর্ষা কিংবা বৃষ্টির মৌসুমে প্রাকৃতিক উৎসের পানিতে চাহিদা পূরণ হলেও বিপত্তি হয় শুকনো মৌসুমে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অক্টোবরের শেষভাগ থেকে ঝর্ণা-ছড়া থেকে পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যায় না। পানি সমস্যার স্থায়ী সমাধানে আবেদন করেও সমাধান মিলেনি বলে জানান আদিবাসী গ্রামের মোড়ল প্রাণতোষ নকরে। পানি সমস্যার স্থায়ী সমাধানে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। পাহাড়ী লোকজনদের সুপেয় পানির সমস্যা স্থায়ী সমাধান চেয়ে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক এন্ড্রো সলোমার বলেন, আমরা আদিবাসী সম্প্রদায়ের পানি সমস্যার কথা অনেকদিন ধরে বলে আসছি। কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে না। আমরা চাই পর্যটকদের জন্য সঠিক গাইডলাইন আর আদিবাসীদের সুপেয় পানির সুব্যবস্থা। আশা করি কর্তৃপক্ষ সমস্যা সমাধান করবেন। এদিকে, পর্যটকদের সচেতন করার পাশাপাশি পানির সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে সীমান্তবর্তী আদিবাসী গ্রাম সরেজমিনে পরিদর্শন করবেন বলে জানিয়েছেন তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান মানিক।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, আদিবাসীদের এই ইস্যুটি খুবই সংবেদনশীল। দ্রুতই এর সমাধান করা হবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স