সুনামগঞ্জ , বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫ , ১১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সভাপতি ও সম্পাদক পদে লড়ছেন চারজন জন্মদিনে শুভেচ্ছায় সিক্ত কবি ইকবাল কাগজী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াদুদ আর নেই প্রাথমিকে এক হাজার শিক্ষকের পদ শূন্য ব্যাহত শিক্ষা কার্যক্রম শৃঙ্খলা ফিরছে না টাঙ্গুয়ার হাওরে গ্রাম আদালতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে : জেলা প্রশাসক শুভ জন্মদিন কবি ইকবাল কাগজী ফিটনেসবিহীন মাইক্রোবাসকে অ্যাম্বুলেন্সের আকৃতি দিয়ে চলছে রোগী পরিবহন শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষকদের ভূমিকা নিতে হবে মানা হচ্ছে না নির্দেশনা : টাঙ্গুয়ার হাওরে উচ্চ শব্দে গান-বাজনা চলছেই নানা সমস্যায় জর্জরিত বিদ্যালয়, পাঠদান ব্যাহত ঋণের চাপে বাড়ি ছাড়া, ফিরছেন লাশ হয়ে যাত্রীবাহী বাস খাদে, আহত ১৫ প্রাথমিক শিক্ষকরা গ্রামে থাকতে চান না, শহরে বদলি হতে চান : গণশিক্ষা উপদেষ্টা শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার করলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা : অন্তর্বর্তী সরকার সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানকে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ নিখোঁজ সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের লাশ মিলল মেঘনায় আজ জেলা সিপিবি’র সম্মেলন এনএসআই সদস্য পরিচয়ে বিয়ে-প্রতারণা, তরুণ গ্রেপ্তার বালুর আগ্রাসনে ক্ষতিগ্রস্ত জমি, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট

হাওরে মাছের আকাল, চাষের পাঙ্গাসই এখন ভরসা

  • আপলোড সময় : ১০-০৭-২০২৫ ০৮:১০:২২ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১০-০৭-২০২৫ ০৮:৪৫:২৯ পূর্বাহ্ন
হাওরে মাছের আকাল, চাষের পাঙ্গাসই এখন ভরসা
আশিস রহমান ::
হাওরবেষ্টিত দোয়ারাবাজার উপজেলায় দেশীয় মাছ অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। একসময় বর্ষার জলে হাওর-বিলে মৎস্য সম্পদ ছিল প্রাচুর্যময়। চ্যাং, ট্যাংরা, পুঁটি, কৈ, শিং, মাগুর, বাইম, খৈলসা, রাণী, মলা, ঢেলা, মেনি ইত্যাদি দেশীয় মাছ এখন যেন স্মৃতিচিহ্ন মাত্র। নির্বিচার নিধন, রাসায়নিক দূষণ, বাঁধ নির্মাণ ও প্রজনন মৌসুমে অনিয়ন্ত্রিত মাছ ধরা এই সংকটকে ঘনীভূত করে তুলছে। হাওরে দেশীয় মাছের সংকটের প্রভাব পড়েছে স্থানীয় মাছ বাজারগুলোতে। বাজারে জায়গা দখল করে নিয়েছে খামারপালিত চাষের পাঙ্গাস, তেলাপিয়া। মাছপ্রেমীদের হতাশা- “মাছ আছে, স্বাদ নাই!” হাওরের জলে এখন আর প্রাণ নেই। উপজেলার কনছখাই, দেখার, নাইন্দার, কালিউরি ও কাংলার হাওর ঘুরে দেখা গেছে, আগে যেখানে বর্ষা এলেই মাছের ঝাঁক ভিড় করতো, এখন সেখানে জাল ফেলেও মিলছে না কিছুই। একসময়কার মৎস্য বৈচিত্র্য এখন নিঃশেষের পথে। পুকুরে চাষ করা পাঙ্গাস ও তেলাপিয়া বাজারে প্রধান বিকল্প হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় জেলেরা জানান, আগে প্রতিদিন ১০-১৫ জাতে দেশীয় মাছ জালে উঠতো। এখন সেটি নেমে এসেছে ৩-৪ প্রজাতিতে। কাংলার হাওরপাড়ের জেলে শুক্কুর আলী আক্ষেপ করে বলেন, “আগে তো বর্ষায় হাত দিলেই কৈ উঠতো। এখন দিনভর জাল ফেলেও দুই-চারটা চ্যাং পাইলেই অনেক!” দেখার হাওরের জেলে মনাফ মিয়ার কণ্ঠে হতাশা, “মাছ ধরেই সংসার চলতো, এখন সংসারই চলেনা ঠিকমতো। আগের মতো মাছ আর নাই।”

উপজেলা মৎস্য অফিসের তথ্য অনুযায়ী, হাওরের স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কারণে। এতে মাছের প্রজনন মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। প্রজনন মৌসুম মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে জুনের শেষ পর্যন্ত এই সময়ে মাছ ধরা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ থাকার কথা থাকলেও তা কেউ মানছেনা।

স্থানীয়দের ভাষ্য, শুধু নিষেধাজ্ঞা নয়, দরকার কার্যকর রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা। তারা হাওরে সংরক্ষিত প্রাকৃতিক অভয়ারণ্য গড়ে তোলার পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে ‘রিস্টকিং’ কার্যক্রম জোরদারের দাবি জানান।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তুষার কান্তি বর্মণ বলেন, “চায়না রিং, কারেন্ট ও বেড় জালের মতো নিষিদ্ধ সরঞ্জাম ব্যবহার এবং পানি শুকিয়ে মাছ ধরা দেশীয় মাছের অস্তিত্ব ধ্বংস করছে। স্থানীয়দের আরও সচেতন না হলে এই ধারা থামানো সম্ভব নয়।”

দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অরূপ রতন সিংহ জানান, “দেশীয় মাছ শুধু খাদ্য নিরাপত্তা নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতি ও পরিবেশের অংশ। খুব শীঘ্রই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে অবৈধ জাল ও মাছ ধরা রোধে অভিযান শুরু হবে।”

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
প্রাথমিকে এক হাজার শিক্ষকের পদ শূন্য ব্যাহত শিক্ষা কার্যক্রম

প্রাথমিকে এক হাজার শিক্ষকের পদ শূন্য ব্যাহত শিক্ষা কার্যক্রম