গ্রাহক আসবে, আমরা বসে আছি’ - এই মানসিকতা থেকে বিটিসিএলকে বের হতে হবে
- আপলোড সময় : ২৪-০৬-২০২৫ ১২:০৯:৩৯ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৪-০৬-২০২৫ ১২:০৯:৩৯ পূর্বাহ্ন

‘গ্রাহক আসবে, আমরা বসে আছি’ - এই মানসিকতা থেকে বিটিসিএলকে বের হতে
সরকারি সেবার ক্ষেত্রে ‘দায়িত্ব’ শব্দটির গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ করে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে টেলিযোগাযোগ খাতে বিটিসিএলের ভূমিকা অনস্বীকার্য হওয়া উচিত ছিল। অথচ বাস্তবে আমরা ভিন্ন চিত্রই দেখছি। সুনামগঞ্জ পৌর শহরে বাংলাদেশ টেলি কমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)-এর জিপন প্রযুক্তিভিত্তিক দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবার যথেষ্ট সক্ষমতা থাকলেও সে অনুযায়ী কাক্সিক্ষত গ্রাহক পাচ্ছে না প্রতিষ্ঠানটি। প্রায় দুই বছর আগে মাটির নিচ দিয়ে স্থাপন করা হয়েছে ফাইবার অপটিক্যাল লাইন। সর্বোচ্চ ১০০ এমবিপিএস গতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্যাকেজ থাকলেও এখন পর্যন্ত গ্রাহক মাত্র ৬৭৫ জন! অথচ প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ জনকে ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার সক্ষমতা। কেন এই ব্যবধান? উত্তর একটাই- প্রচারণার ঘাটতি এবং সেবার মান নিয়ে মানুষের আগের নেতিবাচক অভিজ্ঞতা।
বেসরকারি অপারেটরদের তুলনায় বিটিসিএলের যন্ত্রপাতি ও অবকাঠামো অনেক বেশি শক্তিশালী, কিন্তু সেবার মান ও ব্যবহারকারী-সন্তুষ্টির দিক দিয়ে এখনো অনেকটা পিছিয়ে। এর অন্যতম কারণ দ্রুত রেসপন্স না পাওয়া, লোডশেডিং বা দুর্যোগকালে দ্রুত মেরামতের ঘাটতি, এবং তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক যুগোপযোগী প্রচার না থাকা।
যেখানে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ফেসবুক, ইউটিউব বিজ্ঞাপন, ঘরে ঘরে প্রতিনিধি পাঠিয়ে গ্রাহক সংগ্রহ করে, সেখানে বিটিসিএল এখনো ‘গ্রাহক আসবে, আমরা বসে আছি’ - এই মানসিকতা থেকে বের হতে পারেনি। তবে আশার কথা হলো, জিপন প্রযুক্তির মাধ্যমে সংযোগ দিলে আগের তুলনায় সমস্যার হার কমেছে এবং দূর থেকেই মনিটরিং করা যাচ্ছে। এই প্রযুক্তির উন্নয়নে যেভাবে বিটিসিএল এগোচ্ছে, তাতে সেবার মান বাড়ানো সম্ভব।
সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিটিসিএলের আরও বেশি ভূমিকা নেওয়া উচিত। বিশেষ করে সেবার মান বজায় রাখা, দ্রুত সমস্যার সমাধান দেওয়া এবং প্রচারণার জন্য আধুনিক ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করা এখন সময়ের দাবি। প্রয়োজনে ‘গৃহে-গৃহে সংযোগ’ কর্মসূচি নেওয়া যেতে পারে। এতে শুধু গ্রাহক বাড়বে না, বাড়বে সরকারের রাজস্বও।
বিটিসিএল যদি আন্তরিকভাবে কাজ করে, তাহলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষও পাবেন মানসম্মত, সাশ্রয়ী এবং নির্ভরযোগ্য ইন্টারনেট সংযোগ। ‘ক্ষমতা আছে, প্রচারণা নেই’ এই চিরাচরিত চিত্র থেকে বের হয়ে বিটিসিএল হবে সক্রিয়, জনমুখী ও আধুনিক চিন্তার প্রযুক্তি-সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান - এটাই প্রত্যাশা।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ