হাওর রক্ষায় দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিন
- আপলোড সময় : ০৮-০৯-২০২৫ ০৮:৫৩:৪৫ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৮-০৯-২০২৫ ০৮:৫৩:৪৫ পূর্বাহ্ন

হাওর বাংলাদেশের প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্যের ভা-ার। দেশীয় মাছের প্রধান উৎসও এ হাওরাঞ্চল। অথচ দুঃখজনক হলেও সত্য, অবৈধ জাল ব্যবহার, অতিরিক্ত মাছ শিকার, বালাইনাশক ও রাসায়নিকের প্রভাবে এ সম্পদ প্রতিনিয়ত ধ্বংসের মুখে পড়ছে। গত শুক্রবার সুনামগঞ্জে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় মৎস্য ও প্রাণিস¤পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার যথার্থই বলেছেন- প্রকৃত মৎস্যজীবী কখনো দেশ ও প্রকৃতির ক্ষতি করে মাছ শিকার করতে পারেন না। সাময়িক লাভের জন্য অবৈধ চায়না দুয়ারি জাল ব্যবহার করে দীর্ঘমেয়াদে হাওরকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
উপদেষ্টার বক্তব্যে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়গুলো উঠে এসেছে তা হলো- এই জাল শুধু ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে জব্দ করলেই চলবে না; বরং এর আমদানি ও উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। দেশের ভেতরে যদি এমন জাল উৎপাদন হয় তবে সংশ্লিষ্ট কারখানার বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা করা জরুরি। একই সঙ্গে জেলেদের বিকল্প জীবিকা ও প্রণোদনা নিশ্চিত না করলে কোনো উদ্যোগ টেকসই হবে না। এজন্য নির্দিষ্ট মৌসুমে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং সেই সময় প্রণোদনা প্রদান অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে।
দেশীয় মাছ রক্ষায় অভয়াশ্রম গড়ে তোলা, কীটনাশক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা, হাওরে বাণিজ্যিক হাঁস চরানো বন্ধ করা - এসব পদক্ষেপ দ্রুত কার্যকর করা আবশ্যক। পাশাপাশি টাঙ্গুয়ার হাওরের মতো আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমিকে শুধুই পরিবেশগত সম্পদ হিসেবে নয়, বরং মাছের প্রজননক্ষেত্র হিসেবেও সুরক্ষার আওতায় আনতে হবে।
আমাদের নৌ-নদী, হাওর ও বিল শুধু প্রাকৃতিক স¤পদ নয়; এগুলো গ্রামীণ জীবিকা, খাদ্যনিরাপত্তা ও অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি। তাই এখানে অপরিকল্পিত বাঁধ, সড়ক বা স্থাপনা নির্মাণের নামে পরিবেশ ধ্বংস করা যাবে না। পলি অপসারণ, নাব্যতা ফিরিয়ে আনা, টেকসই কৃষি ব্যবস্থা চালু করা - সবকিছু সমন্বিতভাবে করতে হবে।
আমরা মনে করি, সরকারের উচ্চপর্যায়ের আন্তরিক পদক্ষেপ ও স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া হাওর রক্ষা সম্ভব নয়। মাছ শুধু আমাদের খাদ্য নয়, আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যেরও অংশ। হাওর রক্ষা মানে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের খাদ্য নিরাপত্তা রক্ষা। তাই এখনই দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ