ভাড়াটিয়াদের আটকে রাখেন বাড়িওয়ালা, উদ্ধার করলো পুলিশ
- আপলোড সময় : ২০-০৭-২০২৫ ০৪:১৫:২৩ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২০-০৭-২০২৫ ০৪:১৫:২৩ পূর্বাহ্ন

শহীদনূর আহমেদ ::
বাসা ভাড়ার জন্য ভাড়াটিয়াকে তালাবদ্ধ রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বড়পাড়া এলাকায় বাসা ভাড়া দিতে বিলম্ব হওয়ায় ৬ মাসের শিশুসহ ভাড়াটিয়া স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানদের তালাবদ্ধ করে আটকে রাখেন বাড়ির মালিক। অবরুদ্ধ থাকার কয়েক ঘণ্টা পর ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে শিশুসহ ভাড়াটিয়াদের উদ্ধার করেন সদর থানার টহলরত পুলিশ।
বাসার মালিকের এমন আচরণে ক্ষোভ জানিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। এমন গর্হিত কাজ করায় বাসার মালিককে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান এলাকাবাসী। অভিযুক্ত বাসা মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানাযায়, জামালগঞ্জ উপজেলার চেলাইয়া মামদপুর এলাকার বাসিন্দা ইকবাল হোসেন পেশায় একজন অটোরিকসা চালক। ৬ মাসের শিশু সন্তানসহ দুই ছেলে ও দুই মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে গত ৭ মাস ধরে পৌর শহরের পশ্চিম তেঘরিয়া বড়পাড়া এলাকায় মাসিক ৫ হাজার টাকা হারে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছেন। বাসা ভাড়া নেয়া পর থেকে নিয়মিত বাসাভাড়া পরিশোধ করলেও আর্থিক সংকটের কারণে গত জুন মাসের বাসা পরিশোধ করতে পারেননি ইকবাল হোসেন। সময়মতো বাসা ভাড়া না দেয়ায় ভাড়াটিয়া ইকবাল হোসেনের সাথে অসদাচারণ করেন বাসার মালিক মতিউর রহমান। নির্ধারিত সময়ে ভাড়া দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় শনিবার দুপুরে ইকবাল হোসেনের ৬ স্ত্রী সন্তানসহ পরিবারের ৬ সদস্যকে ঘরে আটক রেখে তালা দিয়ে অন্যত্র চলে যান বাড়ির মালিক মতিউর। নিরুপায় হয়ে উদ্ধারের জন্য ৯৯৯ এ ফোন করেন অটোরিকশা চালক ইকবাল। ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয়দের সহযোগিতায় শিশুসহ ভাড়াটিয়াদের উদ্ধার করেন পুলিশের টহলদল।
ভুক্তভোগী ভাড়াটিয়া ইকবাল হোসেন বলেন, গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে বাসা ভাড়া নিয়ে রয়েছি। কখনো বাসাভাড়া বাকি রাখিনি। কিছুদিন যাবৎ সমস্যায় রয়েছি। তাই গেল মাসের ভাড়া দিতে দেরি হয়েছে। বাসার মালিক টাকার জন্য প্রতিদিন অসদাচারণ করেন। টাকা দিতে কয়েকটা দিন সময় লাগবে জানালে আজ দুপুরে তিনি এসে ঘরের দরজায় তালা দিয়ে রাখেন। ঘরে আমার ৬ মাসের শিশু সন্তানসহ আরও তিনটি সন্তান রয়েছে। তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ঘরে আটকা ছিলাম। বাধ্য হয়ে ৯৯৯-এ ফোন করি। পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে। আমি গরিব মানুষ হতে পারি কারো হক মেরে খাবো না। বাসার মালিক যে আচরণ করলেন এতে খুব কষ্ট পেয়েছি।
বাসার মালিকের এমন কা-ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এমন গর্হিত কাজকে চূড়ান্ত মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে জানিয়েছেন তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ছোট ছোট শিশু সন্তানসহ ভাড়াটিয়াদের তালাবদ্ধ করে রাখা চরম অমানবিক। আমাদের এলাকায় এমন ঘটনা আর ঘটেনি।
ভাড়াটিয়াদের সাথে বাসার মালিকরা যাতে ভবিষ্যতে এমন আচরণ না করতে পারেন এর জন্য অভিযুক্ত বাসা মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে দাবি জানিয়ে রাব্বি নামের স্থানীয় এক যুবক বলেন, এটি চূড়ান্ত মানবাধিকার লঙ্ঘন। ভাড়াটিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
এদিকে নিজের অপরাধ স্বীকার করে বাসার মালিক মতিউর রহমান বলেন, আমি না বুঝে এমনটা করেছি। তবে ভাড়াটিয়া তার সাথে দুর্ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার এএসআই গিয়াস উদ্দিন বলেন, ৯৯৯- এ ফোন পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ভাড়াটিয়াদের উদ্ধার করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে বাসার মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে অভিযোগ পেলে জড়িত ব্যক্তিকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে জানান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ