সুনামগঞ্জ , শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ২২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
৩ দিন ধরে নিখোঁজ, নদীতে মিলল জমিয়ত নেতার মরদেহ সীমান্তে ২৩টি ভারতীয় গরু জব্দ দিরাইয়ে তিন ভাগে বিভক্ত বিএনপি শীঘ্রই একটি নির্দিষ্ট সময় হাওরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হবে : উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ঈদে মিলাদুন্নবীর গুরুত্ব ও তাৎপর্য সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো অবৈধ স্থাপনা দিরাইয়ে বিএনপি’র শোভাযাত্রায় নেতাকর্মীদের ঢল দিরাইয়ে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৩ দুই ছাত্রীকে অপহরণ, নির্যাতন ও ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ দায়িদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে জুডিসিয়াল তদন্ত কমিটি গঠন তৎকালীন আইজিপির বর্ণনায় ৫ আগস্ট সরকারিপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন জামালগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন সুনামগঞ্জ হাসপাতালে ১২ ধরনের আড়াই কোটি টাকার ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে জুলাই গণহত্যা : রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি মামুন শিক্ষাক্ষেত্রে সুনামগঞ্জকে এগিয়ে নিতে সবার সহযোগিতা চাই : জেলা প্রশাসক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ না করার নির্দেশ দিলেন জেলা প্রশাসক স্ত্রীর সাথে অভিমান করে স্বামীর আত্মহত্যা প্রকৌশলী কামরুল হকের মৃত্যু নিয়ে রহস্য স্বজনদের দাবি ‘পরিকল্পিত হত্যা’ বিএনপি’র ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত

নদী আর বালু নয়, রক্ষা চাই রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও জনজীবন

  • আপলোড সময় : ২৮-০৬-২০২৫ ০৯:১৬:৩৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৮-০৬-২০২৫ ০৯:১৬:৩৬ পূর্বাহ্ন
নদী আর বালু নয়, রক্ষা চাই রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও জনজীবন
তাহিরপুর উপজেলার শান্তিপুর ও মাহারাম নদী যেন বালুখেকোদের স্বর্গরাজ্য। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে দিনের পর দিন নদী থেকে বালু উত্তোলন ও পাচার চলছে নির্লজ্জভাবে। গত ১১ মাসে শুধুমাত্র শান্তিপুর ও মাহারাম নদী থেকেই অর্ধ শত কোটি টাকার বালু লুট করা হয়েছে - যা এক গভীর রাষ্ট্রীয় লুণ্ঠনের স্পষ্ট চিত্র। এই নদীগুলো যাদুকাটা নদীর শাখা। ঐতিহ্যবাহী এই নদীগুলোর বুক চিরে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে রাতদিন। প্রশাসনের কিছু বিচ্ছিন্ন অভিযান ছাড়া কার্যকর কোনো দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ নেই। সম্প্রতি শান্তিপুর নদীতে অভিযান চালিয়ে কয়েকজন শ্রমিক ও নৌকা আটক করা হয়েছে - যারা কেবল সিস্টেমের নিচের স্তরের কর্মী। অথচ স্থানীয় জনগণের অভিযোগে উঠে এসেছে একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম, যাদের ছত্রচ্ছায়ায় এই বালু সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। আশিকুল ইসলাম, মাসুক সরদার, আলীনুর সরদার, আবু তাহের মেম্বার প্রমুখ ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত থাকলেও এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শান্তিপুর, মাহারাম নদীর মতো জেলার বিভিন্ন নদী থেকেও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে দেদারসে। এতে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হচ্ছে, পাড় ভেঙে যাচ্ছে, বিলীন হচ্ছে আবাদি জমি ও বসতভিটা। নদীর নাব্যতা হারিয়ে নৌ-চলাচল ব্যাহত হচ্ছে, জলজ জীববৈচিত্র্যও হুমকির মুখে পড়ছে। প্রশ্ন হলো- কারা এই ভয়াবহ লুটপাটের পেছনে? কেন বালুখেকোদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিরুৎসাহিত? কেন শুধু সাধারণ শ্রমিকদের ধরেই দায়িত্ব শেষ মনে করা হয়? আমরা মনে করি, এটি নিছক আইনশৃঙ্খলার বিষয় নয়; প্রকৃতপ্রস্তাবে এটি একটি গভীর প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবের চিত্র। রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক স¤পদ - নদী ও তার বালু যদি কিছু অসাধু ব্যক্তির হাতে জিম্মি হয়ে পড়ে, তবে তা শুধু পরিবেশ বিপর্যয় নয়, বরং জাতীয় নিরাপত্তা ও উন্নয়নকেও হুমকির মুখে ঠেলে দেয়। এই পরিস্থিতিতে আমাদের সুস্পষ্ট দাবি- ১. জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে সমন্বিতভাবে একটি বিশেষ ‘নদী ও বালু সংরক্ষণ টাস্কফোর্স’ গঠন করতে হবে, যাতে প্রশাসন, পরিবেশ অধিদফতর ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালাতে পারে। মূল হোতাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে তারা রাজনৈতিক পরিচয় বা ক্ষমতার দোহাই দিয়ে পার না পায়। নদীভিত্তিক পরিকল্পিত উন্নয়ন ও সুরক্ষার জন্য দীর্ঘমেয়াদি ‘নদী ব্যবস্থাপনা নীতিমালা’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন জরুরি। অবৈধ বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত জনপ্রতিনিধি বা রাজনৈতিক ব্যক্তি প্রমাণিত হলে তাদের আইনের আওতায় এনে পদচ্যুত করতে হবে। এছাড়া বালু শ্রমিকদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে তারা সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ পেশায় ফিরে যেতে পারে। নদী রাষ্ট্রের শিরা-উপশিরা। বালু তার সঞ্চিত শক্তি। এই শক্তি যারা লুটে নিচ্ছে, তারা দেশের ভবিষ্যৎকে দুর্বল করছে। রাষ্ট্র যদি এখনই জেগে না ওঠে, কাল হয়তো নদী থাকবে না - থাকবে শুধু বালু চুরির গর্ত আর ক্ষতবিক্ষত জনপদ।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
৩ দিন ধরে নিখোঁজ, নদীতে মিলল জমিয়ত নেতার মরদেহ

৩ দিন ধরে নিখোঁজ, নদীতে মিলল জমিয়ত নেতার মরদেহ