সুনামগঞ্জ , রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫ , ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
টাঙ্গুয়ার হাওর রক্ষায় কাজ করবে সরকার: মহাপরিচালক শহরে সক্রিয় মাদক কারবারিরা চোখের সামনে বিলীন হচ্ছে ভিটেমাটি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে মানববন্ধন অ্যাড. নুরুল ইসলামকে ফতেপুর বিএনপি নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন আধিপত্য নিয়ে লড়াইয়ের অবসান চান গ্রামবাসী কাজ না করেই তিন প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ সুনামগঞ্জকে শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের শহর হিসেবে গড়ে তুলতে হবে সুনামগঞ্জ-৫ আসনে আলোচনায় বিএনপি’র দুই হেভিওয়েট প্রার্থী কৃষকরা বাংলাদেশকে বাঁচিয়ে রেখেছেন : অতিরিক্ত কৃষি সচিব নদী ভাঙন রোধের দাবিতে ভাদেরটেক গ্রামবাসীর মানববন্ধন গ্যাসের পাইপ লাইনে লিকেজ, দুর্ঘটনার আশঙ্কা জামালগঞ্জে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত বিএনপি নেতা অ্যাড. নূরুল ইসলামের গণসংযোগ ভক্তি আর সম্প্রীতিতে মুখরিত রথযাত্রা চাঁদা না দেয়ায় দুই ভাইকে ছুরিকাঘাত : একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক মাছ বাজারে প্রতারণার ফাঁদে ক্রেতারা বালুপাথর মহালের ইজারা বন্ধ নয়, ইজারা প্রথার বাতিল চাই ১১ মাসে অর্ধ শত কোটি টাকার বালু লুট জগন্নাথপুরে ৩ আসামি গ্রেফতার
স্মরণসভা

শিক্ষানুরাগী আব্দুল জব্বার ছিলেন আলোকিত মানুষ

  • আপলোড সময় : ২৯-০৬-২০২৫ ০৮:৫৯:০০ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৯-০৬-২০২৫ ০৯:২৭:০৩ পূর্বাহ্ন
শিক্ষানুরাগী আব্দুল জব্বার ছিলেন আলোকিত মানুষ
স্টাফ রিপোর্টার ::
সাবেক মৎস্য অফিসার, শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক আব্দুল জব্বার স্মরণে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় শহরের মুক্তারপাড়াস্থ দৈনিক সুনামকণ্ঠ’র কনফারেন্স হলে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার আয়োজন করে সুনামকণ্ঠ সাহিত্য পরিষদ।

সুনামকণ্ঠ সাহিত্য পরিষদের সভাপতি প্রভাষক দুলাল মিয়ার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অনুপ নারায়ণ তালুকদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ ধূর্জটি কুমার বসু, সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ন্যাথানায়েল এডউইন ফেয়ারক্রস, সাবেক সংসদ সদস্য দেওয়ান শামসুল আবেদীন, প্রফেসর সৈয়দ মহিবুল ইসলাম, দৈনিক সুনামকণ্ঠ সম্পাদক বিজন সেন রায়, প্রভাষক মোহাম্মদ ছায়েদুল ইসলাম, প্রভাষক মোহাম্মদ হাবীবুল্লাহ আছকির তালুকদার, দ্বীনি সিনিয়র ফাজিল মডেল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আলী নূর, হাফিজ আতাউর রহমান লস্কর, ডা. মুরশেদ আলম, শিক্ষক আব্দুর রব, সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা শাহীন আহমদ, সাহিত্য পরিষদের অর্থ সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, মরহুম আব্দুল জব্বারের ছেলে একেএম মুর্শেদ সোহেল।
স্মরণ সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি আহমেদ নূর আলবাব। সভার শুরুতে প্রবন্ধ পাঠ করেন প্রভাষক মোশারফ হোসেন বাবলু।

স্মরণ সভায় বক্তারা বলেন, সাবেক মৎস্য অফিসার আব্দুল জব্বার ছিলেন একজন শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক। তিনি জীবদ্দশায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়তে অতুলনীয় অবদান রেখেছেন। সমাজ উন্নয়নে কাজ করেছেন। বক্তারা বলেন, সমাজের প্রকৃত উন্নতি নির্ভর করে সেইসব মানুষের উপর, যাঁরা নিজেদের স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে সমাজের জন্য কাজ করেন। শিক্ষা, মানবিকতা ও সমাজসেবার প্রতি নিবেদিতপ্রাণ মানুষগণ যুগে যুগে সমাজে আলোকবর্তিকা হিসেবে অবদান রেখে গেছেন। তেমনই একজন ছিলেন আব্দুল জব্বার। যিনি ‘ফিসারি অফিসার’ হিসেবে সমধিক পরিচিত ছিলেন। তিনি একজন নিবেদিত শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবী এবং মানবতাবাদী। তাঁর নিরলস পরিশ্রম এবং মানবিক মূল্যবোধ সমাজে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আব্দুল জব্বার অবিভক্ত বাংলায় মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর মহকুমার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মোবারক আলী এবং মাতা লুৎফুন্নেছা বেগম। তাঁর পিতা অঢেল ভূসম্পত্তির অধিকারী একজন ধর্মপ্রাণ মানুষ ছিলেন।
বক্তারা বলেন, আব্দুল জব্বার তাঁর পূর্ব পুরুষদের সামাজিক জনহিতকর কাজ দেখে দেখেই বড় হয়েছেন। তিনি কলকাতার স্বনামধন্য রিপন কলেজ থেকে আইএসসি এবং ইসলামিয়া কলেজ থেকে বিএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি শিক্ষার প্রতি গভীর আকৃষ্ট ছিলেন। নানা প্রতিকূলতার মাঝেও অধ্যবসায় ও সততার মাধ্যমে তিনি শিক্ষা অর্জন করেন। শিক্ষার প্রতি তাঁর ভালোবাসা পরবর্তীতে সমাজ উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। ভারত বিভক্তির পর তিনি পূর্ব পাকিস্তানে তাঁর সম্পর্কে মামা অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার পরবর্তীতে যিনি চিফ জাস্টিস হয়েছিলেন এবং তাঁর খালাতো ভাই ড. মোদাচ্ছের হোসেন ডিএলও এর পরামর্শ ও অনুপ্রেরণায় চিফ জাস্টিস আব্দুস সাত্তার-এর ঢাকার আরমানি টুলাস্থ বাসায় ওঠেন। এবং এর কিছুদিন পরই তিনি পূর্ব পাকিস্তান ফিসারি ডিপার্টমেন্টে অফিসার হিসেবে যোগদানের মধ্য দিয়ে চাকরি জীবন শুরু করেন। তিনি মৌলভীবাজার জেলার কোণাগ্রাম সাহেব বাড়ি নিবাসী বর্তমানে যা নজিরাবাদ ইউনিয়নের নজিরাবাদ গ্রাম নামে পরিচিত, ওই গ্রামের কৃতী সন্তান আসাম আইন পরিষদের এমএলএ ও তৎসমের অনারারি ম্যাজিস্ট্রেট নজির উদ্দিনের কন্যা খালেদা সুলতানা আক্তারের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। জব্বার-খালেদা দম্পতির পাঁচ পুত্র ও এক কন্যা। বক্তারা আরও বলেন, আব্দুল জব্বার বিশ্বাস করতেন- শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। এই বিশ্বাস থেকে তিনি শিক্ষার প্রসার ঘটাতে নিজ এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ব্যাপারে সবসময় চিন্তা-ভাবনা করতেন।
এই চিন্তা থেকেই সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যাপক আহমদ আলীসহ এলাকার সচেতন ব্যক্তিবর্গের সাথে কথা বলেন। এর ধারাবাহিকতায় এলাকার সচেতন ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে তিনি ‘দ্বীনি মজলিস’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন।
এই সংগঠনে সদস্য শিক্ষক মাওলানা মো. শওকত আলী, শিক্ষক মু. আব্দুর রহিম, অধ্যাপক আহমদ আলী, আব্দুল জব্বার, আব্দুল গফুর চৌধুরী, ডা. রেজওয়ানুল হক, কনু মিয়া ও ওয়াজেদ আলীসহ আরও অনেক ব্যক্তিবর্গ ছিলেন। শিক্ষানুরাগী আব্দুল জব্বার দ্বীনি সিনিয়র মাদ্রাসা, সুনামগঞ্জ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, আদর্শ শিশু শিক্ষা নিকেতনসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন। তার আদর্শ, শিক্ষা ও স্বপ্ন আমাদের এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স