কাজের খোঁজে গ্রামাঞ্চলের দিনমজুররা শহরমুখী
- আপলোড সময় : ২১-০৮-২০২৫ ০১:৩৮:৫৮ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২১-০৮-২০২৫ ০১:৩৮:৫৮ পূর্বাহ্ন

আকরাম উদ্দিন ::
ভোরের আলো ফোটার আগেই কাজের খোঁজে শহরের বিভিন্ন মোড়ে ভিড় জমান দিনমজুররা। কিন্তু সপ্তাহের বেশিরভাগ দিনই কাজ না পেয়ে তারা খালি হাতে ফিরেন বাড়ি। ফলে পরিবারের খরচ যোগান নিয়ে নানা সমস্যায় দিন কাটান।
একাধিক দিনমজুর জানান, আগে প্রতিদিন গড়ে ৬শ থেকে ৮শ টাকা মজুরি পেতেন। এখন কাজের সংকটের কারণে সপ্তাহে এক-দুদিনের বেশি কাজ পান না। তাছাড়া বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধিতে তাদের সংসার চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কৃষিকাজ ব্যাহত হওয়ায় গ্রামাঞ্চলের দিনমজুরেরাও শহরমুখী হচ্ছেন। ফলে কাজ না পাওয়া কঠিন সময় পার করছেন তারা।
মৌসুমি কর্মসংস্থানের ওপর নির্ভরশীল দিনমজুরদের জন্য সরকারিভাবে বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি না করলে তাদের জীবনযাপন আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।
বুধবার কথা হয় সদর উপজেলার কুরবাননগর ইউনিয়নের আলমপুর গ্রামের দিনমজুর আব্দুল মুসাব্বিরের সাথে। তিনি জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় দিনমজুরী করে যে টাকা পান তা দিয়ে সংসার খরচ পুষে না।
এ সময় লক্ষণশ্রী ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের মইনুল ইসলাম, মোহাম্মদ হায়াতুল ইসলাম, হবতপুর গ্রামের দিনমজুর জমির উদ্দিন ও আব্দুল মজিদ বলেন, প্রত্যেহ কাজ পাই না। ফলে দুঃখ-কষ্টে দিন কাটাই। সংসার খরচ নিয়ে মারাত্মক সমস্যায় আছি।
গৌরারং ইউনিয়নের জগাইরগাঁও গ্রামের দিনমজুর মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান জানান, আগে প্রতিদিন কাজ পেতাম। এখন বর্ষা মৌসুমে কাজ পাই না। মহাসমস্যায় আছি ৬ জনের সংসার নিয়ে। সরকারিভাবে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার দাবি আমাদের।
মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের ইছাগড়ি গ্রামের রঞ্জিত চন্দ্র দাস, রোসনা বেগম, উচারগাঁও গ্রামের অতুল দাস বলেন, আগে কাজ পেতাম। এখন এলাকায় কাজ নেই। জমি চাষে ও ধান কাটা বা মাড়াইয়ে আমাদের প্রয়োজন হয় না। তাই বছরের বেশিরভাগ দিন বেকার থাকি।
মোহনপুর ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামের কল্পনা বেগম বলেন, আগে মাটির কাজ করে সংসার চালাইতাম। এখন সব মেশিনে বা গাড়ি দিয়ে হয়। তাছাড়া বেশিরভাগ মানুষের পাকা ভবন। তাদের মাটির কাজ হয় না। সংসারের খরচ যোগান নিয়ে বিপদে আছি।
সুনামগঞ্জ শহরের হাছননগরের আছিয়া বেগম বলেন, স্বামীর সংসার চালাতে আমার। সন্তানদের নিয়ে খুবই অসহায়। শরীর মানে না। তবুও কাজ পেলে ছাড়ি না। কাজ না করলে খাবো কি।
সুনামগঞ্জ শহরের নবীনগর এলাকায় বাচ্চু মিয়া একটি ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে থাকেন। তিনি দিনমজুরের কাজ করছেন। দৈনন্দিন কাজ না পাওয়ায় সংসার খরচ নিয়ে দারুণ সমস্যায় আছেন।
তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের দিনমজুর টুনু পাল বলেন, নিজ গ্রাম বা আশেপাশের গ্রামে কাজ না পেয়ে সুনামগঞ্জ শহরে এসে কয়েক বছর যাবত ভাড়া বাসায় বসবাস করছি। খোঁজে খোঁজে কাম কাজ করে কোনো মতে পরিবার নিয়ে বেঁচে আছি।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ