খাসিয়ামারা নদীতে অবৈধ ড্রেজারের দৌরাত্ম্য
প্রশাসনের অভিযানে ৩টি ড্রেজার জব্দ, আটক ১
- আপলোড সময় : ২৬-০৮-২০২৫ ০৯:৩৫:১০ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৬-০৮-২০২৫ ০৯:৩৫:১০ পূর্বাহ্ন

মোহাম্মদ নূর ::
দোয়ারাবাজার উপজেলার খাসিয়ামারা নদী। একসময় এ নদীর বুকে নৌকার পাল উড়তো, মানুষের কোলাহলে মুখরিত থাকতো ঘাট। কিন্তু আজ নদীটি যেন এক আতঙ্কের নাম। অবৈধ ড্রেজার চালিয়ে তোলা হচ্ছে বালু, তীরবর্তী বাড়িঘর ভাঙনের মুখে, হুমকির মুখে কৃষিজমি। নদীর বুক চিরে চলছে কোটি টাকার বাণিজ্য, আর সেই শিকার হচ্ছেন নিরীহ গ্রামবাসী।
সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে হঠাৎ করেই নদীতে হাজির হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরূপ রতন সিংহ। তার নেতৃত্বে চলে অভিযানের কঠোর পদক্ষেপ। মুহূর্তেই থমকে যায় ড্রেজারের শব্দ, নদীর তীরে ভিড় জমায় শতাধিক মানুষ। কেউ হাততালি দেন, কেউ উল্লাসে চিৎকার করে ওঠেন- “ড্রেজার বন্ধ চাই।” অভিযানের সময় তিনটি ড্রেজার জব্দ ও একজনকে আটক করা হয়। তবে অনেকেই যন্ত্রপাতি ফেলে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যান।
অভিযানের এক পর্যায়ে ইজারাদারের প্রতিনিধি মোরশেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি হাইকোর্টের নির্দেশ নিয়ে এসেছি, ডিসি স্যারও অনুমতি দিয়েছেন। এতে আমার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু তার এ বক্তব্যে উত্তাল হয়ে ওঠে গ্রামবাসী। তারা ‘ভুয়া ভুয়া’ ¯ে¬াগান দিয়ে দাবি তোলেন- নদী থেকে অবৈধ ড্রেজার অবশ্যই সরাতে হবে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দোয়ারাবাজার থানার ওসি জাহিদ হাসান ফোর্সসহ উপস্থিত হন। এরপর ইউএনও গ্রামবাসীকে শান্ত করেন এবং আশ্বাস দেন- “এখন থেকে আর কোনো ড্রেজার চলবে না। রাবার ড্যাম রক্ষায় বাঁশের ব্যারিকেড দেওয়া হবে। অভিযান অব্যাহত থাকবে।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, ড্রেজার চালিয়ে নদীর তীর ভাঙনের মুখে পড়েছে তাদের বসতভিটা। গত কয়েক সপ্তাহেই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রতিবাদ করায় তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলাও দেওয়া হয়েছে। তাদের একটাই দাবি- নদীকে বাঁচানো হোক, অবৈধ ড্রেজার তুলে নেওয়া হোক।
এদিকে, খাসিয়ামারা নদীতে সোমবারের সেই অভিযান ছিল জনতার দীর্ঘদিনের দাবির প্রতিফলন। গ্রামবাসী আশায় বুক বাঁধছে, প্রশাসনের এই উদ্যোগ চলমান থাকলে হয়তো আবারো ফিরে আসবে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ, বাঁচবে ঘরবাড়ি আর জমিজমা।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ