“আমি আগেই দুই ছেলেকে হারিয়েছি, আর পারবো না হারাতে। দয়া করে কেউ আমার শেষ ছেলেটাকে বাঁচিয়ে দিন।”
মো. বায়েজীদ বিন ওয়াহিদ ::
সিলেটের ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের এক কোণে শুয়ে আছে মাত্র ছয় মাস বয়সী একটি শিশু। সাদা বিছানায় অসহায়ভাবে শুয়ে থাকা এই শিশুটি হয়তো বুঝতেই পারছে না, জীবন তার সাথে কত বড় নিষ্ঠুর খেলা খেলছে। মাথা অস্বাভাবিক বড় হয়ে গেছে। প্রতিটি শ্বাসে যেন লড়ছে মৃত্যুর সঙ্গে।
শিশুটি জামালগঞ্জ উপজেলার হরিহরপুর গ্রামের অসহায় দর্জি পিতা লিটন সূত্রধরের একমাত্র সন্তান। এই শিশুটি অসহায় লিটন সূত্রধরের শেষ আশা, শেষ স্বপ্ন, শেষ অবলম্বন।
২০২২ সালের শেষ দিকে বিয়ে করেন লিটন সূত্রধর। বিয়ের প্রায় ২ বছর পর প্রথম সন্তান পৃথিবীতে আসার খবরে আনন্দে দিন কাটছে লিটন দম্পতির। একসাথে জমজ ৩ ছেলে সন্তান হওয়ার খবরে লিটন দম্পতির পরিবারে খুশির আমেজ দ্বিগুণ হয়েছে। আনন্দ যেন আর ফুরায় না। সময় ঘনিয়ে কাঙ্খিত সময়ে ৩ ছেলে জমজ সন্তান জন্ম দিলেন লিটনের স্ত্রী। বাবা-মায়ের জীবনে সেটি ছিল আশীর্বাদের মতো আনন্দঘন মুহূর্ত। কিন্তু জন্মের পরপরই সন্তানদের শারীরিক অসুস্থতায় সেই আনন্দ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। মুহূর্তেই সকল আশা আর স্বপ্ন ভেঙে যায় লিটন দম্পতির। শুরু হলো সন্তান বাঁচানোর এক কঠিন যুদ্ধ। জন্মের মাত্র এক সপ্তাহের মাথায় একে একে দুই সন্তানকে হারাতে হয় এই দম্পতিকে। তখন মৃত্যুর আগে ওই দুই সন্তানকে বাঁচাতে সহায় সম্বল সব বিক্রি ও ধারদেনা করে প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ করেন লিটন দম্পতি। কিন্তু তবুও বাঁচাতে পারেননি তাদের। শোক আর অশ্রু নিয়ে কোনোরকমে আগলে রেখেছিলেন শেষ অবলম্বনটিকে।
কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে ছয় মাস বয়সী শেষ সন্তানটিও এখন মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুর মাথায় পানি জমেছে। দিন-দিন মাথা বড় হচ্ছে। যাকে হাইড্রোসেফালাস রোগ বলে। যা দ্রুত অস্ত্রোপচার না করলে তার জীবন রক্ষা অসম্ভব হয়ে পড়বে। অপারেশনের জন্য প্রয়োজন প্রায় ১ লাখ টাকা। কিন্তু দিন আনা-দিন খাওয়া দর্জি পিতা লিটনের পক্ষে এ টাকা জোগাড় করা স্বপ্নেরও বাইরে। কারণ মৃত যাওয়া দুই সন্তানের চিকিৎসা ব্যায়ে আগেই সব খরচ করে নিঃস্ব হয়েছে লিটন দম্পতি।
চোখ ভরা পানি আর কাঁপা কণ্ঠে লিটন সূত্রধর বলেন, “আমি আগেই দুই ছেলেকে হারিয়েছি, আর পারবো না হারাতে। দয়া করে কেউ আমার শেষ ছেলেটাকে বাঁচিয়ে দিন।” এখন সমাজের মানবিক মানুষের সাহায্যের হাতই হতে পারে আমার ছেলের জীবন বাঁচানোর একমাত্র ভরসা। একটু সহানুভূতি, সামান্য সাহায্য হয়তো ফিরিয়ে দিতে পারে একটি মায়ের মুখের হাসি, একটি পিতার বেঁচে থাকার আশা।
সহযোগিতা পাঠানোর ঠিকানা ও যোগাযোগ: লিটন সূত্রধর - মোবাইল নম্বর - ০১৭৭৪২৫২৪০৯ বর্তমান অবস্থান: সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
অসহায় এক পিতার আর্তনাদ “আমার সন্তানটাকে বাঁচান”
- আপলোড সময় : ১৪-০৮-২০২৫ ০৭:৩১:০৩ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৪-০৮-২০২৫ ০৭:৩৯:৪৫ পূর্বাহ্ন

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ