‘কপি-পেস্ট’ সাংবাদিকদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে : প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান
- আপলোড সময় : ১১-০৯-২০২৫ ১১:৩৯:০৯ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ১১-০৯-২০২৫ ১১:৩৯:০৯ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল কর্তৃক আয়োজিত ‘গণমাধ্যমের অপসাংবাদিকতা প্রতিরোধ এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন’ বিষয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের উদ্যোগে এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার সকালে সুনামগঞ্জ সার্কিট হাউস মিলনায়তনে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার তোফায়েল আহাম্মেদ ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সমর কুমার পাল।
কর্মশালায় রিসোর্স পার্সন হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব মো. আব্দুস সবুর।
গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দৈনিক সুনামগঞ্জের ডাক সম্পাদক মো. শেরগুল আহমেদ, দৈনিক সুনামগঞ্জের খবর সম্পাদক পংকজ দে, প্রথম আলো স্টাফ রিপোর্টার খলিল রহমান প্রমুখ।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, সাংবাদিকতা পেশা অতি সহজ পেশা হিসাবে অনেকে বেছে নিয়েছেন। যথাযথ শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই, অভিজ্ঞতা নেই, ধৈর্য্য নেই, সীমাবদ্ধতা নেই সংবাদ সংগ্রহের। মোবাইল দিয়ে ছবি তোলার পর পোস্ট করার নাম এখন সাংবাদিকতা। সংবাদের সাথে সম্পৃক্ত নয় বা সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠান নয়, এমন প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীলদের ফোন দিয়ে তথ্য জানা বিষয় এখন হাস্যকর।
কর্মশালায় রিসোর্স পার্সন হিসাবে বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব মো. আব্দুস সবুর বলেন, সাংবাদিকতা পেশা অনেক উপরে। কিন্তু এটার সীমাবদ্ধতা আছে। তিনি বলেন, সাংবাদিকতা পেশায় অভিজ্ঞতা অর্জন একটি বিষয়। সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত হওয়ার আগে অভিজ্ঞতা অর্জন করা আসল কাজ। আইন, আচরণ, সংবাদ সংগ্রহের কৌশল প্রভৃতি জানার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
তিনি বলেন, এই পেশায় নীতি-নৈতিকতা ধরে রাখতে হবে। সংবাদ তৈরির পর ভুল করে ছাপা যাবে না। এতে জরিমানা ও দন্ড- আছে। তাই সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করতে হবে।
তিনি বলেন, আজকাল কপি পেস্ট সাংবাদিকের অভাব নেই। এদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সংবাদ কপি পেস্ট করা যাবে না। এই কপি পেস্টকে বলে অপসাংবাদিকতা।
তিনি একটি উদাহরণ দিয়ে বলেন, তারা তারা যুদ্ধ করে, উহারা উহারা হারিয়ে গেছে। এমন তথ্যে সংবাদ হতে পারে না। তিল কে তাল করে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করা যাবে না। এই জন্য প্রেস কাউন্সিলের দেওয়া বই পড়লে কিছুটা ধারণা পাবেন।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম বলেন, যিনি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করেন, তাকেই বলে সাংবাদিক। প্রত্যেক সাংবাদিক তার পেশাগত দায়িত্ব পালনে বিশ্বাসের যোগ্যতা থাকতে হবে। সকল প্রকার সংবাদের গোপনীয় রক্ষা করা উচিত।
তিনি বলেন, বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রকাশ থেকে বিরত থাকতে হবে সকল সাংবাদিকদের। একাধিকবার যাচাই-বাছাই করে সংবাদ তৈরি করতে হবে। তিনি আরও বলেন, সংবাদ লেখার অভিজ্ঞতা অর্জন না করে পত্রিকার আইডি কার্ড নিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করে একজন সাংবাদিক হয়ে যাওয়া সঠিক নয়। এসবের সাথে থাকতে হবে প্রতিষ্ঠানের নিয়োগপত্র। সংবাদ সংগ্রহ বিষয়ে একজন সাংবাদিকের সীমাবদ্ধতা কতটুকু তা জানা থাকতে হবে। অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। ধৈর্য্যশীল হতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল চায় সকল সাংবাদিককে নীতি নৈতিকতার আওতায় আনতে। যাতে তারা সাংবাদিকতার নীতিমালার মধ্যে থেকে সংবাদ সংগ্রহের কাজ করতে পারে। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের কল্যাণে এবং এই পেশার স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে ইতিমধ্যে আমরা অনেক কাজ শুরু করে দিয়েছি। এসব কাজের সফল বাস্তবায়নে আমাদের সহযোগিতা করতে হবে সকল সাংবাদিকদের।
কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, সাংবাদিকতা পেশায় বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ যারা প্রকাশ করা উচিত। ফেসবুক সাংবাদিকতায় যেমন খুশি লিখে পোস্ট করা সঠিক নয়। এটায় সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতা থাকে না। তিনি বলেন, যোগাযোগ মাধ্যমে সাংবাদিক নিয়ন্ত্রণ না থাকলে ঘরে ঘরে সাংবাদিক গড়ে উঠবে। এই মহান পেশা সঠিক সাংবাদিকতায় সাংবাদিকদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়া উচিত।
প্রশিক্ষণ কর্মশালা শেষে অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকদের মাঝে সনদ বিতরণ করেন প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ