সুনামগঞ্জ , রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫ , ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নৈতিক শিক্ষা-ভালো মানুষ হলেই দেশ উপকৃত হবে : সেনাপ্রধান জাতিসংঘের মানবাধিকার মিশন কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়নে হাতিয়ার হবে না সীমান্তে জব্দকৃত ৯০টি ভারতীয় গরু গায়েব দোয়ারাবাজারে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১০ ভাড়াটিয়াদের আটকে রাখেন বাড়িওয়ালা, উদ্ধার করলো পুলিশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের বিশাল সমাবেশ অন্তর্বর্তী সরকার কি আদৌ নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে, প্রশ্ন তারেক রহমানের সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে তোলা ১০ দোকান উচ্ছেদ মুখ থুবড়ে পড়েছে ছাতক স্লিপার কারখানা নারীরা এগিয়ে গেলে দেশ এগিয়ে যাবে : জেলা প্রশাসক নির্বাচন বানচালের চেষ্টা প্রতিহত করা হবে : আনিসুল হক জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে প্রতীকী ম্যারাথন পার্লামেন্ট হিল অটোয়া: সুখেন্দু সেন টাঙ্গুয়ার হাওরে ভাসমান বাজার উদ্বোধন গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনী আত্মরক্ষার্থে বলপ্রয়োগে বাধ্য হয় : আইএসপিআর মসজিদে ঢুকে নামাজরত ভাইকে হত্যা চৌধুরী মনসুর আহমদ স্মরণে শোকসভা, তিনি মানবিক গুণাবলিতে পরিপূর্ণ মানুষ ছিলেন ষড়যন্ত্র রুখতে মাঠে থাকবে যুবদল টাঙ্গুয়ার হাওর নিয়ে ফেসবুকে বিরূপ ভিডিও পোস্ট, প্রতিবাদে থানায় জিডি দোয়ারাবাজারে গ্রামীণ রাস্তা পাকাকরণের দাবি
পুরোনো ব্যবস্থাপত্রে বাংলাদেশ আর চলবে না

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের বিশাল সমাবেশ

  • আপলোড সময় : ২০-০৭-২০২৫ ০৪:১৩:৩৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২০-০৭-২০২৫ ০৪:১৩:৩৬ পূর্বাহ্ন
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের বিশাল সমাবেশ
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক :: ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে এক লড়াইয়ের পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে আরেক লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, পুরোনো ব্যবস্থাপত্রে বাংলাদেশ আর চলবে না। শনিবার (১৯ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের জাতীয় সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান এ কথা বলেন। জামায়াত আমির বলেন, যারা বস্তাপঁচা ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশকে নিতে চান, তাদের আমরা বলি, জুলাইযুদ্ধ করে যারা জীবন দিয়েছে, আগে তাদের জীবনটা ফেরত এনে দেন। যদি শক্তি থাকে ফেরত এনে দেন। আপনারা পারবেন না। যেহেতু পারবেন না, কাজেই নতুন ব্যবস্থায় নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে ইনশাল্লাহ। এসময় তিনি বলেন, আগামীর বাংলাদেশটা কেমন হবে? আমি বলি আরেকটা লড়াই হবে ইনশাল্লাহ। একটা লড়াই হয়েছে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে, আরেকটা লড়াই হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ইনশাআল্লাহ। এই দুর্নীতির মূলোৎপাটন করার জন্য যা দরকার, আমরা তারুণ্য এবং যৌবনের শক্তিকে একত্রিত করে সেই লড়াইয়েও জিতব ইনশাল্লাহ। বক্তব্যের শুরুতে জামায়াতের আমির বলেন, যাদের ত্যাগ এবং কুরবানির বিনিময়ে, স্বৈরাচারের কঠিন অন্ধকার যুগের যাঁতাতলে পিষ্ঠ হয়ে যারা তিলে তিলে দুনিয়া থেকে নির্যাতিত হয়ে বিদায় নিয়েছেন, অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিদায় নিয়েছেন, যারা লড়াই করে আহত হয়েছেন, পঙ্গুত্ববরণ করেছেন; আমরা তাদের সবার কাছে গভীরভাবে ঋণী। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অস্তিত্ব যতদিন থাকবে, আল্লাহ যেন তাদের ঋণ পরিশোধ করার শক্তিটাও ততদিন আমাদের দান করেন। শহীদ আবু সাঈদরা যদি বুক পেতে না দাঁড়াতো, এ জাতির মুক্তির জন্য যদি বুকে গুলি লুফে না নিত, হয়তো আজকের এই বাংলাদেশটা আমরা দেখতাম না। ইতোমধ্যে হয়তো আরও অনেক মানুষের জীবন ফ্যাসিবাদীদের হাতে চলে যেত। ২৪-এ জীবনবাজি রেখে যুদ্ধটা যদি না হতো তাহলে আজকে যারা বিভিন্ন ধরনের কথা এবং দাবি-দাওয়া পেশ করছেন, তারা তখন কোথায় থাকতেন? জামায়াতের আমির বলেন, যাদের ত্যাগের বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালার এই নেয়ামত পাওয়া তাদের যেন অবজ্ঞা এবং অবহেলা না করি। শিশু বলে তাদের যেন তুচ্ছতাচ্ছিল্য না করি। অহংকারে অন্য দলকে যেন তুচ্ছতাচ্ছিল্য না করি। অরাজনৈতিক ভাষায় আমরা যেন কথা না বলি। যদি এগুলো আমরা পরিহার করতে না পারি, তাহলে বুঝতে হবে যারা পারবেন, ফ্যাসিবাদের রোগ তাদের মধ্যে নতুন করে বাসা বেঁধেছে। রাজনৈতিক শিষ্টাচার রক্ষা করে জাতীয় ঐক্যের বীজতলাটা আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে তৈরি করবো ইনশাআল্লাহ। ডায়াসে বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি আকস্মিক অসুস্থ হয়ে পড়ে যান। তখন মঞ্চে থাকা নেতারা তাকে ধরাধরি করে তোলেন। মিনিটখানেক অপেক্ষা করে ডা. শফিকুর আবার বক্তব্য শুরু করেন। কিন্তু আবার অসুস্থ হয়ে পড়ে যান। এরপর মঞ্চে থাকা দলের নেতারা তাকে ধরে বসান। খানিকটা সময় অপেক্ষা করে না দাঁড়িয়ে মঞ্চে ডায়াসের পাশে বসেই বক্তব্য দিতে থাকেন ডা. শফিকুর রহমান। এসময় তার পাশে চিকিৎসকদেরও দেখা যায়। বসে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি বলেন, আল্লাহ যত সময় হায়াত দিয়েছেন, তত সময় মানুষের জন্য লড়াই করবো ইনশাআল্লাহ। এ লড়াই বন্ধ হবে না। বাংলার মানুষের মুক্তি অর্জন হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে। বলছিলাম, জামায়াতে ইসলামী যদি আল্লাহর ইচ্ছা এবং জনগণের ভালোবাসায়, বাংলাদেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ পায়, তাহলে মালিক হবে না, সেবক হবে ইনশাআল্লাহ। লক্ষ জনতাকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যদি নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করে, তাহলে কোনো এমপি, কোনো মন্ত্রী আগামীতে সরকারি প্লট গ্রহণ করবে না। কোনো এমপি ও কোনো মন্ত্রী ট্যাক্সবিহীন কোনো গাড়ি চড়বে না। কোনো এমপি ও কোনো মন্ত্রী তার নিজের হাতে কোনো টাকা চালাচালি করবে না। কোনো এমপি ও কোনো মন্ত্রী যদি তার নির্দিষ্ট কোনো কাজের জন্য বরাদ্দ পেয়ে থাকেন, কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের ১৮ কোটি মানুষের সামনে তারা তার প্রতিবেদন তুলে ধরতে বাধ্য হবেন। জামায়াতের আমির বলেন, চাঁদা আমরা নেব না, দুর্নীতি আমরা করবো না। চাঁদা আমরা নিতে দেব না, দুর্নীতি আমরা সহ্য করবো না। তিনি বলেন, আজীবন সবার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করেছি, জেল-জুলুমের পরোয়া করি নাই। আমার আফসোস, ২৪ সালে জাতিকে মুক্তি দিতে গিয়ে যারা জীবন দিয়ে শহীদ হলো- আমি তাদের একজন হতে পারলাম না। আপনাদের কাছে দোয়া চাই, ইনসাফের ভিত্তিতে একটি দেশ গড়ে তোলার জন্য আগামীতে যে লড়াই হবে, আমার আল্লাহ যেন সেই লড়াইয়ে আমাকে একজন শহীদ হিসেবে কবুল করেন। তিনি বলেন, আমাদের প্রিয় শহীদ নেতৃবৃন্দ, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু করে, শাপলা গণহত্যা, সারাদেশের গণহত্যা, চব্বিশের গণহত্যা যারা করেছে, তাদের সবার বিচার বাংলাদেশের মাটিতে নিশ্চিত করতে হবে। এদের বিচারের দৃশ্যমান প্রক্রিয়া শুরু না করা পর্যন্ত পুরোনো ব্যবস্থাপত্রে বাংলাদেশ আর চলবে না। জামায়াত আমির আরও বলেন, এতগুলা মানুষ এমনি এমনি জীবন দেয়নি। জীবন দিয়েছে জাতির মুক্তির জন্য। যদি পুরোনো সবকিছুই টিকে থাকবে, তাহলে কেন তারা জীবন দিয়েছিল? যারা ওই বস্তাপঁচা ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশকে আবার নিতে চান, তাদের আমরা বলি, জুলাইযুদ্ধ করে যারা জীবন দিয়েছে আগে তাদের জীবনটা ফেরত এনে দেন। যদি শক্তি থাকে ফেরত এনে দেন। আপনারা পারবেন না।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স