সুনামগঞ্জ , শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫ , ৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার করলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা : অন্তর্বর্তী সরকার সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানকে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ নিখোঁজ সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের লাশ মিলল মেঘনায় আজ জেলা সিপিবি’র সম্মেলন এনএসআই সদস্য পরিচয়ে বিয়ে-প্রতারণা, তরুণ গ্রেপ্তার বালুর আগ্রাসনে ক্ষতিগ্রস্ত জমি, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট যৌথবাহিনীর অভিযানে রিভলবার উদ্ধার একটি পাথর সরালে জীবন ঝালাপালা করে দেব : ডিসি সারওয়ার আলম সীমান্তে ভারতীয় মোটরসাইকেল জব্দ মধ্যবাজারে ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ী আহত চারটি নৌ-অ্যাম্বুলেন্স অকেজো একদিনও সেবা পায়নি চার উপজেলার মানুষ সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক : ভেস্তে গেছে চার লেন প্রকল্প জামালগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের প্রতিবাদে মানববন্ধন ইরা-সিআরইএ প্রকল্পের ‘অভিযোজন এক্সপো’ সম্পন্ন কাজের খোঁজে গ্রামাঞ্চলের দিনমজুররা শহরমুখী প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই শিল্পপণ্য মেলার আয়োজন! লক্ষাধিক মানুষের সড়ক যেন ডোবা-নালা তাহিরপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২০ র‌্যাবের অভিযানে ভারতীয় ২৭২ বোতল মদ জব্দ যারা নির্বাচনের বিরোধিতা করছে তারা দেশের শত্রু : কয়ছর এম আহমদ

অকেজো নৌ-অ্যাম্বুলেন্স : হাওরবাসীর সঙ্গে নির্মম পরিহাস

  • আপলোড সময় : ২৩-০৮-২০২৫ ০৯:০৩:০৪ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৩-০৮-২০২৫ ০৯:০৩:০৪ পূর্বাহ্ন
অকেজো নৌ-অ্যাম্বুলেন্স : হাওরবাসীর সঙ্গে নির্মম পরিহাস
সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চল চারদিকে পানি বেষ্টিত দ্বীপ-গ্রামসমূহের সমষ্টি। বর্ষার দীর্ঘ মাসগুলোতে এসব এলাকায় সড়কপথ অচল হয়ে পড়ে। জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসা সেবা গ্রহণের একমাত্র ভরসা তখন জলপথ। এই বাস্তবতা বিবেচনায় সরকার প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, ধর্মপাশা ও শাল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চারটি আধুনিক নৌ-অ্যাম্বুলেন্স সরবরাহ করেছিল। উদ্দেশ্য ছিল- প্রত্যন্ত হাওরবাসীর জরুরি চিকিৎসা নিশ্চিত করা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, একদিনের জন্যও সেগুলো ব্যবহার হয়নি। সরকারি প্রকল্পের এই চরম ব্যর্থতা কেবল অর্থের অপচয় নয়, বরং হাওরাঞ্চলের অসহায় মানুষের সঙ্গে এক নির্মম পরিহাস। ২০১৩ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে সরবরাহকৃত নৌ-অ্যাম্বুলেন্সগুলো অযতœ-অবহেলায় পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে গেছে। যন্ত্রাংশ অকেজো, কোনোটি থানার সামনে, কোনোটি নদীতে কিংবা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে মরিচা পড়ে অচল অবস্থায়। চালক নিয়োগ হয়নি, জ্বালানি বরাদ্দ আসেনি, ফলে জনগণের জন্য বরাদ্দকৃত স¤পদ একেবারেই অচল পড়ে আছে। এমন প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রশাসনিক দায়িত্বহীনতার নজির সত্যিই বেদনাদায়ক। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তারা কখনো এসব নৌ-অ্যাম্বুলেন্স চোখেই দেখেননি; বরং অসুস্থ রোগীকে এখনও ভাড়া করা ছোট নৌকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাসপাতালে নিতে হয়। আর্থিকভাবে বিপুল ব্যয়ের পরও যখন মানুষের উপকারে আসে না, তখন এ ধরনের উদ্যোগ কেবল দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার প্রমাণ বহন করে। প্রশ্ন জাগে- চালক ও জ্বালানি বরাদ্দ নিশ্চিত না করেই কেন এত ব্যয়বহুল নৌ-অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হলো? কেন এর রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থার কোনো নিশ্চয়তা রাখা হলো না? এর দায় কি শুধু স্থানীয় প্রশাসনের, নাকি কেন্দ্রীয় পর্যায়ের সিদ্ধান্তহীনতারও? জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেন এমন অকার্যকর প্রকল্প গ্রহণ করা হবে, যার সুফল মানুষ পাবে না? এখনও সময় আছে। নৌ-অ্যাম্বুলেন্সগুলো যদি মেরামত করে চালু করা সম্ভব না হয়, তবে বিকল্পভাবে কম খরচে চলনসই ইঞ্জিনচালিত নৌকা স্বাস্থ্যসেবায় ব্যবহারযোগ্য করা যেতে পারে। একই সঙ্গে চালক নিয়োগ, জ্বালানি বরাদ্দ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট বাজেট নিশ্চিত করা জরুরি। অন্যথায় এ ধরনের প্রকল্প জনগণের আস্থাহীনতা আরও বাড়াবে। হাওরাঞ্চলের মানুষ রাষ্ট্রের নাগরিক, তাদের স্বাস্থ্যসেবার অধিকার সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত। আমরা এ অব্যবস্থাপনার দ্রুত প্রতিকার চাই। জনগণের ট্যাক্সের টাকা যেন প্রকৃতপক্ষে জনগণের কল্যাণেই ব্যয় হয় - এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স