সুনামগঞ্জ , সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ৩১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ফেব্রুয়ারিতে মহোৎসবের নির্বাচন হবে : প্রধান উপদেষ্টা এক ইউপি সদস্য ১৩ প্রকল্পের সভাপতি! জমে উঠেছে দিরাই বাজার মহাজন সমিতির নির্বাচন দুর্ঘটনায় জেলা প্রশাসনের দুই কর্মীর মৃত্যু, চালকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন তারেক রহমান দ্রুত দেশে ফিরবেন : লুৎফুজ্জামান বাবর দুর্গম হাওরের ২২ হাজার শিশুকে সাঁতার শিখাচ্ছে সরকার পরবর্তীতে আমরা প্রত্যেকেই টার্গেট হব : নাহিদ ইসলাম দায়িত্ব নিয়েই নেপালে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলেন সুশীলা কার্কি আন্তর্জাতিক নির্মল বায়ু দিবস পালিত কণ্ঠশিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই সড়ক দুর্ঘটনায় জেলা প্রশাসনের দুই কর্মী নিহত সুশীলা কার্কিকে নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা তাহিরপুরে বিএনপি নেতার ওপর হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন তাহিরপুরে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সম্মেলন সম্পন্ন আইসিইউ চালু হবে কবে? জাতীয় নির্বাচনের ‘টেস্ট’ ছিল ডাকসু, ভালোভাবে উত্তরণ : প্রেস সচিব শস্যবীমা : কৃষক ও অর্থনীতির নিরাপত্তা কুরবাননগর ইউনিয়ন বিএনপি’র সম্মেলন সম্পন্ন বিশ্বম্ভরপুরে বিএনপি নেতা অ্যাড. আব্দুল হকের গণসংযোগ নেই পোকামাকড়ের শঙ্কা, লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি ফলনের সম্ভাবনা
হাওরের শিশুদের সাঁতারে বাঁচার পাঠ

সরকারের উদ্যোগ প্রতিটি উপজেলায় বিস্তৃত করতে হবে

  • আপলোড সময় : ১৫-০৯-২০২৫ ০৮:৫৯:৪৪ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৫-০৯-২০২৫ ০৮:৫৯:৪৪ পূর্বাহ্ন
সরকারের উদ্যোগ প্রতিটি উপজেলায় বিস্তৃত করতে হবে
‘বর্ষায় নাও, হেমন্তে পাও’ - এই চিরায়ত প্রবাদ হাওরাঞ্চলের বাস্তব জীবনের প্রতিচ্ছবি। পানিবেষ্টিত এই ভৌগোলিক অঞ্চলে জীবিকা ও জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত জলকেন্দ্রিক। অথচ এখানেই পানিই সবচেয়ে বড় ভয়, কারণ প্রতিবছর অসংখ্য শিশু ডুবে মৃত্যুবরণ করছে। অকালেই ঝরে যাচ্ছে নিষ্পাপ প্রাণ, অশ্রুভেজা শোকের মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে প্রতিটি পরিবারে। এই প্রেক্ষাপটে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে হাওরের তিনটি উপজেলায় চালু হওয়া শিশু যতœ ও সাঁতার শিক্ষা কেন্দ্র নিঃসন্দেহে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বাঁশের মাচায় ২১ দিনের প্রশিক্ষণে শিশুরা শুধু সাঁতার শিখছে না, বরং শিখছে জীবন রক্ষার কৌশল, প্রাথমিক উদ্ধার দক্ষতা এবং দৈনন্দিন স্বাস্থ্যবিধি। একইসঙ্গে শিশু যতœ কেন্দ্রে প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা, গল্প-ছড়া, অভিনয়ের মাধ্যমে শৃঙ্খলা ও ব্যবহারিক দক্ষতার পাঠ তাদের পরবর্তী জীবনের ভিত্তি মজবুত করছে। এই প্রকল্পের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হলো- এটি শিশু মৃত্যুহার কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। ইতিমধ্যেই স্থানীয় অভিভাবকরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন, শিশুরাও আনন্দের সঙ্গে অংশ নিচ্ছে। মায়েরা যখন সংসারকাজে ব্যস্ত থাকেন, তখন শিশু যতœ কেন্দ্রে সন্তানরা সুরক্ষিত হাতে বেড়ে উঠছে। হাওরের বাস্তবতায় এটি এক অপরিহার্য সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা হয়ে উঠেছে। তবে প্রশ্ন থেকে যায়, কেন এখনো সুনামগঞ্জের মাত্র তিনটি উপজেলায় প্রকল্পটি সীমাবদ্ধ? যেখানে প্রতিবছর হাওরের প্রতিটি উপজেলায় ডুবে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। সুতরাং এই উদ্যোগকে সমগ্র হাওরাঞ্চলে প্রসারিত করা জরুরি। শুধু সুনামগঞ্জ নয়, দেশের অন্যান্য দুর্গম জলাভূমি ও চরাঞ্চলেও একই কার্যক্রম চালু করা প্রয়োজন। শিশুর নিরাপত্তা ও প্রারম্ভিক বিকাশ জাতীয় উন্নয়নের মূলভিত্তি। পানিতে ডুবে মৃত্যুর মতো প্রতিরোধযোগ্য বিপর্যয় কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সরকার, স্থানীয় প্রশাসন, উন্নয়ন সংস্থা এবং সমাজের সচেতন নাগরিকদের একযোগে কাজ করতে হবে যাতে কোনো শিশু আর পানিতে ডুবে অকালে প্রাণ না হারায়। হাওরের শিশুরা যদি সাঁতারের মতো মৌলিক জীবনদক্ষতায় দক্ষ হয়ে ওঠে, তবে তারা শুধু মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পাবে না, বরং আত্মবিশ্বাসী ও সক্ষম নাগরিক হিসেবেও গড়ে উঠবে। তাই আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই- এই প্রকল্পকে পরীক্ষামূলক নয়, বরং স্থায়ী কর্মসূচি হিসেবে প্রতিটি হাওর উপজেলায় বাস্তবায়ন করতে হবে। এটাই হোক হাওরের শিশুদের জন্য সত্যিকারের উন্নয়নের রূপকল্প।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স