সুনামগঞ্জ , রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫ , ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
পাঁচ গুণিজনকে সম্মাননা প্রদান ‘রাজসাক্ষী’ হিসেবে শর্তসাপেক্ষে চৌধুরী মামুনকে ক্ষমা করা যেতে পারে : ট্রাইব্যুনাল ষড়যন্ত্র এখনো শেষ হয়ে যায়নি, স্পষ্ট হচ্ছে অদৃশ্য শত্রু : তারেক রহমান চার উপজেলায় এসিল্যান্ড নেই, দুর্ভোগে সেবাপ্রত্যাশীরা শহরের খাল উদ্ধারে ফের শুরু হচ্ছে অভিযান তাহিরপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২০ এনসিপি’র সুনামগঞ্জ জেলা সমন্বয় কমিটি গঠন অপহরণের ১৪ দিন পর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ব্যবসায়ীকে উদ্ধার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতার বিরুদ্ধে টিআরের বরাদ্দ আত্মসাতের অভিযোগ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে অক্টোবরে আসামি থেকে রাজসাক্ষী : সুবিধা-অসুবিধা জুয়া ও মাদকে সয়লাব শ্রীপুর বাজার জগন্নাথপুরে এমপি প্রার্থী এমএ কাহারের সমর্থনে লিফলেট বিতরণ অবসরপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবি ১ কোটি ৬২ লাখ টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ আমরা ফ্যাসিস্টমুক্ত দেশ গড়তে চাই : আরিফুল হক চৌধুরী নিত্য যানজটে ভোগান্তি শহরবাসীর জেলায় পাসের হার ৬৮.৪৬%, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪১৭ জন বিএনপিতে দুর্নীতিবাজদের ঠাঁই হবে না : কামরুজ্জামান কামরুল শিক্ষক সংকটের মধ্যে আরো ৫ জন বদলি!

মরা চেলা নদীতে বালুখেকোদের তান্ডব, হুমকিতে রোপওয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্প

  • আপলোড সময় : ০১-০৭-২০২৫ ০৯:০৪:১৫ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০১-০৭-২০২৫ ০৯:০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন
মরা চেলা নদীতে বালুখেকোদের তান্ডব, হুমকিতে রোপওয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্প
বিশেষ প্রতিনিধি ::
ছাতক উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের মরা চেলা নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে রাতের আঁধারে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালী বালুখেকো চক্র। এতে চরম হুমকির মুখে পড়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ের রোপওয়ে লাইন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের বসতবাড়ি।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কাটুমারা এলাকায় রেলওয়ের রোপওয়ে লাইনের ‘এঙ্গেল টু’ পয়েন্টে লাইনের নিচ থেকেই গভীর করে বালি কেটে নেওয়া হচ্ছে। ফলে ট্রেসেল টাওয়ারগুলোর নিচের মাটি সরে গিয়ে তা হেলে পড়েছে, যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। স্থানীয়রা জানান, ইসলামপুর ইউনিয়নের মরা চেলা নদীর কাটুমারা এঙ্গেল টু নামক স্থানে কতিপয় বালুখেকো চক্র প্রতিদিন সন্ধ্যা হতে ভোর পর্যন্ত অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ের আওতাধীন ছাতক হতে ভোলাগঞ্জ পর্যন্ত স্থাপনকৃত পাথর বহনকারী রোপওয়ে লাইন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এঙ্গেল টু নামক স্থানে রোপওয়ে লাইনের নিচ থেকে বালি উত্তোলন করায় রোপওয়ের ট্রেসেল বা টাওয়ারের নিচের অংশে মাটি বা বালি না থাকায় টাওয়ারগুলো হেলে পড়ে অরক্ষিতভাবে রয়েছে। এলাকাটিকে দিঘিতে পরিণত হচ্ছে।
এছাড়া মরা চেলা নদীর তীরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ভূমিহীনদের সরকারি ঘরে দশ টি পরিবার বসবাস করলেও তাদের ঘরের পাশ থেকে বালু উত্তোলন করায় তারাও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। প্রভাবশালী বালুখেকোদের ভয়ে কেউ মুখ খুলে কথা বলতে পারছেন না। স্থানীয়রা আরও জানান, এখান থেকে বালু উত্তোলন করে কয়েক লাখ লাখ টাকার বালু প্রতিদিন জাহাজ ও বাল্কহেড স্টিল নৌকাবোঝাই করে বিক্রি করলেও সরকার কোন ধরনের রাজস্ব পাচ্ছে না। প্রভাবশালী বালুখেকোরা প্রায় ৫০ থেকে ৬০ ফুট গভীর করে ফেলায় টিলা রকম ভূমি এখন দিঘিতে পরিণত হয়েছে।
এছাড়া গাছপালা কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসরত ভূমিহীন মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, ঘরের নিচ থেকে বালি কেটে নেওয়ায় আমাদের ঘর যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে। পরিবার নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। এছাড়া ড্রেজারের শব্দ দূষণ ও রাতভর চলা কার্যক্রমে কাটুমারা, ময়না দ্বীপ, সিপাহি টিলা, মৌলভীরগাঁও, পাথারীপুর ও রহমতপুরসহ আশপাশের সাত-আটটি গ্রামের মানুষ নির্বিঘ্নে ঘুমাতে পারছে না। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার বালু লুট হলেও সরকারের কোষাগারে ঢুকছে না এক টাকাও। বরং গাছপালা কেটে, টিলা কেটে পরিবেশ ধ্বংস করে অর্থের পাহাড় গড়ছে একটি প্রভাবশালী মহল।

এদিকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে সোমবার সকালে নোয়াগাঁও, কোচবাড়ি, জৈন্তাপুর, খাদিমনগরসহ পাঁচ গ্রামের ক্ষতিগ্রস্তরা ছাতক থানার সামনে বিক্ষোভ করে এবং লিখিত অভিযোগ দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসির কাছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে রোপওয়ে বিভাগের আইডব্লিউ আব্দুন নূর বলেন, আমাদের লোকবল সংকটে সরাসরি তদারকি করা যাচ্ছে না। আমি কর্মী পাঠিয়ে বিষয়টি তদন্ত করছি।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু নাছির বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। সরেজমিন তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম বলেন, অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংসকারীদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স