বিশেষ প্রতিনিধি ::
হাওর-বাওড়-পাহাড়-নদী-বিল। সব মিলিয়ে অনন্য অপরূপ টাঙ্গুয়া। বর্ষা ও হেমন্তে দুই রূপ তার। কখনও ভাসানপানিতে জলকেলি উৎসব। কখনও সবুজের সমারোহে পরিযায়ী ম্যারাথন।
জীববৈচিত্র্যে বলীয়ান টাঙ্গুয়ার হাওরকে বর্ষাকালীন টইটম্বুর রূপে মোহিত করেছে উত্তরের অনতিউচ্চ মেঘালয়। সম্পদ ও সৌন্দর্যে মনোমুগ্ধকর টাঙ্গুয়ার অবস্থা প্রায় সঙ্কটাপন্ন। এই সঙ্কট এড়াতে সকলের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন বলছেন সংশ্লিষ্টরা। পাহাড় বেয়ে চলা টাঙ্গুয়া প্রাকৃতিক সম্পদ ও সৌন্দর্যে যতটা না এগিয়ে, তার চেয়ে বেশি এগিয়ে হাউসবোটবাহী পর্যটক ও পর্যটনে। বর্ষায় অতিমাত্রার এই মানব উৎপাত; হেমন্তে বন, কান্দা, হাওরবিধ্বংসী কর্মকান্ডের রামসার টাঙ্গুয়া প্রায় বিলীনের পথে হাঁটছে। ২০০৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আইইউসিএন রক্ষণাবেক্ষণে ছিল হাওরটি। পরবর্তী সময় থেকে প্রশাসনের নজরদারি তেমনটা না থাকায় দিন দিন টাঙ্গুয়ার হাওরের বিপদ আরও বাড়ছে। ইঞ্জিনচালিত ছোট ছোট নৌকা ও অনুমোদনহীন হাউসবোটের অনিয়ন্ত্রিত উৎপাতে টাঙ্গুয়ার হাওর আজ সম্পূর্ণ অনিরাপদ।
হাওরজুড়ে ইঞ্জিনের বিকট শব্দ, মানুষের হৈহুল্লোর, উচ্চশব্দে গান বাজনা, ওয়াচ টাওয়ারের (পর্যবেক্ষণ টাওয়ার) উপর থেকে লাফিয়ে পড়ার কারণে পানির উপর-নীচ দুই জায়গাতেই নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। পানিতে ফেলা প্লাস্টিকের বোতল, পলিথিন, ককসিটের পরিত্যক্ত থালা-প্যাকেটসহ দূষিত বর্জ্যে সমূহ ক্ষতির মুখে পড়ছে দেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট টাঙ্গুয়ার প্রাণপ্রকৃতি ও পরিবেশ।
ওয়াচ টাওয়ার সংলগ্ন গাছগুলো জলজ পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হলেও মানুষ-হাউসবোটের আনাগোনায় পুরো হাওরই প্রায় পাখিশূন্য। অনিয়মতান্ত্রিক কর্মকান্ডে দেশীয় প্রজাতির মাছও হারিয়ে গেছে টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে। হাওরকেন্দ্রিক জীবন-জীবিকাও হুমকিতে পড়েছে। মিঠাপানির মৎস্য ভান্ডার খ্যাত টাঙ্গুয়ার হাওর রক্ষণাবেক্ষণে নানা বাধ্যবাধকতা থাকলেও প্রশাসনের দায়িত্বহীনতায় অরক্ষিত হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দৃষ্টিকাতর টাঙ্গুয়া : পর্যবেক্ষণ টাওয়ার ছুঁয়ে গোটা করচ বাগানে নোঙর করেছে হাউসবোটের লম্বা সারি। হাওরজুড়েই রয়েছে নৌকা-হাউসবোট ও পর্যটকের বেহিসেবি আধিপত্য। বিকট শব্দ-সাইরেনে তেড়েফুঁড়ে ছুটছে পর্যটকবাহী এসব জলযান। গত ৩০ মে আকস্মিক আগুন লেগে পুড়ে যায় পর্যটকবাহী একটি হাউসবোট। অল্পের জন্য বেঁচে যান ১২ পর্যটক। প্রতিদিন প্রায় দুই শতাধিক হাউসবোট ও নৌকা এভাবে তাড়া করছে টাঙ্গুয়ার হাওরকে। যে যন্ত্রণায় প্রায় পাখিশূন্য হয়ে পড়েছে হাওরের আকাশসীমা। নৌকায় ঘুরে গাঙচিল, বক, ঈগল, পানকৌড়ি, মাছরাঙার মতো পরিচিত পাখির দেখা পাওয়া যায়নি হাওরে। বিশ্ব ঐতিহ্যের রামসার সাইটখ্যাত জলাভূমির সজল বুকে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। একটা সময় যেখানে প্রায় দুই লাখ পাখি বিচরণ করত, সেখানে এ বছর পরিযায়ী পাখি এসেছে ২৩ হাজার। বিশ বছরের মধ্যে যে হার ইতিহাসের সর্বনিম্ন বলছেন গবেষকরা। পাখির নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিজল-করচসহ জলসহিষ্ণু গাছ-গাছালিও নেই আগের মতো। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিটেফোঁটা যা আছে তাও অনিরাপদ পাখিদের জন্য। জীববৈচিত্র্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ টাঙ্গুয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় কার্যত অভিভাবকহীন মনে হয়েছে।
স্থানীয়দের কাছে পরিচিত ‘নয় কুড়ি কান্দা, ছয় কুড়ি বিল’ টাঙ্গুয়া দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠাপানির জলাভূমি। দেশের ছয় মাদার ফিসারিজের অন্যতম এই হাওর দেশীয় মাছের অভয়াশ্রম। এক সময়কার চিতল মাছের খনি আলংডোয়ার এখন মাছশূন্য। মনুষ্যসৃষ্ট অত্যাচারের নানা নমুনা টাঙ্গুয়াকে মৎস্য ও জীববৈচিত্র্যহীনতার দিকে ঠেলে দিয়েছে। মৎস্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত টাঙ্গুয়া পারের লোকজন এখন চাষের পাঙ্গাসে মৎস্য চাহিদা পূরণ করছে বলছেন স্থানীয়রা। হাওর ঘুরতে গিয়ে ভয়ংকর চায়না দুয়ারি জালে মাছ শিকারের দৃশ্যও চোখে পড়েছে। কোণাজাল, কারেন্টের জাল, চায়না দুয়ারি জালসহ বৈদ্যুতিক শক দিয়ে মাছ শিকারের ফলে মাছের বংশবিস্তার রোধ হচ্ছে। এতে মাছের সাথে জলজ অন্য প্রাণীও মারা যাচ্ছে। হাওরের ছোটখাটো বিল ইজারার নামে ইজারাদাররা আশপাশের জলজ পরিবেশ ধ্বংস করছে। মাছ, গাছ, পাখির অভয়ারণ্য ধ্বংসের মাধ্যমে টাঙ্গুয়ার হাওরকে সঙ্কটাপন্ন করে তুললেও কোন পক্ষের দায় আছে বলে মনে হয়নি।
টাঙ্গুয়া কেন সেরা : সম্পদ, সৌন্দর্য ও ঐতিহ্যের বৈঠা বেয়ে বিশ্ব সংস্থার দ্বার পর্যন্ত পৌঁছেছে যে হাওর তার নাম টাঙ্গুয়া। সুনামগঞ্জের মধ্যনগর ও তাহিরপুর উপজেলায় যার বিস্তৃতি। ১৮ মৌজা, ৫১ হাওর, ৫৪টি ছোট-বড় বিল ও ১২ হাজার ৬৬৫ হেক্টর আয়তনের এই হাওর দেশের দ্বিতীয় মিঠাপানির বৃহত্তম জলাভূমি। ধান, মাছ, বন, পাখির বিরল ভান্ডার এটি। জীববৈচিত্র্যের আধার টাঙ্গুয়ার তীর ও অভ্যন্তরে ৮৮টি গ্রাম আছে। প্রায় ৬০ হাজার মানুষের জীবন-জীবিকানির্ভর ওই হাওরকে ১৯৯৯ সালে প্রতিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করা হয়। ২০০০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বের ১০৩১টি রামসার সাইটের মধ্যে দেশের দ্বিতীয় রামসার ঘোষিত টাঙ্গুয়াকে সুরক্ষার বদলে দিন দিন অরক্ষিত পর্যায়েই ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। হাওরটিকে সঙ্কটাপন্ন এলাকা ঘোষণার মাধ্যমে লুপ্ত হয় দীর্ঘ প্রায় ৭০ বছরের ইজারা প্রথার। ২০০৩ সালে এর নিয়ন্ত্রণ নেয় জেলা প্রশাসন। উদ্দেশ্য হাওর এলাকার মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, সম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা। সরকার, এনজিও ও বিদেশী সংস্থা দায়িত্ব নিলেও হাওর সুরক্ষায় কার্যত কোনকিছুরই বাস্তবায়ন হয়নি। প্রাণপ্রকৃতিতে ঋদ্ধ টাঙ্গুয়ার বৈচিত্র্যতা দর্শনে আকৃষ্ট করে নানা জাতের পাখি।
স্থানীয় প্রজাতি ছাড়াও শীতকালে পরিযায়ী পাখির মেলা বসে এই হাওরে। ২০১৯ সালের পাখিশুমারি অনুযায়ী টাঙ্গুয়া ও তার আশপাশের এলাকায় ২০৮ প্রজাতির পাখির দেখা পাওয়া যায়। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে ৬০ হাজার পাখি ছিল টাঙ্গুয়ায়। ২০২২ সালে তা কমে ২৭ হাজারে নেমে আসে।
গবেষণা বলছে, ২০ বছরের মধ্যে এ বছর সবচেয়ে কম পরিযায়ী পাখি এসেছে সেখানে। যেখানে গড়ে দুই লাখ পাখির বিচরণ ছিল। এ বছর তার সংখ্যা মাত্র ২৩ হাজারে গিয়ে ঠেকেছে। বিরল পরিযায়ী পাখি ছাড়াও এ হাওরে আছে ৬ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ২০ প্রজাতির সাপ, বিরল প্রজাতির উভচর, ৪ প্রজাতির কচ্ছপ, ৭ প্রজাতির গিরগিটিসহ নানা জাতের প্রাণী। ২০১২ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী, প্রায় ২৫০ প্রজাতির পাখি, ১৪০ প্রজাতির মাছ, ১২-এর বেশি প্রজাতির ব্যাঙ, ১৫০-এর বেশি প্রজাতির সরীসৃপ এবং ১০০০-এরও বেশি প্রজাতির অমেরুদন্ডী প্রাণীর আবাস এই হাওরে। শিকার, আবাসস্থল ধ্বংস, হাওর ভরাটসহ নিরাপত্তাহীনতায় দিন দিন এর সংখ্যা কমছে। টাঙ্গুয়ায় হিজল, করচ, বরুণ, বনতুলসী, নলখাগড়া, শালুক, শাপলাসহ ২০০ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে। মানুষের আগ্রাসী কর্মকান্ডে উজাড় হচ্ছে এসব উদ্ভিদ বা বনাঞ্চল। গাছপালা ও সংরক্ষিত বন কমার কারণে হুমকিতে পড়েছে গোটা হাওরের প্রাণপ্রকৃতি।
টাঙ্গুয়া রক্ষায় মত-অভিমত: ‘হাজার হাজার পাখি বিলের পানিতে খেলানেলা করছে। হাতে বাওয়া নৌকা লইয়া গেলে পাখিরা ভয়ে উড়াল দিছে না। দুই সাইটে (দুই ভাগে) ভাগ হইয়া (পৃথক হয়ে) নৌকা যাওয়ার পথ কইরা দিছে। তখন ইঞ্জিনের নৌকা তেমন চলত না। কিন্তু এখন ইঞ্জিনের নৌকায় ফানাফানা (ছিন্নবিন্ন) করিলাইতাছে (করতাছে) হাওরটারে।’ এই স্মৃতি টাঙ্গুয়ার হাওরের মৎস্যজীবী হরলাল দাসের। এক দশক আগে শনিরোওয়া বিলে কাজ করা ওই মৎস্যজীবীর আক্ষেপ, ‘মাছ ও পাখি থাকার নিরাপদ জায়গা নাই। আলংডোয়ার একটা জায়গা, যেডা (যা) চিতল মাছের খনি আছিল (ছিল)। ওই চিতল মাছ এখন আর নাই। বন-ঝোপঝাড় সব শেষ হইয়া গেছে। হাওরের উপর যে অত্যাচার হইতাছে, দুইদিন আগপিছ কিচ্ছুই থাকতো না (কিছুই থাকবে না)।’
টাঙ্গুয়ার হাওরের ওয়াচ টাওয়ার সংলগ্ন জয়পুর গ্রামের পরিবেশ কর্মী আহমেদ কবির বলেন, একটা প্রতিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকায় যা হচ্ছে তা মানা যায় না। একসময় পাখির কলরবে ঘুম ভাঙতো। এখন বন-পাখপাখালি কোনকিছু নেই। অনেক পরিচিত মাছও বিলুপ্ত। এখন হাওর পারের মানুষেরা চাষের পাঙ্গাস কিনে খায়। পর্যটকের উপদ্রবে মানুষ থাকাই দায়, সেখানে পাখি থাকবে কেমনে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, টাঙ্গুয়াকে নিরাপদ রাখতে ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিষিদ্ধ করতে হবে। যেহেতু পর্যটকের পছন্দনীয় জায়গা এটি সেহেতু হস্তচালিত নৌকার সুযোগ দিয়ে প্রশাসনকে তৎপর হতে হবে। বর্ষা ও হেমন্ত মৌসুমে হাওরের পরিবেশ, প্রতিবেশগত ভারসাম্যতা রক্ষায় দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী।
২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত টাঙ্গুয়ায় পরিবেশবাদী সংস্থা সিএনআরএস’র হয়ে কাজ করা পরিবেশ উন্নয়নকর্মী এহিয়া সাজ্জাদ বলেন, টাঙ্গুয়ার পরিবেশ সুরক্ষায় প্রায় লাখ দুয়েক গাছ লাগানো হয়েছিল। সুরক্ষিত ওই হাওরের গাছপাল, বন, মাছ, পাখি স্থানীয় মানুষ কর্তৃক প্রতিনিয়ত শিকার ও উজাড় হচ্ছে। এছাড়া অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন হাওরের মহাবিপদ ডেকে আনছে। প্লাস্টিক পলুশন ও মনুষ্য বর্জ্যে জলজ প্রতিবেশ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মনুষ্যসৃষ্ট অত্যাচার-উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে সরকারি কঠোর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক লেখক আলম শাইন’র ভাষ্য, পর্যটকবাহী ইঞ্জিনচালিত নৌকার উচ্চশব্দের কর্মকা- টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রতিবেশগত নিয়ম-কানুনের পুরোপুরোই পরিপন্থি।
একটি সংরক্ষিত এলাকা অর্থাৎ রামসার সাইটে যা করা যায় না, টাঙ্গুয়াতে তার সবকিছুই হচ্ছে। নিয়মমাফিক কিছু করতে চাইলে মূল হাওরের ভেতরে পর্যটন গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি আরও বলেন, পর্যটনকেও আবার নিরুৎসাহিত করাটা ঠিক হবে না। পর্যটন শিল্পকে বাঁচিয়ে হাওর সুরক্ষায় প্রশাসনকে তার করণীয় ঠিক করতে হবে। প্রধান করণীয় হচ্ছে মনিটরিং জোরদার করা। যা করার সব পরিকল্পিতভাবে করতে হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া এক লেখায় উল্লেখ করেছেন, কান ফাটানো হিন্দি গানের শব্দ, জনাকীর্ণ ওয়াচ টাওয়ার-এসব হাওরের পরিবেশে খুবই অস্বাভাবিক। টাঙ্গুয়ার হাওরে এখন কোনো জলজ পাখি দেখা যায় না। বিশ্বের অনেক দেশে সঠিক নীতি ও মানুষকেন্দ্রিক উদ্যোগে এমন বিপন্ন অঞ্চল রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। জেলা প্রশাসন টাঙ্গুয়ার হাওরের বিরূপ পর্যটনকে নিয়ন্ত্রিত ও নিরুৎসাহিত করতে অনেক দিন ধরেই কাজ করছে। সবার সম্মিলিত উদ্যোগ নেওয়া হলেই এই মারাত্মক পরিণতি এড়ানো সম্ভব।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
টাঙ্গুয়ায় অনিয়ন্ত্রিত উৎপাত
হাওরের সম্পদ সৌন্দর্যে মরণকামড়, শূন্য হচ্ছে বিরল ভান্ডার
- আপলোড সময় : ১৯-০৬-২০২৫ ১০:২১:৫৯ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৯-০৬-২০২৫ ০১:৩৬:৪২ অপরাহ্ন

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ