মোহাম্মদ নূর ::
সুনামগঞ্জ শহরের হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কো¤পানি লিমিটেডের বিরুদ্ধে গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। বীমার মেয়াদ শেষ হলেও বছরের পর বছর ঘুরে টাকা পাচ্ছেন না অনেক গ্রাহক। কো¤পানির ট্রাফিক পয়েন্টস্থ অফিসে অভিযোগ নিয়ে প্রতিনিয়ত ভিড় করছেন ভুক্তভোগীরা, তবে ফিরছেন আশাহত হয়ে।
রবিবার (২৯ জুন) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অফিসের পরিবেশ চরম বিশৃঙ্খল। গ্রাহকদের চিৎকার ও ক্ষোভে ভরপুর ছিল পুরো কার্যালয়। এ সময় গুরুত্বপূর্ণ কোনো কর্মকর্তা উপস্থিত না থাকলেও দেখা মেলে কেবল সহকারী ম্যানেজার এমদাদুর রহমান ও পিয়ন আব্দুল আহাদের।
গ্রাহকদের অভিযোগ, বীমার মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পরেও বছরের পর বছর আসতে হয় এই বীমা অফিসে। অফিসে আসার পরও বীমার টাকা মিলে না। শুধু দেওয়া হয় তারিখ আর তারিখ।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের ভুক্তভোগী জুলফিকার জানান, আমাদের বীমার মেয়াদ অনেক বছর আগেই সম্পন্ন। কিন্তু এখনো আমরা টাকা পাচ্ছি না। এই অফিসে উঠানামা করতে গিয়ে মাসে দশ জোড়া জুতা পরিবর্তন করতে হয়। তবুও মিলে না কোন আশ্বাস। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ জানাবো এদের প্রতারণা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হোক।
বীমা কোম্পানিটির অফিসে আরো ভুক্তভোগী নারীদের দেখা মিলে। একজন বয়স্ক নারী হাফিজুন। তিনি তাহিরপুরের বাদাঘাট থেকে এসেছেন। তার অভিযোগ বীমার বোনাসের সময় অনেক আগেই পেরিয়ে গেছে, এখনো তিনি তার প্রাপ্য পাননি। তিনি বলেন, অফিসের পিয়ন আব্দুল আহাদ আমার বাড়িতে গিয়ে সব সময় টাকাটা নিয়ে আসতো। আমার মেয়ের নামে এই বীমা। অনেক কষ্টের জমানো টাকা।
মুসলিমপুরের বাসিন্দা ভুক্তভোগী রোকেয়া জানান, মেয়াদ পেরিয়ে বীমার দুই বৎসর চলে গেছে। অফিসে একবার এসেছিলাম। তারা আমাকে বলেছে রোজা ঈদের পরে বীমার টাকা দিয়ে দিবে। পরে আবার এলাম। তারা বলল, কোরবানী ঈদের পরে পাবেন। এভাবেই শুধু মিথ্যা আশ্বাস আমাদের দেওয়া হয়।
এরকম অনেক ভুক্তভোগীর দেখা মিলে প্রতিদিন সুনামগঞ্জের হোমল্যান্ড লাইফ ইন্সুরেন্সে গেলে।
এ বিষয়ে অফিসের সহকারী ম্যানেজার এমদাদুর রহমান জানান, আমাদের কিছু করার নেই। আমরা শুধু এখান থেকে প্রসেসিং করে দেই। আমার নিজেরও অনেক মাসের বেতন পাওনা রয়েছে।
এদিকে সুনামগঞ্জের হোমল্যান্ড অফিসের ম্যানেজার ও ইনচার্জ এম এ মন্নানকে অফিসে পাওয়া যায়নি। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।