হাওর অঞ্চলের ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন
- আপলোড সময় : ১৮-০৮-২০২৫ ০৮:৩২:৪৩ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৮-০৮-২০২৫ ০৮:৩২:৪৩ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশের এক বিস্ময়কর ভূপ্রকৃতি হাওরাঞ্চল। এখানকার সুদীর্ঘ জলাভূমি, বিস্তৃত নীল আকাশ আর অনন্য জীবনযাপনের পদ্ধতি যুগের পর যুগ ধরে এক নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির ধারা নির্মাণ করেছে। এই অঞ্চলের লোকগীতি, ধামাইল, মরমী গান, কিংবা গ্রামীণ কথ্যভাষা শুধু বিনোদনের উপকরণ নয়, এগুলো আমাদের সামগ্রিক জাতিসত্তার অবিচ্ছেদ্য অংশ। গত শনিবার সুনামগঞ্জে অনুষ্ঠিত ‘হাওর এলাকার ভাষা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্য অন্বেষণ’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা যথার্থভাবেই যে বিষয়টি তুলে ধরেছেন, তা হলো- এই অনন্য ঐতিহ্য এখন সংকটের মুখে।
আধুনিক প্রযুক্তি এবং গ্লোবাল সংস্কৃতির প্রভাবে আঞ্চলিক ভাষা ও সংস্কৃতি বিপন্ন হয়ে পড়ছে। নতুন প্রজন্মের অনেকেই নিজেদের ঐতিহ্য সম্পর্কে জানে না, কিংবা জানতে আগ্রহও দেখায় না। অথচ এই ভাষা ও সংস্কৃতিই তাদের শেকড়ের পরিচয় দেয়, নিজস্ব পরিচয়ের বোধ জাগিয়ে তোলে। ভাষা ও সংস্কৃতিকে যে জাতি আঁকড়ে ধরে না, তার অস্তিত্বই একসময় হারিয়ে যেতে বাধ্য। এক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ সমন্বিতভাবে গ্রহণ করতে হবে। আমরা মনে করি, প্রথমত আঞ্চলিক ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণার সুযোগ বাড়াতে হবে। স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হাওরাঞ্চলের লোকসংস্কৃতি সংক্রান্ত পাঠ অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। দ্বিতীয়ত, সাংস্কৃতিক উৎসব ও গণমাধ্যমে নিয়মিতভাবে হাওরের গান, নৃত্য, লোককথা প্রচারের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তৃতীয়ত, শিশু-কিশোরদের মধ্যে এই ঐতিহ্যের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টির জন্য লাইব্রেরি, নাট্যচক্র ও সাংস্কৃতিক ক্লাবগুলোকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
আমাদের মনে রাখতে হবে, হাওরাঞ্চলের সংস্কৃতিগত বৈচিত্র্য শুধু স্থানীয় জনগোষ্ঠীর নয়, সারাদেশের জন্যই একটি ঐশ্বর্য্য। এই ঐতিহ্য হারালে সেটি আর ফিরে পাওয়া যাবে না। তাই এখনই সময় দায়িত্বশীলতার সঙ্গে এগিয়ে আসার, ভাষা ও সংস্কৃতির এই স¤পদকে পরম মমতায় সংরক্ষণের।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ