সুনামগঞ্জ , রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫ , ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যে ছেলেটি ‘মানুষ’ শব্দটিকে অর্থপূর্ণ করে তুলেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘মাঠের কথা’ সমাবেশে পদবঞ্চিত নেতাদের বিপুল উপস্থিতি জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ সদর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গৃহহীনদের মাঝে ঢেউ টিন বিতরণ বিদ্যালয়ের মাঠে নির্মাণসামগ্রী রাখতে উঠেপড়ে লেগেছে ঠিকাদারের লোকজন তাহিরপুর সীমান্তে ৬ বাংলাদেশি আটক আফটার স্কুল মাকতাবে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শক্তি দেশে নানাভাবে প্রবেশ করার চেষ্টা করছে : আখতার হোসেন রাজা যায় রাজা আসে কিন্তু সুনামগঞ্জবাসীর ভাগ্য পরিবর্তন হয় না : হাসনাত আবদুল্লাহ মুজিববাদ বাংলাদেশে চলবে না : নাহিদ ইসলাম এনসিপি’র পদযাত্রা ও পথসভা সুনামগঞ্জকে মডেল জেলায় উন্নীত করা হবে কোটি টাকার ভারতীয় শাড়ি-লেহেঙ্গা জব্দ মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি : নিহত বেড়ে ৩৩, হাসপাতালে ৫০ জন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক থাকছে না সংশোধিত অধ্যাদেশ জারি : সরকারি কর্মচারীরা আন্দোলন করলে বাধ্যতামূলক অবসর শান্তিগঞ্জে ইনসেপশন সভা অনুষ্ঠিত মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে নিহতদের স্মরণে প্রার্থনা সাচনাবাজারে নতুন রাস্তা নির্মাণের দাবি আগামীর স্বপ্ন, প্রত্যয় ও পরিবর্তনের বার্তা দিবেন নেতৃবৃন্দ সুনামগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রা শুক্রবার, লক্ষ্য ১৫ হাজার মানুষের সমাবেশ ঘটানো

লোককবিদের স্মৃতিচিহ্ন রক্ষায় উদ্যোগী হতে হবে

  • আপলোড সময় : ২৭-০৭-২০২৫ ০৮:৫৫:২৩ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৭-০৭-২০২৫ ০৮:৫৫:২৩ পূর্বাহ্ন
লোককবিদের স্মৃতিচিহ্ন রক্ষায় উদ্যোগী হতে হবে
‘লোকে বলে বলেরে, ঘরবাড়ি ভালা না আমার’ - অমর মরমি কবি দেওয়ান হাসন রাজার এই আত্মবিন্যস্ত গানের পঙক্তির মতোই আজ সত্যি হয়ে উঠেছে তাঁর শূন্যতাময় পৈতৃক জমিদার বাড়ির অবস্থা। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা গ্রামে অবস্থিত এই প্রভাবশালী জমিদার পরিবারের ঐতিহাসিক স্মৃতিচিহ্ন এখন ধ্বংসের মুখে। বাংলা সাহিত্যে এবং আধ্যাত্মিক চর্চায় হাসন রাজার অবদান অবিস্মরণীয়। শুধুই একজন জমিদার নয়, তিনি ছিলেন বাউল-ভক্ত, আধ্যাত্মিক সাধক, মরমী কবি এবং গণমানুষের ভাবজগতের ভাষ্যকার। অথচ তাঁর জীবনঘনিষ্ঠ স্মৃতি, তাঁর বসতভিটা আজ পড়ে আছে অবহেলায়, অযতেœ - একটি লতাগুল্মে ঢাকা ধ্বংসপ্রায় ভবন, দরজা-জানালাবিহীন দুটি কক্ষ, একটি দীঘি ও পারিবারিক কবরস্থান - এসবই দাঁড়িয়ে আছে এক করুণ অপেক্ষায়। এ দুঃখ শুধু একটি বাড়ির নয়, এটি আমাদের সাংস্কৃতিক চেতনার ক্ষয়িষ্ণু দৃষ্টান্ত। শুধু হাসন রাজাই নন, এই হাওর অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে আছেন বহু মরমী সাধক, বাউল, বৈষ্ণব কবি ও সুফি কবিদের পদচিহ্ন - যাদের গানে, সাধনায় গড়ে উঠেছিল লোকধর্ম, সহনশীলতা ও মানবিকতার ঐক্যসূত্র। কিন্তু হতাশার বিষয়, এই ইতিহাস সংরক্ষণে নেই সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ, নেই সংস্কৃতিমনা নেতৃত্বের আন্তরিকতা। বিশ্বনাথের ইউএনও সুনন্দা রায় জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসনের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হলেও উত্তরাধিকারীদের অভ্যন্তরীণ জটিলতা এবং অনাগ্রহের কারণে অগ্রগতি হয়নি। প্রশ্ন হচ্ছে - একটি জাতির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য কি শুধুই ব্যক্তিগত মালিকানার দ্বারস্থ থাকবে? রাষ্ট্রের কি কোনো দায় নেই এই মহামূল্যবান স্মৃতিচিহ্নগুলো রক্ষা করার? আমরা দাবি জানাই, হাসন রাজার রামপাশার পৈতৃক বাড়ি দ্রুত সংস্কার ও সংরক্ষণের জন্য জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনায় এটি সংরক্ষণ করে একটি লোকসংগীত গবেষণা কেন্দ্র, মরমি সংগ্রহশালা বা আধ্যাত্মিক সাংস্কৃতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। সুনামগঞ্জ ও সিলেট অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে থাকা মরমি কবিদের স্মৃতিচিহ্ন যেমন রাধারমণ দত্ত, দুর্বিন শাহ, শাহ আবদুল করিম, সৈয়দ শাহনূরদের ঘর-বসতিও একইভাবে সংরক্ষণযোগ্য। বাংলার লোকজ ইতিহাস কেবল বইয়ের পাতায় নয়, জড়িত রয়েছে জীবন্ত স্থাপনা, পদচিহ্ন ও ঐতিহ্যে। আজ যদি আমরা তা হারিয়ে ফেলি, কাল আর শুধুই ফাঁকা গান গাইতে হবে- ‘ঘরবাড়ি ভালা না আমার...”। এই দেশ, এই মাটি, এই গান - সবই আমাদের। দায়িত্বটাও আমাদেরই।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
যে ছেলেটি ‘মানুষ’ শব্দটিকে অর্থপূর্ণ করে তুলেছে

যে ছেলেটি ‘মানুষ’ শব্দটিকে অর্থপূর্ণ করে তুলেছে