শাল্লার পাঁচ গ্রামের বিদ্যুৎ সমস্যার অবিলম্বে সমাধান করুন
- আপলোড সময় : ০৩-০৭-২০২৫ ০৭:৫৬:০৩ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৩-০৭-২০২৫ ০৭:৫৬:০৩ পূর্বাহ্ন

সুন্দর ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি ছিল- সব ঘরে আলো জ্বলবে, ডিজিটাল বাংলাদেশের ছোঁয়া পৌঁছাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও। অথচ বাস্তবতা অনেক করুণ। শাল্লা উপজেলার শাসখাই, আগুয়াই, মৌরাপুর, বিলপুর ও দত্তপাড়া গ্রামের শত শত মানুষ আজও বিদ্যুৎবিহীন জীবনযাপন করছেন। সরকার যখন পুরো জেলাকে ‘শতভাগ বিদ্যুতায়িত’ ঘোষণা করেছে, তখন এই গ্রামগুলো এখনো অন্ধকারে নিমজ্জিত - এটি নিছক অবহেলা নয়, এটি একটি প্রশাসনিক ব্যর্থতা ও পরিকল্পনার দেউলিয়াপনার প্রকাশ।
জলবায়ু ট্রাস্টের অর্থে প্রায় ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত দেশের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পটি আজ পরিত্যক্ত। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রহিম-আফরোজ প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেও তা সরকারিভাবে গ্রহণ করা হয়নি। ফলে এ প্রকল্প এখন অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। চার বছর ধরে কার্যক্রম বন্ধ, অথচ সরকারিভাবে কিছুই চূড়ান্ত হয়নি - এ ধরনের দীর্ঘসূত্রতা ও দায়িত্বহীনতা জনগণের করের টাকার অপচয় ছাড়া কিছু নয়।
আরও উদ্বেগের বিষয় হলো, এই দুরবস্থার মাঝেও বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে পল্লীবিদ্যুতের দফতর দ্বন্দ্বে লিপ্ত। একজন নির্বাহী প্রকৌশলী বলছেন- জটিলতা নেই; অপরদিকে পল্লীবিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার সরাসরি জানাচ্ছেন- “এই লাইন আমরা নেব না”।
ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী দীর্ঘ সময় সেবা না পেয়েও মাসের পর মাস বিল পরিশোধ করে গেছেন। পরবর্তীতে যখন সেই সেবা আর পাননি, তখন ৪৯৭ জন গ্রাহক বিল দেওয়া বন্ধ করেন। এমন প্রতারণামূলক পরিস্থিতি সৃষ্টির দায় কে নেবে? কেউ কি একবারও ভেবেছে, এই পাঁচ গ্রামের শত শত শিশু, শিক্ষার্থী, রোগী ও কৃষকের জীবন কীভাবে স্থবির হয়ে আছে?
যখন দেশের অন্যত্র মেট্রোরেল, স্মার্ট সিটি, ৫জি - এইসব ভবিষ্যত ভাবনার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে, তখন শাল্লার মানুষ আজও সন্ধ্যার পর হাঁটতে হয় হারিকেন কিংবা কুপির আলোয়। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় প্রকারান্তরে এটি বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগণের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার প্রতিচ্ছবি।
আমরা দাবি জানাই- এই পাঁচ গ্রামের বিদ্যুৎ সমস্যার অবিলম্বে সমাধান হোক। রহিম-আফরোজের কাজ ও প্রকল্প হস্তান্তরের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পল্লীবিদ্যুৎ বা বিদ্যুৎ বিভাগ - দ্বন্দ্বে না গিয়ে সমন্বিত উদ্যোগে সংযোগ নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে একটি স্বতন্ত্র তদন্ত কমিটি গঠন করে এই প্রকল্প ব্যর্থতার পেছনের কারণ অনুসন্ধান এবং দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
আলোই সভ্যতার মাপকাঠি। সেই আলো থেকে বঞ্চিত রেখে উন্নয়নের বুলি উচ্চারণ নির্লজ্জতা ছাড়া কিছু নয়। এখনই সময় সিদ্ধান্ত নেওয়ার- শাল্লার মানুষ আর কতকাল অন্ধকারে থাকবে?
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ