সুনামগঞ্জ , মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫ , ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
অদক্ষ ও অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকদের দৌরাত্ম্যে বাড়ছে দুর্ঘটনা হাসি ফুটলো সেরিব্রাল পালসি আক্রান্ত শিশু রুমেজার মুখে সাবেক এমপি নাছির চৌধুরী হাসপাতালে ভর্তি করোনায় একজনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ২৫ মোল্লাপাড়া ইউনিয়নে বিএনপি’র কর্মীসভা জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে ‘আমার কণ্ঠ আমার অধিকার’ ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত প্রতিপক্ষের হামলায় ছোট ভাই নিহত, বড় ভাই হাসপাতালে টাঙ্গুয়ার হাওর ‘সোনার ডিমপাড়া হাঁস’ নয় নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা চলবে না : আব্দুর রব ইউসুফি আলোচনা হলে সরকারের ‘ভাব’ বুঝতে পারবে ইসি : সিইসি হাওর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, গ্রেফতার ৭ জামালগঞ্জে ফুটবল টুর্নামেন্ট সম্পন্ন জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত উঠানে পড়েছিল যুবকের রক্তাক্ত লাশ : আটক ১ জামালগঞ্জে মাদক নির্মূলে গ্রামবাসীর প্রতিরোধ সভা: সর্বাত্মক সহযোগীতার আশ্বাস ওসি'র চৌধুরী মনসুর আহমদ আর নেই ভাতিজার হাতে চাচি খুন সিলেটের কোনো পাথর কোয়ারি আর লিজ দেওয়া হবে না : পরিবেশ উপদেষ্টা অনিয়ন্ত্রিত পর্যটনে বিপদে টাঙ্গুয়ার হাওর মরিচক্ষেতে মিললো গ্রেনেড, নিষ্ক্রিয় করলো সেনাবাহিনী
জাতীয় নির্বাচন

ছাড় দিয়েও এগিয়ে বিএনপি

  • আপলোড সময় : ১৭-০৬-২০২৫ ০৮:২২:৩৩ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৭-০৬-২০২৫ ০৮:৩৭:৪৭ পূর্বাহ্ন
ছাড় দিয়েও এগিয়ে বিএনপি
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করা
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় নিয়ে সৃষ্ট ধোঁয়াশা অনেকাংশে কেটে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিরোধী দলগুলো বিশেষ করে বিএনপি শুরু থেকেই ডিসেম্বরে নির্বাচন চাইছিল। এজন্য আন্দোলনের কথাও ভেবেছিল তারা। শেষ পর্যন্ত তাদের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন বিষয়ক প্রস্তাবে অন্তর্বর্তী সরকার সম্মত হওয়ায় রাজনীতির মাঠে স্বস্তির সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। বিএনপি নির্বাচনের সময়সীমার বিষয়ে ছাড় দিলেও দলটির নেতারা এ ছাড়কে রাজনৈতিক কৌশলের সফল প্রয়োগ বলে মনে করছেন এবং এ-বিষয়ক আলোচনাকে ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হিসেবে দেখছেন। এ আলোচনার মধ্য দিয়ে সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জও তৈরি হয়েছে। বিএনপির বিবেচনায় সেটি হচ্ছে, সব পক্ষকে এক কাতারে এনে সরকারের ‘গ্রহণযোগ্য’ ভাবমূর্তি তৈরি করা এবং নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া। গত শুক্রবার লন্ডনের বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রোজার আগেই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব দেন। তাতে প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারপক্ষ একমত হয়। অথচ কিছুদিন আগেও তারেক রহমান দৃঢ়ভাবে বলেছিলেন, নির্বাচন ডিসেম্বরেই হতে হবে। আর ঈদুল আজহার আগে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেছিলেন, এপ্রিলের প্রথমভাগে নির্বাচন হবে। বিএনপির একাধিক নেতা জানান, বিএনপি এ সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে রাজি হলেও, সরকারের ওপর চাপ বাড়িয়ে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ ও নির্বাচনী পরিবেশ গঠনের জন্য একাধিক দাবি উত্থাপন করেছে। তিনজন উপদেষ্টার পদত্যাগসহ বেশ কিছু দাবির কয়েকটিতে দলটি নমনীয় অবস্থান গেল। লন্ডন বৈঠকের পরই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন অন্তর্বর্তী সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, যার পদত্যাগ বিএনপির দাবির মধ্যে ছিল। রাজনীতি-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিএনপি এখন ক্ষমতায় ফেরার ‘সম্ভাবনাকে’ গুরুত্ব দিচ্ছে এবং সেই বিবেচনা থেকে নির্বাচনকালীন দীর্ঘ অস্থিরতার ঝুঁকি নিতে চায়নি তারা। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আলাদা পার্টি, আলাদা রাজনীতি, মতভিন্নতা থাকতেই পারে। বাংলাদেশে মধ্যমপন্থি, উত্তর-দক্ষিণ ইসলামপন্থি সব ধরনের দল আছে। কিন্তু গণতন্ত্রের প্রশ্নে সবাই একমত। নির্বাচনের প্রশ্নে সবাই একমত। সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। গণতন্ত্র বিপন্ন হয়ে উঠছে কি না, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। লন্ডনের বৈঠকের মধ্য দিয়ে যে সুবাতাস বইছে সেটি যেন ভেস্তে না যায়। তার মতে, বিএনপি ঠিক পথেই আছে। গণতেন্ত্রর স্বার্থে বিএনপি আগেও ছাড় দিয়েছে, প্রয়োজনে ভবিষ্যতেও দেবে। বিএনপির প্রস্তাব ও তাতে সরকারের সম্মতির পর অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে, সেটি হচ্ছে সরকারের ‘গ্রহণযোগ্যতা’ নিশ্চিত করা সব দলের মধ্যে সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি করা, আন্দোলনের সময় সংঘটিত সহিংসতায় নিহতদের বিচার করা, পক্ষপাতহীন নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ বিষয়ে সব পক্ষের আস্থা অর্জন করা। বলা যায়, নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের নিরপেক্ষতা, বিতর্কহীন ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও আসন পুনর্বিন্যাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সরকার কীভাবে দ্রুত ও স্বচ্ছ পদক্ষেপ করতে পারে, তাতে সর্বমহলের দৃষ্টি থাকবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ও তারেক রহমান একমত হলেও এ বিষয়ে ইসি আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছু জানে না। তবে নির্বাচনের প্রস্তুতি ইসির রয়েছে। রবিবার ইসি কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় সিইসি বলেন, ‘আমরা প্রস্তুত আছি এবং প্রস্তুতি নিচ্ছি। যারা নির্বাচনে অংশ নেবে তাদের জন্য মাঠ সমান রাখব। আমরা রেফারির ভূমিকা পালন করব।’ অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই মাসে একটি ‘সংস্কার সনদ’ ঘোষণা করে তার ভিত্তিতে পরবর্তী আট মাসে সংস্কার বাস্তবায়নের কথা ভাবছে। তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, এটি যদি শুধু সময়ক্ষেপণের কৌশল হয়, তাহলে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। আন্দোলনকালীন মামলাগুলোর বিচারে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হলেও সেখানে ‘গ্রহণযোগ্য বিচার’ কীভাবে নিশ্চিত করা হবে, তাও এখন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। গত শনিবার শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন, যা তার নিরপেক্ষতা ক্ষুণœ করেছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এটিকে বিদেশে গিয়ে নির্বাচন নিয়ে ‘চুক্তি’ বলে সমালোচনা করেছেন। তিনি বৈঠককে ‘প্রতারণা’ এবং ‘গণতন্ত্রের প্রতি অসম্মান’ বলে মন্তব্য করেন। অন্যদিকে, জাতীয় ঐকমত্যের পক্ষপাতী নেতাদের মধ্যে হাসনাত আবদুল্লাহ ফেসবুক পোস্টে বৈঠককে ইতিবাচক বললেও, সংস্কার ও বিচারপ্রক্রিয়া যথাযথ গুরুত্ব না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশের গ্রহণযোগ্য নির্বাচনগুলোতে আওয়ামী লীগের ভোটের হার ৩০-৪০ শতাংশ। এখন এই দলকে নিষিদ্ধের পর তাদের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বাইরে রেখে কীভাবে নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক করা যাবে, সে চ্যালেঞ্জও অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিতে হবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। যদিও সম্প্রতি ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস বলেছেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন মানে দলের অংশগ্রহণ নয়, বরং সব ভোটারের অংশগ্রহণ। সব শ্রেণি-পেশার নাগরিক যেন নির্বিঘেœ ভোট দিতে পারেন, সেটাই তাদের মূল বিবেচ্য। সরকার বিএনপিকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে আনলেও, নির্বাচনী পরিবেশের মান, প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা ও কার্যকর সংস্কারই নির্ধারণ করবে, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক কি না, বৈধ কি না।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
অদক্ষ ও অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকদের দৌরাত্ম্যে বাড়ছে দুর্ঘটনা

অদক্ষ ও অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকদের দৌরাত্ম্যে বাড়ছে দুর্ঘটনা