স্টাফ রিপোর্টার ::
মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ হয়ে বুধবার দুপুরে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হয়েছিলেন সুনামগঞ্জের স্কুল শিক্ষক পিতার সন্তান ¯স্নেহা চক্রবর্তী (১৭)। সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে হাসি মুখে ফিরছিলেন বাড়ি। তার স্বপ্ন ছিল একজন সফল কম্পিউটার বিজ্ঞানী হয়ে রাষ্ট্রের কল্যাণে কাজ করার। স্বপ্নের আকাশে উড়তে উড়তে বাড়ি ফিরছিলেন একটি সিএনজি চালিত অটোরিকসায়। কিন্তু ঘাতক একটি বাস তাকে বহনকারী সিএনজিকে চাপা দিলে চিরদিনের মতো থেমে যায় স্নেহার স্বপ্নের চাকা। বুধবার দুপুরে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মারা যান স্নেহাসহ আরো ২জন। এ ঘটনায় স্নেহার পরিবারে শোকের ছায়া বইছে। কান্নার রোল তুলেছেন স্বজনরা। প্রতিবেশীরা সান্ত¦না দিতে এসে নিজেরাই ভিজাচ্ছেন চোখ। সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক বিপুল চক্রবর্তীর ১ ছেলে ও ১ মেয়ের মধ্যে স্নেহা বড় সন্তান। ছোটবেলা থেকেই খুবই মেধাবী ছিলেন। এই মেধার ছাপ রেখেছেন প্রতিটি পরীক্ষায়। এবার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায়ও মেধা তালিকায় ছিলেন তিনি। বুধবার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হয়ে শান্তিগঞ্জস্থ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের অস্থায়ী ক্যাম্পাস থেকে সুনামগঞ্জ শহরের বাসায় ফিরছিলেন স্নেহা। বাহাদুরপুর নামক স্থানে আসার পর তাকে বহনকারী সিএনজির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই স্নেহা চক্রবর্তী, সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শহরের আরপিননগর এলাকার বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে আফসানা জাহান খুশি ও শহরের আলীপাড়ার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম মারা যান। তবে দুই মেধাবী ছাত্রীর মৃত্যুতে শোকে কাতর হয়ে পড়েছেন স্বজনরা। স্নেহার মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান স্বজনরা। তখন মা, বাবা, ভাই ও স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। লাশ জড়িয়ে ধরে কাদছিলেন বাবা ও মা। প্রতিবেশীরা সান্ত¦না দিতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন। স্নেহার চাচা মিন্টু চক্রবর্তী জানান, আমাদের পরিবারের সন্তান ভালো বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় আমরা আনন্দিত ছিলাম। আমাদের বিশ্বাস ছিল সে অনেক দূর যাবে। কিন্তু একটি দুর্ঘটনায় আমাদের আশার বাতি নিভিয়ে গেছে। এই শোক তার মা বাবা ও আমরা কিভাবে বইবো। স্নেহা চক্রবর্তীর বন্ধু ঝুমা দেব বলেন, স্নেহা লেখাপড়ায় ভালো ছিল। সংগীতেও ভালো ছিল। আমরা এক সঙ্গে গান শিখেছি। তার মতো ভালো মানুষ হয় না। তার এমন মৃত্যু আমাকে মর্মাহত করেছে। এদিকে নিহত স্নেহা চক্রবর্তীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. নিজাম উদ্দিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. সারফুদ্দিন সংবাদপত্রে পাঠানো শোকবার্তায় জানান, এই মেধাবী ছাত্রীর চলে যাওয়া অপূরণীয় ক্ষতির। একটি দুর্ঘটনায় স্বপ্ন ও সম্ভাবনা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে গেল। আমরা পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, মেয়েটি আজ মাত্র ভর্তি হয়ে বাসায় যাচ্ছিল। মাঝপথেই সে দুর্ঘটনায় মারা গেলো। একজন অভিভাবক হিসেবে আমরা খুবই মর্মাহত।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে বাড়ি ফেরা হলো না স্নেহা'র
- আপলোড সময় : ০৭-০৮-২০২৫ ০৭:৩৪:২৮ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৭-০৮-২০২৫ ০৭:৫৯:২৫ পূর্বাহ্ন

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ