নৌকা বাইচ : ঐতিহ্যের ধারা বজায় থাকুক
- আপলোড সময় : ১০-০৮-২০২৫ ০৮:০০:০৭ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১০-০৮-২০২৫ ০৮:০০:০৭ পূর্বাহ্ন

বাংলার নদী ও নৌকা শুধু পরিবহনের মাধ্যম নয়, আমাদের সংস্কৃতি ও আবেগের অংশ। বর্ষার জলঢেউ, বৈঠার ছন্দ, বাঁশির সুর - এ সবই গ্রামীণ জীবনের অনন্য রঙ। কিন্তু আধুনিকতার ঢেউ, নদীর দখল-দূষণ এবং বিনোদনের শহুরে বিকল্পগুলো গ্রামবাংলার এই চিরচেনা দৃশ্যকে ক্রমেই হারিয়ে দিচ্ছে।
এই প্রেক্ষাপটে দিরাই উপজেলার শ্যামারচরে অনুষ্ঠিত বর্ণাঢ্য নৌকা বাইচ আয়োজন নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এই আয়োজন শুধু একটি খেলাধুলার ইভেন্ট নয়, বরং হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে পুনর্জাগরণের এক প্রয়াস। আকাশে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, মেঘের ছায়া, আর তবুও হাজারো মানুষের ঢল - এ দৃশ্য প্রমাণ করে, এই ঐতিহ্য এখনও মানুষের মনে গভীরভাবে গেঁথে আছে।
নৌকা বাইচ শুধু বিনোদন নয়; এটি দলগত সমন্বয়, শৃঙ্খলা, অধ্যবসায় ও প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবের প্রতীক। একইসাথে এটি একটি সামাজিক বন্ধন, যেখানে গ্রাম-শহরের ভেদাভেদ ভুলে মানুষ একসাথে আনন্দে মেতে ওঠে। এমন আয়োজন যুব সমাজকে মাদক ও অবক্ষয় থেকে দূরে রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে, পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতি ও পর্যটনেও নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে পারে। তবে এই উদ্যোগকে ধারাবাহিক করতে হবে। বছরে একদিন নয়, বরং মৌসুমভিত্তিক নৌকা বাইচ আয়োজন, নদী রক্ষার জন্য স্থানীয় ও সরকারি উদ্যোগ এবং গ্রামীণ ক্রীড়াকে উৎসাহিত করার নীতিমালা প্রণয়ন জরুরি।
আমরা বিশ্বাস করি, শ্যামারচরের মতো প্রতিটি নদীপাড়ে যদি বৈঠার সুর আবারও বেজে ওঠে, তবে শুধু একটি খেলা নয়, বরং এক টুকরো হারানো বাংলা ফিরে আসবে আমাদের জীবনে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ